ডেস্ক রিপোর্টার,২০সেপ্টেম্বর।।

রাজ্য রাজনীতির যুযুধান দুই শক্তি বিজেপি-সিপিআইএম।ভোট ময়দানে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। বামেদের অভিযোগ গেরুয়া সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ জন জীবন।পাল্টা লাল সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব বিজেপি।

গত ৬ সেপ্টেম্বর, ধনপুরের কাঁঠালিয়া মানিক সরকারের জনসভা কেন্দ্র করে রক্তস্নাত হয়ে উঠে রাজ্য রাজনীতি। সিপিআইএম অভিযোগ, এদিন বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকরা চিটফান্ড ইস্যু সামনে রেখে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের কনভয় আটকে দিয়েছিলো।এবং হামলা করেছিলো কনভয়ে।
শাসক দল বিজেপি’র পাল্টা অভিযোগ, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে লাল সন্ত্রাসকে উজ্জীবিত করেছেন।মানিক সরকারের আঙ্গুলি হেলনে ক্যাডার বাহিনী হামলা করে নিরীহ মানুষের উপর।
শাসক-বিরোধীর অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে বিষিয়ে উঠে রাজ্য রাজনীতির পরিমণ্ডল। কিন্তু রাজনীতিকরা বলছেন,ধনপুরে কাঁঠালিয়া থেকে রাজনীতিতে নতুন ডাইমেনশন এনেছে বামেরা।পরিবর্তন করেছে তাদের কৌশলগত অবস্থান।
রাজনীতিকরা বলছেন বামেদের রাজনীতির এই নতুন ডাইমেনশনের নাম “কাউন্টার অ্যাটাক” অর্থাৎ “পাল্টা হামলা।”
ধনপুর বিধানসভার কাঁঠালিয়া ঘটনার রেশ আছড়ে পড়ে উদয়পুরে। গত ৮সেপ্টেম্বর সিপিআইএম’র যুব সংগঠনের মিছিল কেন্দ্র করে রক্তস্নাত হয়ে উঠে সরোবর নগরী।বিজেপির অভিযোগ, বামেরা প্রকাশ্যে তাদের কর্মীদের রাস্তায় ফেলে মারধর করে।
এই ছবি ভাইরাল হতেই হিংসায় জ্বলে উঠে গোটা রাজ্য।পাল্টা মোকাবিলায় নামে শাসক দল। হিংসার আগুনে জ্বলে ছারখার হয়ে যায় তিলোত্তমা আগরতলা। আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলে উঠে মেলারমাঠের লালবাড়ির সামনে দাঁড়ানো একের পর এক গাড়িতে।মুহূর্তেই বাড়তে থাকে হিংসার আগুনের তীব্রতা।আগুনে জ্বলে উঠে গণতন্ত্রের অতন্ত্র প্রহরীর গর্ভগৃহ।
বিরোধী দল সিপিআইএম’র অভিযোগ, “রাজ্যে ভয়ের রাজনীতি কায়েম করার জন্য শাসক দল বিজেপি এই ঘটনা সংঘটিত করেছে।”
শাসক দল বিজেপি’র পাল্টা বক্তব্য, “সিপিআইএম-কে যে ভাষায় জবাব দেওয়ার দরকার ছিলো, সেই ভাষাতেই জবাব দেওয়া হয়েছে।”
গত ৮সেপ্টেম্বর রাতেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায় সিপিআইএম’র বিধায়ক প্রভাত চৌধুরীর এই গোপন বৈঠকের ছবি।গোপন ডেরায় মাথায় লাল পতাকা বেঁধে পাল্টা সন্ত্রাসের ছক করে ক্যাডার বাহিনী।এই রাতেই সাব্রুম মনু বাজারে শাসক দলীয় কর্মী-সমর্থকদের দোকান-পাটে হামলা হয়।অভিযোগ বিজেপি’র।
লাল সন্ত্রাসীদের পাল্টা দাবি, বিজেপি’র বাইক বাহিনীকে রুখতে গেরিলা বাহিনীর প্রতিরোধ গড়ে তোলতেই কাউন্টার অ্যাটাকের পরিকল্পনা।বাম নেতৃত্বের এই বক্তব্য থেকে স্পস্ট হয়ে যায়, শাসকের হাতিয়ার বাইক বাহিনীকে মোকাবিলা করে বিপ্লবের ময়দানে টিকে থাকতে তারা প্রস্তুত করছে গেরিলা বাহিনী। অর্থাৎ ঘুরিয়ে বললে জমি পুনরুদ্ধারে বামেদের নয়া কৌশলের নাম কাউন্টার অ্যাটাক” অর্থাৎ “পাল্টা হামলা।”
রাজনীতির সমীকরণ যায় হোক না কেন, ২৩-র নির্বাচনে গোটা রাজ্যে যে রাজনৈতিক সংঘর্ষ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে তা স্পস্ট হয়ে উঠছে এখনই। কারণ প্রধান বিরোধী দল সিপিএম তাদের রণ কৌশল পাল্টে নিয়েছে।সিপিএম কর্মীরা আক্রান্ত হলে,তারাও পাল্টা আঘাত হানবে। ছেড়ে কথা বলবে না বিজেপি।মাথাচাড়া দিচ্ছে তৃতীয় বিকল্প শক্তি তৃনমূল কংগ্রেস। পাহাড়ে আনারসের বাগান সাজিয়ে বসে আছেন তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মন।রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বাইরে নয় রাজ্যের লাল পাহাড়ও। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে বলা চলে ২৩-র বিধানসভা নির্বাচনে রক্তস্নাত হবে রাজ্যের শহর থেকে সমতল,গ্রাম থেকে পাহাড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *