ডেস্ক রিপোর্টার,২৪মে।।
গরমের পড়ন্ত বিকেলে একটু হিমেল হওয়ার খোঁজে মানুষ জড়ো হয় শহরের স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে। মাঠের মাঝখানে ক্রিকেট-ফুটবল খেলা। গ্যালারি গুলিতে গ্রুপে গ্রুপে বসে থাকে নানান বয়সের মানুষ।
গোধূলি ও সন্ধ্যার সন্ধিক্ষণেই স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে অল্প বয়সী যুবকদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। তাদের অধিকাংশই জমায়েত হয় আকাশবাণীর বিপরীতে থাকা দর্শক আসনে। এই জায়গাটি আবছা অন্ধকার।
অন্ধকার ভেদ করে মাঝে মাঝে উঁকি দেয় মাঠের মোবাইলের লাইট। মাদক আসক্তদের জন্য একেবারেই অনুকূল পরিবেশ। নেই খাকি উর্দি ওয়ালাদের ভয়। মাঠের অপর প্রান্তে মানুষের কোলাহলে চাপা পড়ে যায় মাদক আসক্ত যুবকদের বেলেল্লাপনা।
গ্যালারিতে গ্রুপে গ্রুপে বসে যুবকরা আমেজ নেয় নেশার। কি, নেই নেশার ম্যানুতে? গাঁজা, মদ, ফেনসিডিল, ট্যাবলেট এবং সর্বোপরি হেরোইন, ব্রাউন সুগার। চুরুটের মধ্যে গাঁজা ভর্তি করে আপন মনে নেশায় বুদ হয়ে যায় গ্যালারিতে বসা যুবকদের একাংশ। আবার অপর অংশের হাতে দেখা যায় সিগারেটের রংচা কাগজ।তার মধ্যে হেরোইন-ব্রাউন সুগার রেখে সিগারেট জ্বালিয়ে বিন্দাস নেশা করছে। কাউর হাতে মদের বোতল,প্লাস্টিক গ্লাস। ‘বিয়ার’ তো কমন জিনিষ।
আধো আধো আলোতে কিছু যুবকের হাতে শোভাবর্ধন করে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ। ডান হাতে সিরিঞ্জ নিয়ে বা-হাতে পুশ করছে। গ্রুপগুলিতে শুধু যুবকেরাই নয়, কোথায়ও কোথায়ও দেখা যায় সঙ্গে থাকা তাদের বান্ধবীদের। মানুষের দৃষ্টি এড়ানোর জন্য চালিয়ে দিচ্ছে গান। সঙ্গে নিয়ে আসছে মাঝারি ধরনের স্পিকার। যেন উৎসবের মেজাজে চলে নেশা গ্রহণ প্রক্রিয়া। এই চিত্র নিত্যদিনের। গোধূলি বেলা থেকে শুরু করে রাত নয়টা পর্যন্ত চলে নেশার মেলা। কিন্তু কোথায় রাজধানীর পুলিশ? বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদক দ্রব্য আটক করেই কি পুলিশ কর্তাদের দায়িত্ব খালাস? উঠছে এই প্রশ্ন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বার বার বলছেন নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার কথা। স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামের “নেশা সেবনের” মেলা দেখে মনে হয় না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে সহজেই।বরং পুলিশী নিরাপত্তা চক্রবুহ্য ভেদ করে স্মার্ট সিটিকে আরো স্মার্ট করে তুলছে একাংশ বিপথগামী যুবক। তাদের এই কাজ থেকে বিরত না রাখতে পারলে আগামী দিনে তিলোত্তমার পরিবেশ-পরিস্থিতি যে আরো ভয়ানক হয়ে উঠবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *