Site icon জনতার মশাল


বোধিসত্ত্ব হত্যা মামলা: দোষী সাব্যস্ত চার অভিযুক্ত।আজ রায় ঘোষণা।


ডেস্ক রিপোর্টার, ৩জুন।।
    শহরে চাঞ্চল্যকর বোধিসত্ত্ব দাস হত্যা মামলায় চার অভিযুক্তকেই দোষী সাব্যস্ত করলো আদালত। শুক্রবার জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। অভিযুক্তরা হলো
অভিযুক্তরা হল কালিকা জুয়েলার্সের কর্ণধারের ছেলে সুমিত চৌধুরী ওরফে বাবাই, কলেজটিলা  এলাকার ঠিকেদার সুমিত বণিক  ওরফে বাপী, ট্রাফিক পুলিশের প্রাক্তন ইন্‌সপেকটর সুকান্ত বিশ্বাস  এবং সোয়েব মিঞা ওরফে ওমর  শরিফ। শনিবার এই মামলার রায় ঘোষণা করবে আদালত। জেলা ও দায়রা আদালতের এই রায় ঘোষণাকে অভিযুক্তদের আইনজীবী পীযূষ কান্তি বিশ্বাস “অবৈধ” বলে ঘোষণা করেন।তিনি বলেন, কালিকা জুয়েলার্সের কর্ণধারের ছেলে সুমিত চৌধুরী ওরফে বাবাই, কলেজটিলা  এলাকার ঠিকেদার সুমিত বণিক  ওরফে বাপী, ট্রাফিক পুলিশের প্রাক্তন ইন্‌সপেকটর সুকান্ত বিশ্বাস যে ব্যাংক ম্যানাজার বোধিসত্ত্ব দাসকে খুন করেছে তেমন কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। তা সত্বেও বিচারিক কিভাবে এই তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন? অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পীযূষ কান্তি বিশ্বাস।


বাদী পক্ষের আইনজীবী সম্রাট কর চৌধুরী আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।তিনি বলেন, এই মামলার এক জন প্রত্যক্ষদর্শী ও জিবি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক সব জানা সত্ত্বেও তারা আদালতে ভুল তথ্য দিয়েছেন। আদালতে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধেও বিচারক পৃথক মামলা গ্রহণ করবেন। তবে এই মামলার রায় ঘোষণার পর পরই প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন। বোধিসত্ত্ব  হত্যা মামলায় জড়িত চার অভিযুক্তকে  আদালত দোষী সাব্যস্ত করায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।এবং আস্থা বাড়ছে বিচার ব্যবস্থার উপর।


২০১৯- এর ৩রা আগস্ট রাতে রাজধানীর জ্যাকসন গেটে ব্যাংক ম্যানাজার বোধিসত্ত্বকে বিয়ারের বোতল ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে নৃশংস ভাবে খুন করে আততায়ীরা। মূলত মদের আসর থেকেই এই ঘটনার সূত্রপাত। তবে এর পেছনে ছিল করোনা কালে লকডাউনে কালো টাকাকে ব্যাংকের মাধ্যমে সাদা করার ঘটনা। রক্তাক্ত অবস্থায় রাতেই বোধিসত্ত্বকে জিবি হাসপাতালের নিয়ে যাওয়া হয়। ৪আগস্ট বোধিসত্ত্বর মা পশ্চিম থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ৭ আগস্ট উন্নত চিকিৎসার জন্য বোধিসত্ত্বকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতায়। শেষ পর্যন্ত ১৬ আগস্ট চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে বোধিসত্ত্ব চলে যায় না ফেরার দেশে।তৎকালীন সময়ে পশ্চিম থানার ওসি ছিলেন দেব প্রসাদ রায় । বর্তমানে তিনি সদর এসডিপিও।


বোধিসত্ত্বর মৃত্যুর পর পুলিশ একে একে গ্রেপ্তার করে   কালিকা জুয়েলার্সের কর্ণধারের ছেলে সুমিত চৌধুরী ওরফে বাবাই, কলেজটিলা  এলাকার ঠিকেদার সুমিত বণিক  ওরফে বাপী, ট্রাফিক পুলিশের প্রাক্তন ইন্‌সপেকটর সুকান্ত বিশ্বাস ও ওমর শরীফকে। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন হয়।এই সময়ের মধ্যে পশ্চিম থানার ওসি দেব প্রসাদ রায় বদলি হয়ে যান।তার জায়গাতে আসেন ইন্সপেক্টর সুব্রত চক্রবর্তী।তিনি বর্তমানে তেলিয়ামুড়া থানার ওসি। সুব্রত চক্রবর্তীর পশ্চিম থানায় থাকাকালীন আচমকা এক অদৃশ্য শক্তির চাপে বোধিসত্ত্ব মামলার চার অভিযুক্ত জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে যায়। তখন এই ঘটনায় সবাই হতভম্ভ হয়ে যায়। ঝাঁপিয়ে পরে রাজ্যের সংবাদ মাধ্যম। চাপের মুখে আদালতের নির্দেশে পুলিশ বাধ্য হয়ে পুনরায় তাদেরকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেয়। এরপর থেকে অভিযুক্তদের কাস্টডিতে রেখে মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়।
                 শেষ পর্যন্ত তদন্তকারী পুলিশ মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট জমা করে। গত চার বছর ধরে মামলার দীর্ঘ শুনানির পর শুক্রবার জেলা ও দায়রা আদালত শুক্রবার চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত ঘোষণা করে।এবং তাদের শাস্তির দিন ধার্য্য করে শনিবার। প্রসঙ্গত এই মামলার সাক্ষীদের নানান ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল।আদালতে সাক্ষ্য বাক্য দেওয়ার আগে আতঙ্কে ছিলো সাক্ষীরা। আদালত বিষয়টি বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছিল।এবং শেষ পর্যন্ত সমস্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারক অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন।এখন সবাই তাকিয়ে আছে শনিবারের দিকে। অভিযুক্তদের কি ধরনের শাস্তি ঘোষণা করে আদলত?

Exit mobile version