ডেস্ক রিপোর্টার,১৩এপ্রিল।।
“এদেশে উচ্চ শিক্ষা সবার জন্য নয়– এটা কেন্দ্রের মোদী সরকারের নয়া নীতি। আর তাতে দেশের শিক্ষার মেরুদন্ডকে ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের স্ক্রিপ্ট রচনা করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী”। কেন্দ্রের মোদী সরকারকে ঠিক এই ভাষায় তীব্র আক্রমণ করলেন প্রদেশ কংগ্রেসের ডাক সাইটের নেতা সুদীপ রায় বর্মন।মঙ্গলবার কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা বলেছেন তিনি।
সুদীপ রায় বর্মন বলেন, ২০২২-২০২৩ শিক্ষা বর্ষ থেকে সাধারণ ডিগ্রি কলেজগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির ক্ষেত্রে ‘কমন এন্ট্রান্স টেস্ট’ দিতে হবে।সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই নিয়ম লাগু করেছে। সুদীপ বাবুর কথায়, কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতির ফলে ত্রিপুরা সহ দেশের গরীব অংশের ছাত্র-ছাত্রীদের মহা বিপদের মুখে পড়তে হবে। রাজ্যের গ্রাম-পাহাড়ের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বপ্নেও আঘাত লাগবে।সংকুচিত হবে তাদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ।

কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন বলেন, কলেজ গুলির ‘কমন এন্ট্রান্স টেস্ট’ হবে কম্পিউটারের মাধ্যমে। অথচ রাজ্যের কতগুলো কলেজে কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে? প্রশ্ন সুদীপের। এই কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, আগরতলা এবং আশপাশ অঞ্চলের কিছু স্কুল ব্যতীত রাজ্যে কোথায় স্কুলগুলোতে নেই কম্পিউটার শিক্ষা ব্যবস্থা। সুদীপ রায় বর্মন বলেন, কমন এন্ট্রান্স দিতে গেলে ছাত্র-ছাত্রীদের দরকার এন্ড্রয়েড মোবাইল।রাজ্যের গ্রাম-পাহাড়ের কত জন ছাত্র-ছাত্রীর কাছে এন্ড্রয়েড মোবাইল আছে?
কলেজগুলোর ‘কমন এন্ট্রান্স টেস্ট’ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ‘নীটে’র আদলে পরীক্ষা নেবে সংস্থাগুলি। এই পরীক্ষার জন্য ‘ফী’ বাবদ টাকা দিতে হবে।কিন্তু এই টাকা দেওয়াও সম্ভব হবে না রাজ্যের গরিব ছাত্র-ছাত্রীদে পক্ষে।
সুদীপ বর্মনের যুক্তি মোদী সরকারের এই নীতির ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবে এসটি, এসসি,ওবিসি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। এরফলে বহিঃ রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরাও ত্রিপুরার কলেজগুলিতে ভর্তি হতে পারবে।তাতে অবশ্যই বঞ্চিত হবে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা। তাদের সামনে থাকা উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন বিলীন হয়ে যাবে।

কেন্দ্রের মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে বহু ছেলে মেয়ে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।তখন তারা চাকরি বা কর্ম সংস্থানের দাবি করতে পারবে না।” সাংবাদিক বৈঠকে একথা যোগ করলেন সুদীপ।
রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন বলেন, ভেবে চিন্তে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই নরেন্দ্র মোদী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা এক গভীর ষড়যন্ত্র। কংগ্রেস কোনো ভাবেই মোদী সরকারের এই ধ্বংসাত্বক সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। ধারাবাহিক আন্দোলন করবে কংগ্রেস। তিনি দেশ এবং রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংগঠনকে আন্দোলনে নামার আহ্বান করেছেন। সুদীপের বক্তব্য, কেন্দ্রের মোদী সরকারে কলেজ গুলিতে এই নিয়ম লাগু করে ঘুরপথে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিদ্যা ব্যবসার জন্য আরো বেশি উৎসাহিত করছে।

এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক অজয় কুমার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা,এআইসিসি’র নেত্রী জরিতা, প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ সাহা ও প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রশান্ত ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *