রাজধানীর পূর্ব থানা।

ডেস্ক রিপোর্টার,৬জুলাই।।
পুলিশের চক্রব্যূহ ভেদ করে স্মার্ট সিটি আগরতলায় প্রতিদিন মাথা চারা দিয়ে উঠছে অপরাধীরা। তলানি থেকেছে রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ।ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে জনজীবন। শহরে দিন-দুপুরেই ছিনতাই, অপহরণ,খুন ও চুরির ঘটনা ঘটে চলছে নিয়মিত। আর রাতের আঁধারে অপরাধীদের তো পোয়া বার হয়ে যায়। তারা ইচ্ছে করলেই সংঘটিত করতে পারে অপরাধ। এবং গা ঢাকা দিতে পারে নিরাপদে। তাতে অবশ্যই পুলিশের কোন হেল্দোল নেই। তারা ঘুমোচ্ছে নাকে তেল দিয়ে। অপরাধীদের হাতে আক্রান্ত হলে এবং চুরি যাওয়া বাইক স্কুটি উদ্ধারের জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হতেও ভয় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। কারণ সর্ষের মধ্যেই ভোট বিরাজ করছে।
রবিবার দিন দুপুরে শহরের জনবহুল মঠচৌমুনী বাজার থেকে একটি নতুন স্কুটি চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্রের পান্ডারা। স্কুটির মালিক চন্দন ভৌমিক একজন গ্যাস ব্যবসায়ী। এদিন তিনি স্কুটিতে করে গ্যাসের সিলিন্ডার নিয়ে গিয়েছিলেন মঠচৌমুনীতে।স্কুটি রেখে তিনি যান গ্যাস সিলিন্ডার ডেলিভারি দিতে। সময়ের ব্যবধান মাত্র ৭ থেকে ৮ মিনিট। সিলিন্ডার ডেলিভারি দিয়ে তিনি ফিরে এসে দেখেন তার স্কুটি নেই । সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। কিন্তু কোথায়ও পাওয়া যায়নি তার স্কুটি। অর্থাৎ মুহুর্তেই চোর চক্রের পান্ডারা স্কুটি নিয়ে পালিয়ে যায়। স্কুটিটি যেখানে রাখা হয়েছিল তার কয়েক কদম দূরেই শোভা বর্ধন করছিল রাস্তার সিসি ক্যামেরা।

স্কুটি চুরি যাওয়ার পর মালিক চন্দন ভৌমিক দৌড়ে ছুটে যান পূর্ব থানায়। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেন। নিয়ম মেনেই পুলিশ তার বক্তব্য জিডি এন্ট্রি করে। তারপর থেকেই পূর্ব থানা পুলিশ হাত গুটিয়ে নেয়। খোয়া যাওয়া স্কুটির মালিক প্রতিদিন থানাতে যাচ্ছেন।পুলিশ আধিকারিকদের করুন অনুরোধ করছেন। কিন্তু তাতে কোন হেলদোল নেই পূর্ব থানার । পুলিশের এখন পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা এনে তা যাচাই করার প্রয়োজন বোধ করেনি।পূর্ব থানার খাকি উর্দিওয়ালারা স্কুটির মালিকের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলছে।

রাজধানীর মঠচৌমুহনীতে থেকে চুরি যাওয়া স্কুটি।

অভিযোগ, মালিককে নানান কথা বলে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।স্কুটির মালিক থানাতে গেলেই তার সঙ্গে কোনো সাহায্য সহযোগিতা করছে না। বরং ঘটনার সময় তিনি কোথায় ছিলেন? কেন গিয়েছিলেন? কেন স্কুটি রাস্তায় রেখে গিয়েছিলেন ? এই সমস্ত অবান্তর প্রশ্ন করে স্কুটি চোরচক্রের পাণ্ডাদের গোপন ডেরায় পৌঁছার রাস্তা করে দিচ্ছে। পূর্ব থানার পুলিশেরএই ভূমিকা থেকে এটাই প্রমাণ করে, এখন পর্যন্ত এই স্কুটি উদ্ধারের ক্ষেত্রে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয় নি। স্বাভাবিক কারণেই স্কুটির মালিক চন্দন ভৌমিক আস্থা হারিয়ে ফেলছেন পুলিশের উপর। থানা পুলিশের উচিত ছিল চন্দন ভৌমিকের চুরি যাওয়া স্কুটি উদ্ধারে সদর্থক ভুমিকা নেওয়া। অথচ পুলিশ স্কুটি চোরদের অনুসন্ধান না করে,পাল্টা চাপে খেলার চেষ্টা করছেন মালিককে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চোরচক্রের পান্ডারা স্কুটিটিকে একের পর এক হাত বদল করার যথেষ্ট সময় পেয়ে যাচ্ছে।
তাতে অবশ্যই পূর্ব থানা পুলিশের কিছু আসে যায় না। মাস শেষে তারা পাবে মোটা অংকের মাইনা। জনগণের নিরাপত্তা চুলোয় গেলেও তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। পূর্ব থানা পুলিশ খাকি উর্দি গায়ে লাগিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তোলা আদায়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই মাহির। কিন্তু সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে থানা পুলিশের যেন গাত্র দহন শুরু হয়ে যায়। তথ্য বলছে, গত দুই মাসে শুধুমাত্র পূর্ব থানা এলাকা থেকেই দশটি বাইক ও তিনটি স্কুটি চুরি হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো একটিও উদ্ধার করতে পারেনি। তারা আমজনতার নিরাপত্তা নিয়ে না ভেবে শাসক দলীয় প্রভুদের সন্তুষ্ট করতেই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
এই কারণেই অপরাধীরা গৃহস্থের ঘর ফাকা করে দিলেও কোন হেলদোল নেই পুলিশের। আষাঢ়ের ভর গরমে থানার আরাম কেদারায় বসে শীতল পাখার বাতাসে জুড়িয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে পুলিশ কর্মীদের পক্ষে জনগণের জন্য কিছু করা যেন সম্ভবই হয়ে উঠছে না।
তবে অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভুদের ঘরে বাজারের ব্যাগ নিয়ে যেতে তারা করে না দ্বিধাবোধ। অথচ পুলিশ কর্মীরা সাধারণ মানুষের টাকাতেই মাস শেষে হাতে পাচ্ছেন টাকার ব্যান্ডেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *