Site icon জনতার মশাল

রাজ্য রাজনীতির নতুন
ট্র্যাডিশন “ভোট বয়কট”।

ডেস্ক রিপোর্টার, ২৭এপ্রিল।।
                রাজ্য রাজনীতিতে ভোটারদের নতুন ডাইমেনশন। “নোটার” মাধ্যমে হাঁটলেন না নীরব বিপ্লবের পথে। অনুন্নয়ন ইস্যুতে সরাসরি ভোট বয়কটের আগাম সিদ্ধান্ত। এবং গণতন্ত্রের মহোৎসবে তা আগাম সিদ্ধান্ত করলেন বাস্তবায়িত। রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলের এই দৃশ্য নিশ্চিত ভাবে কপালে ভাঁজ পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের।
        শেষ পাঁচ দশকে ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলের ভোটারদের মধ্যে এমন সচেতন মনোভাব দেখা যায় নি। সমতলেও ঘটে নি। কিন্তু ত্রিপুরার লোকসভার পূর্ব আসনের ভোটে রাজ্যের পাহাড়ের ভোটারা বুঝিয়ে দিলেন তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন ভরানো যাবে না। প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করতে হবে।অন্যথায় গণতন্ত্রের মহোৎসবকে তারা ফিকে করে দিতে পারেন। গণহারে প্রকাশ্যে করতে পারেন ভোট বয়কট। ভোট কেন্দ্রে ঝুলিয়ে দিতে পারেন তালা। ভোট না দিয়ে প্রতিবাদে করতে পারেন পথ অবরোধ। রাজ্যের পূর্ব ত্রিপুরা আসনে ভোটে এই সমস্ত কার্যকলাপ করে দেখিয়ে দিয়েছেন ভোটাররা।

।।রাইমাভ্যালির সদাই মোহন পাড়াতে ভোট বয়কট।।

শুক্রবার সকাল থেকেই সূত্রপাত শুরু হয় গন্ডাছড়া মহাকুমার ৪৪-রাইমাভ্যালী কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রের সদাই মোহন পাড়ার ভোটাররা সকাল ভোট বয়কট করে। গণদেবতাদের অনুপস্থিতিতে এই বুথে(৪৪/৫) ভোট উৎসব ফিকে হয়ে গিয়েছিল। শুনশান ছিলো ভোট কেন্দ্র। মোহন পাড়ার গ্রামবাসীদের বক্তব্য, এলাকার রাস্তা ও জলের দাবি ছিলো দীর্ঘ দিনের। প্রতিটি রাজনৈতিক দল দিনের পর দিন তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দল গ্রামবাসীদের মৌলিক চাহিদাগুলি পূরণ করে নি। তাই আগাম ঘোষনা দিয়ে ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল সদাই মোহন পাড়ার ভোটাররা। তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করেন। যদিও জানা যায়, বেলা ১১টার নির্বাচন কমিশনের লোকজন সহ শাসক দলের নেতারা ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন। এবং কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে।তাদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করা হবে বলে পুনরায় আশ্বাস দেন।এরপর গ্রামের ভোটাররা ভোট দিতে রাজী হন।


রাইমাভ্যালি কেন্দ্রের গঙ্গানগর মালদা পাড়া সহ আরোও তিনটি গ্রামের ভোটাররাও ভোট দানে বিরত থাকেন। তিন গ্রামে প্রায় সাতশো অধিক ভোটার। তারা ভোট না দিয়ে বরং পথ অবরোধে বসে। তারাও জল ও রাস্তার দাবিতে করেছিলো পথ অবরোধ।ভোটের দিনে পথ অবরোধের খবর পেয়ে প্রশাসনের সমস্ত কর্তারা ছুটে গিয়েছিলেন মালদা পাড়াতে। গ্রামবাসীরা আক্ষেপ করে বলেন, “২০০৭ থেকে আজ পর্যন্ত, শুধু প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেওয়া হয়েছিলো। নেতা – মন্ত্রী – আমলা সবাই এসেছিল তাদের দরজায়। কিন্তু কেউই তাদের সমস্যার সমাধান করে নি। তারা বাধ্য হয়েই ভোট উৎসবের দিনে করেছে পথ অবরোধ।

।।মালদা পাড়াতে ভোট বয়কট।।

রাজনীতিকরা বলছেন, সব রাজনৈতিক দল গিরিবাসীদের নিয়ে বছর ভর ভোটের রাজনীতি করেছে। কংগ্রেস – সিপিআইএম – বিজেপি। এবং জনজাতি ভিত্তিক রাজনৈতিক দল প্রদ্যুৎ কিশোরের তিপ্রামথা, আইপিএফটি, টিইউজেএস প্রতিটি রাজনৈতিক দল গিরিবাসী ভোট যন্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে আসছে দশকের পর দশক ধরে।
             


এই বাস্তব চিত্র জ্বল জ্বল করছে পাহাড়ী অঞ্চলে। তারই বহিঃ প্রকাশ ঘটেছে লোকসভার পূর্ব ত্রিপুরা আসনে নির্বাচনে। আগামী দিনে গিরিবাসী বোকা বানিয়ে রাজনীতি করা রাজ্যের রাজনেতাদের প্রতি যথেষ্ট কষ্টকর হয়ে উঠবে। অন্তত এই চিত্রের আগাম আভাস পাওয়া গিয়েছে লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোটে।

Exit mobile version