
ডেস্ক রিপোর্টার, ২১আগস্ট।।
বিধানসভার পর উপনির্বাচন।অবশেষে বামেদের প্রতি মোহ ভঙ্গ কংগ্রেসের। মিত্র শক্তির ভূমিকায়
অসন্তুষ্ট সুদীপ রায় বর্মন।বকলমে তিনি উগড়ে দিলেন ক্ষোভের ফোয়ারা।

রাজ্যের দুই বিধানসভা কেন্দ্রের আসন্ন অকাল ভোটে পোস্ট অফিস চৌমুহনীকে কোনো রকম গুরুত্ব দেয় নি মেলারমাঠ। বাম নেতৃত্ব রক্ষা করেনি বিধানসভা নির্বাচনের জোট ধর্ম। বরং ঘুরিয়ে বললে, পোস্ট অফিস চৌমুহনীর নেতৃত্বকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন মেলারমাঠের দণ্ডমুণ্ডের কর্তারা। তারপরও বামেদের পাশেই ছিলো কংগ্রেস। কারণ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা দিয়েছিলেন, কংগ্রেস উপভোটে বামেদের সঙ্গেই থাকবে। তাই তারা কোনো প্রার্থী দেয় নি। কংগ্রেসের এই রাজনৈতিক সৌজন্যতাকে নুন্যতম সন্মান জানায় নি সিপিআইএম নেতৃত্ব। বাম – কংগ্রেসের বর্তমান সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে একথা বলছেন রাজনীতিকরা।

উপনির্বাচনে বাম নেতৃত্বের এই ভূমিকায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে মিত্র শক্তি পোষ্ট অফিস চৌমুহনীর দণ্ডমুণ্ডের কর্তারা। প্রকাশ্যে লাল বাড়ির নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগলে দিয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন।আসন্ন উপনির্বাচনে প্রচার সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সুদীপ বলেন, “ধনপুর ও বক্সনগর কেন্দ্রের উপভোটে প্রচারের জন্য মেলারমাঠ কংগ্রেস নেতৃত্বকে কোনো আমন্ত্রণ জানায় নি।” সুদীপ আক্ষেপ করে বলেন, উপ নির্বাচনে প্রচারের জন্য বাম নেতৃত্বরাই যথেষ্ট।
তাছাড়া রাজ্য নেতৃত্বের কোনো প্রয়োজন হয় না। স্থানীয় নেতৃত্ব দিয়েই প্রচার সেরে নেওয়া যায়।

প্রকারন্তে সুদীপ তার বক্তব্যের মাধ্যমে লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন বাম নেতাদের।কারণ সিপিআইএমের রাজ্য নেতারা প্রচারের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ধনপুর ও বক্সনগরে। অথচ মিত্রশক্তি কংগ্রেস নেতাদের প্রচারের জন্য কোনো আমন্ত্রণই জানায় নি । এই বিষয়টি মেনে নিতে পারে নি কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুদীপ।

রাজনীতিকরা বলছেন, উপভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে ছলনা করেছে সিপিআইএম। বিধানসভা নির্বাচনে জোট করলেও উপভোটে কংগ্রেসকে কোনো গুরুত্বই দেয় নি বাম নেতৃত্ব। তারা ভালো করেই জানেন ধনপুর ও বক্সনগরে কংগ্রেসের শক্তি একে বারেই নগণ্য। তাই মিত্র শক্তিকে পাত্তাই দেয় নি বাম নেতৃত্ব। এটা অবশ্যই আগামী দিনে বাম- কংগ্রেস জোটের জন্য ভালো লক্ষণ নয়।

রাজনীতিকদের ব্যাখ্যা, রাজ্য রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে বামেদের পক্ষে একা লড়াই করে বিজেপিকে হটানো সম্ভব নয়।বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হলে বিরোধিরা জোট বদ্ধ ভাবে লড়াই করতে হবে।অন্যথায় কোনো লাভ হবে না। তবে কংগ্রেসের পক্ষেও ক্ষুদ্র শক্তি নিয়ে বামেদের টপকে গিয়ে কিছু করাও অসম্ভব। এটা নিশ্চিত উপ নির্বাচনে বামেরা বুঝিয়ে দিয়েছে লোকসভা নির্বাচনেও তারা কংগ্রেসকে জমি ছাড়বে না। অর্থাৎ কোনো আসন দেবে না।

উপ ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী না দিলেও লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে পৃথক ভাবে প্রার্থী দেবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। পৃথক ভাবে প্রার্থী দেবে তিপ্রামথা।তাতেই অতিরিক্ত অক্সিজেন পাবে বিজেপি।

বিরোধী তিন দল সিপিআইএম, কংগ্রেস ও তিপ্রামথার ভোট কাটাকাটিতে নিশ্চিত ভাবে লোকসভার দুইটি আসন দখল করবে ভারতীয় জনতা পার্টিই।এই চিত্র আপাতত পরিষ্কার। এদিন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন তার বক্তব্যের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন আগামী দিনে কংগ্রেসও আস্থা রাখবে না বাম নেতৃত্বের উপর।