ডেস্ক রিপোর্টার,৩০ মে।।
                বিশালগড় রঘুনাথপুর আনন্দমার্গ ইংলিশ
  মিডিয়াম স্কুলের  জমি জট এখন মহকুমার হট ইস্যু।  বিশালগড়ে বিরাজ করছে তপ্ত পরিস্থিতি।    স্কুলের জমি জট ইস্যুতে রক্তস্নাত হতে পারে বিশালগড়! ভূ – লুণ্ঠিত হতে পারে শাসক
দল ভারতীয় জনতা পার্টির সন্মান!
            বিশালগড় আনন্দ মার্গ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের জমি জটের ঝামেলার  অন্তরালে কে লিখছেন চিত্র নাট্য?কার মস্তিষ্ক কাজ করছে? গোটা বিশালগড়ে তা ওপেন সিক্রেট। স্থানীয় বিধায়ক থেকে মণ্ডল। জেলা প্রশাসন থেকে মহকুমা প্রশাসন। এসপি থেকে এসডিপিও।এবং থানাদার। সবাই নাকি ভয়ে থরহরি কম্পমান। কে এই বাহুবলী? এতো ক্ষমতা, যিনি, গোটা প্রশাসনকে রাখেন হাতের তালুতে?

।।বিতর্কিত জমি।।

নাম: নবাদল বণিক

বাড়ি: বিশালগড়

পেশা: রাজনীতি

দল: ভারতীয় জনতা পার্টি

পদ:প্রদেশ বিজেপি’র রাজ্য কমিটির সদস্য

অতিরিক্ত পদ: চেয়্যারম্যান, ত্রিপুরা শিল্প নিগম
      


” বিশালগড়ের রঘুনাথ পুরের নিবাসী নবাদল বণিকের মদতে আরো প্রায় ১৫- ২০ সাঙ্গ-পাঙ্গর সহায়তায় আমার স্কুলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দা লাঠি সোটা নিয়ে হামলা চালায়। এবং স্কুলে ব্যাপক ক্ষতি ক্ষতি সাধন করে। শুধু তাই নয়, হামলার শেষে আমার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীদের দেখে নেওয়ার হুশিয়ারী দেয়।”—

                                  ইতি
                              নিবেদক
                    ননী গোপাল দেবনাথ।
              চেয়ারম্যান আনন্দ মার্গ স্কুল

।।ননী গোপাল দেবনাথ।।

গত ১৭ মে  আনন্দমার্গ স্কুলের চেয়ারম্যান
ননী গোপাল দেবনাথ বিশালগড় থানায় এই অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি, অভিযোগ পত্রে বিজেপি নেতা নবাদল বণিকের নাম দেখেই ভ্রু কুঁচকে যায় রাষ্ট্রপতি কালার্স পদক প্রাপক রাজ্য পুলিশ কর্মীদের।নবাদল আতঙ্কে জরভরত হয়ে যান বিশালগড় থানার ওসি রানা চ্যাটার্জি এবং এসডিপিও বিজয় সেন। তারা নবাদল বণিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার দুঃসাহস দেখাতে পারেন নি। এটাই কি আরক্ষা দপ্তরকে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া ফ্রী হ্যান্ডের নমুনা?পুলিশ এতোটা দলদাস হলে কোথায় যাবে নির্যাতিত মানুষ? তবে, নবাদল বণিকের অনুগামী মহিলা গৌরী সাহা ও তার ছেলে শুভংকর সাহার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে কিছুটা মান বাঁচিয়েছেন বিশালগড় থানার ওসি রানা চ্যাটার্জী।


# গোটা ঘটনার প্রেক্ষাপট কি?


বিশালগড় রঘুনাথপুর আনন্দমার্গ স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য , তাদের স্কুলের সীমানার সঙ্গেই একটি খাস জমি রয়েছে।দীর্ঘদিন ধরে জমিটি স্কুলের দখলে।
২০১৬ সালের ১৮ মে স্কুল কর্তৃপক্ষ সিপাহীজলা জেলার জেলা শাসকের কাছে আবেদন করেছিলো, জনস্বার্থে এই জমিটি তাদেরকে এলটমেন্ট দেওয়ার জন্য। জেলা শাসককে দেওয়া আনন্দ মার্গ স্কুলের সেই চিঠিও সেটে দেওয়া হলো প্রতিবেদনের সঙ্গে।


আনন্দ মার্গ স্কুল কর্তৃপক্ষের অবদের মূলে তদানীন্তন
জেলা শাসক স্থানীয় তহশীলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা করতে।
সেই মোতাবেক তদানীন্তন তহশীলদার সরেজমিনে তদন্ত করে স্কুলের পক্ষে জমিটি এলটম্যান্ট দেওয়ার সুপারিশ করেছিলো। ২০১৬- র ২২ অক্টোবর তহশীল ডিসিএমকে চিঠি দিয়েছিলো।


আনন্দমার্গ স্কুলকে জমিটি দেওয়া যেতে পারে বলে ২০১৬- র ৮ ডিসেম্বর জেলা শাসককে আরোও একটি চিঠি দিয়েছিলেন তদানীন্তন মহকুমা শাসক। এই চিঠিও আমরা তুলে ধরেছি প্রতিবেদনের সঙ্গে।


চিঠি চালাচালি পর  সরকারী দামে জমিটি জনস্বার্থে আনন্দ মার্গ স্কুলকে দেওয়ার প্রাথমিক সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন জেলা শাসক। কিন্তু প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই ২০১৮ সালে রাজ্য রাজনীতির পরিবর্তন ঘটে। থমকে যায় স্কুলের জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া। ২০২৩- র ২১ জুলাই আনন্দ মার্গ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কর্তৃপক্ষ পুনরায় মহকুমা শাসককে চিঠি দিয়েছিল খাস জমিটি এলটমেন্টের জন্য।


এই খবর জানাজানি হতেই মাঠে নামেন রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি তথা টিআইডিসির চেয়্যারম্যান নবাদল বনিক। তিনি বুঝে যান জমিটি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়ে গেলে হাত ছাড়া হবে মোটা অঙ্কের কাঞ্চনমূল্য। আনন্দ মার্গ স্কুল কর্তপক্ষের অভিযোগ,  বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নবাদল বণিক হাতিয়ার করেন স্কুলের পার্শ্ববর্তী এক মহিলাকে।তার নাম গৌরী সাহা।

।।গৌরী সাহা।।

নেতা নবাদলের অভয় পেয়ে গৌরী সাহাও সরকারী জমি দাবী করেন। তিনিও নাকি জমির দখলদার। তাই এই জমিতে তাকেও দিতে হবে অংশ। গৌরী সাহাকে সামনে রেখে স্কুলের সঙ্গে জঘন্য খেলা শুরু করেন রাষ্ট্রবাদী নেতা নবাদল। ঘুর পথে নবাদল স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, জমি দখলদারী থেকে সরে যেতে।স্কুল কর্তৃপক্ষ নেতাবাবুর কথা আমল না দেওয়াতেই তিনি চটে যান। এবং নিজের গুন্ডা বাহিনী দিয়ে স্কুলে হামলা করিয়ে দেন। তাও স্কুল চলাকালীন।এই ঘটনার পরই আনন্দমার্গ স্কুল কর্তৃপক্ষ বিশালগড় থানায় দারস্ত হয়েছিলো।


রঘুনাথ পুরের খাস জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব আনন্দমার্গ স্কুল ও প্রতিবেশী গৌরী সাহার মধ্যে। ঝামেলা মিটমাট করবে প্রশাসন। তাদেরকে জমি দেওয়া হবে কিনা সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। এখানে বিজেপি নেতা নবাদল বণিক নাগ গলানোর কে? তিনি কোন স্বার্থে মাথা ঘামাচ্ছেন? উঠছে প্রশ্ন জনমনে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী, ব্যক্তিগত ভাবে সরকার ভূমিহীনদের জমি দিয়ে থাকে।অর্থাৎ যাদের মাথা গুজার কোনো জমি নেই। এই নিয়ম অনুযায়ী,গৌরী সাহা কোনো ভাবেই খাস জমি অ্যালটমেন্ট পাবেন না।কারণ গৌরী সাহার ১৩ গন্ডা জুত জমি রয়েছে। তার স্বামীর নামে জমি থাকলেও তাকে সরকারী জমি এলটমেন্ট দেওয়া যাবে না।


কারন তিনি ভূমিহীন নয়। এবার আসা যাক,  আনন্দ মার্গ স্কুলের বিষয়ে।যেহেতু এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনস্বার্থে কাজ করছে, স্কুল কাউর ব্যক্তিগত মালিকানাধীন নয়। একটি সোসাইটির ব্যানারে চলছে ।এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন গোটা বিষয় খতিয়ে দেখে প্রয়োজন বোধে জমিটি স্কুলকে দিতেই পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকার জমি বরাদ্দ করার ঘটনা নতুন নয়। গোটা রাজ্যে ভুরি ভুরি  দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাছাড়া আনন্দ মার্গ একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। তারাও কাজ করে হিন্দু ধর্মের প্রচার ও প্রসারে। সর্বোপরি বাঙালিদের স্বার্থে। তাহলে সম্পুর্ন হিন্দুবাদী সংগঠন আনন্দমার্গ ও আনন্দমারগীদের সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি প্রদান করলে রাষ্ট্রবাদী নেতা নবাদল বণিকের আপত্তি কোথায়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *