বাংলাদেশ ডেস্ক,১৪অক্টোবর।।
“ধর্ম যার যার,উৎসব সবার”— এই স্লোগান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।কিন্তু আজ শেখ হাসিনার দেশেই “ধর্ম যার যার,উৎসব সবার”— এই স্লোগান ম্লান। ধর্মীয় দস্যুদের তান্ডবে যেন মা দুর্গা অসহায়। সীমান্তের এপারে যখন মায়ের আরাধনা চলছে ভক্তি ভরে, তখন সীমান্তের ওপারে মায়ের যেন অকাল বিসর্জন। মুসলিম মৌলবাদীরা ভেঙে দিয়েছে মা দুর্গার প্রতিমা।মণ্ডপে করেছে অগ্নিসংযোগ।মারধর করেছে পূজা আয়োজকদের। ঘটনা বাংলাদেশের কুমিল্লাতে।এবছর গোটা বাংলাদেশে ত্রিশ হাজারের অধিক মণ্ডপে মায়ের পূজো হচ্ছে।কিন্তু মুসলিম মৌলবাদীদের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করেই চলছে মায়ের পূজো।বাংলাদেশ প্রশাসনের দাবি,তারা দুর্গা পূজাতে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রশাসনের এই বক্তব্য যে সর্বাংশে সঠিক তা নয়।
অষ্টমীর সকালে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার নুনুয়ারদিঘি পূজামণ্ডপে কোরান শরিফ রাখা নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
পুজো মণ্ডপে অতর্কিত হামলা চালায়।মুসলিম মৌলবাদীরা তারা গোটা মায়ের মণ্ডপ গুঁড়িয়ে দেয়।শুধু তাই নয়, দুর্গা প্রতিমা সহ অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি ভেঙে চুরমার করে দেয়।তারপর আগুন লাগিয়ে দেয় মায়ের প্রতিমা সহ মণ্ডপে। নুনুয়ারদিঘি পূজামণ্ডপের পর একে একে আরো কয়েকটি মণ্ডপে হামলা চালায় ধর্মীয় গুন্ডারা।মৌলবাদী নেতা রাশেদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে চলে দুর্গা মায়ের উপর অকথ্য নির্যাতন।তাদের অত্যাচার থেকে রেহায় পায়নি মায়ের সন্তানরা। দুর্গা মায়ের মণ্ডপে আক্রামনের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে পূজা কমিটির লোকজনদের বেধড়ক মারধর করে রাশেদের নেতৃত্বাধীন মৌলবাদী হায়নারা।ভক্তদের রক্তে রক্তাক্ত হয় মায়ের মণ্ডপ।
পূজা কমিটির লোকজনের অভিযোগ রাশেদের লোকজন যখন মণ্ডপে হামলা শুরু করে তখন স্থানীয় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিলো।কিন্তু ঘটনাস্থলে আসেনি হাসিনার পুলিশ। এই সুযোগে মুসলিম মৌলবাদীরা গোটা মণ্ডপ গুঁড়িয়ে দেয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা কুমিল্লা জেলাতে।হিন্দুরা ভুগতে থাকে নিরাপত্তা হীনতায়। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয় নি বলে জানা গেছে।কুমিল্লার পর ধর্মীয় হিংসা বিস্তার লাভ করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ মন্দিরেও।
হামলাকারীদের রুখতে ১৪৪ ধারা জারি করে চাঁদপুরের স্থানীয় প্রশাসন।তবে ধর্মীয় উস্কানি কেন্দ্র করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালায়।তাতে হামলাকারীদের মধ্যে তিনজনের মৃত হয়েছে বলে খবর।মোতায়েন করা হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত প্রায় সময় বাংলাদেশে মৌলবাদীরা হিন্দু মন্দির, হিন্দু দেবদেবী সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর অত্যাচার করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে এই সংক্রান্ত খবর।তারপর শেখ হাসিনা সরকারের প্রশাসন ধর্মীয় হায়নাদের বিরুদ্ধে কতটা কড়া পদক্ষেপ নিতে পাবে তা সবার জানা। হয়তো বা এই ঘটনা কেন্দ্র করে সোচ্চার হবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা।কিন্তু শেষ পর্যন্ত জল যে বেশি দূর গড়াবে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্তত ইতিহাস তাই বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *