
ডেস্ক রিপোর্টার, ২২ আগস্ট
কর্মকর্তাদের কাজিয়াতে যাহার নামে ত্রিপুরা ক্রিকেট।ক্রিকেটারদের মান উন্নয়নের পরিবর্তে চলছে অর্থের হরির লুঠ।তপন – তাপস উভয়ের কাছেই টিসিএ এখন অর্থের মৌসূরী পাট্টা।তপন লোধ নিজেকে স্বচ্ছ প্রমাণ করতে মিডিয়াতে করেন ডকুমেন্টারি।তিনি রাস্তায় চলন-গমন করেন বাই-সাইকেলে।এই চিত্র তুলে ধরেন টিভির স্ক্রিনেও।
জনমনে নিজের ভাব মূর্তি উজ্জ্বল রাখতেই এই নাটক।

মিঠাই ব্যবসায়ী তাপস ঘোষের কাছেও
টিসিএ এখন তার পৈতৃক সম্পত্তি।অভিযোগ তাপস জড়িত কালো কারবারের সঙ্গেও।কালো কারবারীকে দিয়ে কি উন্নয়ন হবে ক্রিকেটের?এটা অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন ক্রিকেট প্রেমীরা।গত ১৯জুলাই মানুষ দেখেছে টিসিএ’র কঙ্কাল সার।

তপন লোধ।তিনি ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি। তপন দাবি করেন, তিনি একে বারেই স্বচ্ছ। অবসর প্রাপ্ত বস্তুকার তপন লোধ ভেবেছিলেন নিজের মতো করেই সাজাবেন টিসিএকে। কিন্তু হলো না। বিধির বিধান যে আগেই লেখা হয়ে গিয়েছিলো।
তাপস ঘোষ। তিনি ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব।পেশায় মিঠাই ব্যবসায়ী। গুঞ্জন,তিনি নাকি কালো কারবারের সঙ্গেও জড়িত। তাপসও ভেবে ছিলেন, তার আপ্ত সহায়ক তথা প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটার তিমির চন্দকে সঙ্গে নিয়ে সাজিয়ে তুলবেন টিসিএ’কে।কিন্তু আপাতত স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।

টিসিএর দখলদারী নিয়ে স্ক্রিনে তপন ও তাপসের লড়াই চলেও,অন্তরালে আছেন ক্ষমতাশালী দাদা – দিদির কাজিয়া। দাদার হয়ে প্রকাশ্যে মাঠে আছেন তপন লোধ।এবং দিদির হয়ে রাজ্য ক্রিকেট পরিমণ্ডলে পরিক্রমা করছেন তাপস ঘোষ। এটা ওপেন সিক্রেট। তা ভালো করেই জানেন রাজ্যের মানুষ।

তপন – তাপস গোষ্ঠীর লড়াইয়ে তলানিতে ঠেকেছে রাজ্য ক্রিকেটের মান। দুই গোষ্ঠী দৌড়াচ্ছে ক্ষমতা ও অর্থের পেছনে।কিন্তু ক্রিকেটারদের কথা বা ক্রিকেটের মান উন্নয়ন নিয়ে তাদের ভাবনার সময় নেই। রাজধানী সহ গোটা রাজ্যে একই অবস্থা।তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত সদ্য জিএসটিতে পেনাল্টি।

সঠিক সময়ে জিএসটি না দেওয়াতে ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে এখন পেলান্টি দিতে হচ্ছে।
*জিএসটির পেলান্টির পরিমাণ
৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার।
* তাহলে জিএসটি’ র পরিমাণ কত?
* প্রায় ছয় কোটি টাকা।

ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে সম্পাদক তাপস ঘোষ জনতার মশালকে জানিয়েছেন,” শেষ অর্থ বছরে জিএসটির পরিমাণ ছিলো প্রায় ৬ কোটি টাকা। ১৯ জুলাই জিএসটি দেওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু এদিনই টিসিএ – তে শুরু হয় ঝামেলা। বন্ধ হয়ে যায় কাজকর্ম।ক্যাশিয়ার ছুটিতে চলে যান। তাই জিএসটি দেওয়া সম্ভব হয় নি। এখন পেনাল্টি দিতে হবে।”

টিসিএ’র খবর অনুযায়ী, চলমান ঝামেলার মধ্যেই গত ২৮ জুলাই ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড ৩৫কোটি টাকার ফান্ড রিলিজ করেছে ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে।এডহক ভিত্তিতে। টিসিএ’র বর্তমান ফান্ড ভ্যালু দুইশ কুড়ি কোটি টাকার অধিক। স্বাভাবিক ভাবেই এই মধুর ভান্ডের রস আস্বাদন করতে মৌমাছিরা মৌ, মৌ করছে সর্বক্ষণ। কোথায় কি পেনাল্টি লাগলো, তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। রাজ্য ক্রিকেটের গরিমা ভূ-লুণ্ঠিত হলেও তপন – তাপসদের মাথা ব্যাথা নেই।

রাজ্যের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের বক্তব্য, তপন লোধ, তাপস ঘোষরা নিজেদের ল্যাং মারামারি ও টাকা খাবলা-খাবলির জন্য ত্রিপুরা ক্রিকেটকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। আসলে টিসিএ ‘ র বিশাল পরিমাণ ফান্ডের পেছনে তাদের তো কোনো পরিশ্রম নেই ।

দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্য ক্রিকেটের জন্য রক্ত- ঘাম একাকার করে মাঠে লড়াই করা ক্রিকেটারদের জন্যই দুইশ কোটি টাকার অধিক জমা হয়েছে ফান্ডে।এখন ক্রিকেট অশিক্ষিত তপন- তাপসদের দেওলিয়াপনার জন্যই টিসিএ – র ফান্ড থেকে জিএসটির পেনাল্টি বাবদ দিতে হবে ৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।

তাতে ক্রিকেটারদের শরীরে অবশ্যই জ্বলন হবে।কিন্তু তপন লোধ ও তাপস ঘোষদের মতো হঠাৎ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠা হনুদের চামড়ায় টিসিএ’র আর্থিক ক্ষতির আঁচ লাগবে না।