ডেস্ক রিপোর্টার,২৮ নভেম্বর।।
ত্রিপুরার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে পদদলিত করে নৈরাজ্য কায়েম করার অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে রাজ্যের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ ইভিএম-এ সমীচীন জবাব দিয়েছেন ।এই জয় সমস্ত রাজ্যবাসীর ।পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের বিপুল জয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । তিনি বলেন, ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে, শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর ভর করে ভারতীয় জনতা পার্টিকে নির্বাচিত করেছিলেন রাজ্যের মানুষ ।ক্ষমতার পালাবেদলের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর এই নির্বাচনে উন্নয়নে নিরিখে মানুষ মাতাধিকার প্রয়োগ করেছেন । ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে গোটা রাজ্যের সামগ্রিক ভোটের হার সর্বশেষ বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনের প্রাপ্ত ভোটের চাইতেও বেশী । নির্বাচকমন্ডলীর সুচিন্তিত বিপুল মতাধিকার থেকে কার্যত স্পষ্ট, সরকারের কাজের নিরিখেই রাজ্যের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে তাদের পুনঃ অধিক সমর্থন প্রকট করেছেন । তবে এই নির্বাচনে তৃণমূলের আংশিক ভোট প্রার্থী নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার রাজনৈতিক ধরণ অন্যান্য প্রদেশ থেকে কিছুটা ভিন্ন ।বিগত দিনের নির্বাচনগুলো প্রমাণ করে, ত্রিপুরার নির্বাচন রাজনৈতি মূলত – দুই দলীয় । ত্রিপুরার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোন একটি রাজনৈতিক দলের আংশিক ভোট প্রাপ্তিকে কেন্দ্র করে তৃতীয় শক্তির উত্থান বলে উল্লেখ করার সুযোগ খুবই কম ।সেই প্রেক্ষিতে, ভারতীয় জনতা পার্টির মূল প্রতিপক্ষ হিসেবে জনগন কাকে দেখতে চায় সেটা তারাই ঠিক করবেন ।তবে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভারতীয় জনতা পার্টি যে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না, তা স্পষ্টত বুঝিয়ে দিলেন বিপ্লব কুমার দেব । তিনি বলেন, বিদ্বেষ এবং নৈরাজ্য তৈরি করে গোটা বিশ্বের সামনে যারা ত্রিপুরাকে বদনাম করতে চেয়েছিলেন, ইভিএম বন্দি মতামতের মাধ্যমে নির্বাচকমণ্ডলী তাদের মোক্ষম জবাব দিয়েছেন । ৯৮.৫ শতাংশ আসনে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের জয়যুক্ত করে আস্থা প্রকটের মাধ্যমে ত্রিপুরা রাজ্যে বহমান উন্নয়নের প্রতি নির্বাচকমন্ডলী সর্মথন জানিয়েছেন ।

জনতার আস্থার প্রতি দায়বদ্ধতা স্বরূপ জয়ী প্রার্থীদের ধৈর্যসহকারে মানুষের সমস্যা নিরসনে এবং জনকল্যাণে নিষ্ঠার সহিত কাজ করার, স্পষ্ট বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।জনতার দ্বারা ন্যস্ত দায়িত্ব প্রতি পালনে ব্যর্থ হলে, নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে অকপটে তা তুলে ধরার পরামর্শ দিলেন তিনি । বিরোধীশূন্য আগরতলা পুরনিগম প্রসঙ্গে,পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোন দল কত আসন পাবে বা কারা শুন্য হয়ে যাবেন তা সম্পূর্ণ নির্ণয় করে মানুষের মতামতের উপরে । জনতার মতামত ইভিএমে প্রতিফলিত হয়েছে ।তিনি বলেন, ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের এই পূণ্যভূমিতে সৌভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করে, ত্রিপুরা নাগরিকদের অপমান করার অপপ্রয়াস, জনতার গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ভোট বাক্সে প্রতিফলিত হয়েছে । সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলে ত্রিপুরায় বিভাজনের তৈরি করার সুযোগ নেই । সৌভ্রাতৃত্বপূর্ণ এবং ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুততার সাথে অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে ত্রিপুরা । রাজনীতিতে ব্যক্তি আক্রমনের বিরোধিতা করে তিনি বলেন শিষ্টাচার রাজনীতির একটি অপরিহার্য অঙ্গ । রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে যারাই শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছেন, শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ তাদের জবাব দিয়েছেন । ত্রিপুরার নাগরিকরা তাদের ব্যক্তি জীবন, পরিবার এবং ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিয়তার পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন ।নির্বাচক মন্ডলীকে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন উন্নয়নের পক্ষে জনতার এই জয় এক সমৃদ্ধশালী ও শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা নির্মাণের লক্ষ্যে আরও গতি সঞ্চারিত করবে । পুর ও নগর নির্বাচনে সমস্ত বিজয়ী প্রার্থীদের ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় জনজাতি উন্নয়ন মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি ডাঃ মানিক সাহা, সাংসদ রেবতি ত্রিপুরা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *