ডেস্ক রিপোর্টার,৫জানুয়ারি।।
” প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার হতাশাগ্রস্থ।তিনি রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছেন।তিনি আর মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না।তাই দিশাহীন হয়ে পড়েছেন।”——বক্তা রাজ্যের তথ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।বুধবার রাজ্য বিজেপি দপ্তরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা তিনি বলেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে উদ্দেশ্য করে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য সফর নিয়ে নানান কটাক্ষ করে এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে ডাবল ইঞ্জিন সরকারকে তুলুধুনু করেছিলেন মানিক সরকার। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিলো, রাজ্যের সমস্ত উন্নয়ন হয়েছে বাম সরকারের জামানায়।বর্তমান বিজেপি সরকারের জামানায় কিছুই হয়নি।ডাবল ইঞ্জিন সরকার পুরোপুরি ফ্লপ।
মানিক সরকারের এই সাংবাদিক বৈঠকের পর পাল্টা দেন রাজ্যের তথ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, বামেদের মানুষ আর গণ্য করছে না।তাদের পায়ের তলায় জমি নেই।তারা গনবর্জিত।তাই ২৩-র বিধানসভা নির্বাচনে কিছু করতে পারবে না।মানিক সরকার ফের হতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী।এই রাজনৈতিক দেউলিয়া থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে হতাশা গ্রাস করেছে। রাজ্যের তথ্যমন্ত্রীর দাবি, স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে হাজার হাজার মানুষের সামনে প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের।তাতেই হিংসার আগুনে জ্বলে উঠেছেন মানিক সরকার।
তথ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর বলেন, এটা বাস্তব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের নিয়ম শিথিল হয়েছে।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী দুইজনে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়েছেন। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী তাতে সায় দেন নি।কিন্তু দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অনুধাবন করে ঘরের নিয়মের শিথিল করেছেন।মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর প্রশ্ন,মানিক সরকার মুখ্যমন্ত্রী থাকা কালীন কেন তিনি তা করতে পারেন নি।তথ্য দিয়ে মন্ত্রী বলেন,এখন পর্যন্ত রাজ্যে দেড় লক্ষ্ মানুষকে ঘর দেওয়া হয়েছে।তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৭০৯কোটি টাকা দিয়েছে।রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে দেওয়া হয়েছে ঘর।ডাবল ইঞ্জিন সরকার আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, শাসক দলের লোকজন টাকার বিনিময়ে গরিব অংশের মানুষকে ঘর দিচ্ছে। মানিকের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন সুশান্ত চৌধুরী।তিনি বলেন, মানিক সরকার এমন একটি উদাহরণ দেখাক,যেখানে বিজেপি’র লোকজন টাকা নিয়ে ঘর দিয়েছে।বাম জামানায় দলের লোক না হলে সাধারণ মানুষ ঘর পেতো না।এই সংস্কৃতি বিজেপিতে নেই।
রাজ্যের তথ্যমন্ত্রীর সাটান জবাব, সাধারণ মানুষ যেন ভালো করে ঘর তৈরি করতে পারে তার জন্য রাজ্য সরকার গ্রামীন ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে ৭০হাজার টাকা করে লোনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।কিন্তু বাম সরকার তা করে নি।
আগরতলা এমবিবি বিমান বন্দর প্রসঙ্গে মানিক সরকারের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের টাকাতেই টার্মিনাল তৈরি হয়েছে।এটা ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সফল।তাতে বামেদের কোনো ভূমিকা নেই। মানিক সরকার মিশন বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প নিয়েও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন।তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন,বামেদের সময় ভেঙে পড়ে গিয়েছিলো রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। এই ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুস্থ করে তুলছে বিজেপি সরকার।বর্তমান সরকার একশটি স্কুলকে বেসরকারিকরণ করছে না।সরকার এই প্রকল্পের জন্য ৫০০কোটি টাকা খরচ করছে।কিন্তু মানিক সরকার মানুষকে ভুল বুঝানোর চেষ্টা করছেন।
রাজ্য সরকারের তথ্য দপ্তরের মন্ত্রীর ভাষায়, সম্প্রতি কেন্দ্রের মোদী সরকার রাজ্যকে দুই দফায় ৩৬৫কোটি টাকা এবং ৪৪কোটি টাকা দিয়েছে।এটা ডাবল ইঞ্জিন সরকার আছে বলেই সম্ভব হয়েছে। এখন বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সারাসারি টাকা চলে যাচ্ছে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। তথ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, নরেন্দ্র মোদী রাজ্যকে যে হীরার কথা বলেছিলেন তাই হয়েছে।হাইওয়েজ, ইন্টারনেট, রেলওয়েজ ও এয়ারওয়েজ সবই এখন রাজ্যে হয়েছে।
রাজ্যের তথ্যমন্ত্রী বামেদের কটাক্ষ করে বলেছেন,এতদিন কংগ্রেসের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে রাজ্যে ক্ষমতায় ছিলেন মানিক সরকার।তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলো পুর ভোটে।কিন্তু মানুষ বামেদের এই জালিয়াতি ধরে ফেলেছে।তাই পুর ও নগর ভোটে মানুষ বামেদের বর্জন করেছে।এই কারণেই মানিক সরকার সহ গোটা কমিউনিস্ট পার্টি এখন দিশাহীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *