ডেস্ক রিপোর্টার, ২৩ফেব্রুয়ারী।।
        সাঙ্গ হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন।এখন অপেক্ষা গণনার। আগামী ২রা মার্চ গণনার দিকে তাকিয়ে আছে গোটা রাজ্য। কোনো দল আসতে পারে ক্ষমতায়? পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন? তা নিয়ে রাজ্যে জুড়ে চলছে চুল চেরা বিশ্লেষণ।
        শাসক দল বিজেপির শক্তি ঘটি ছিলো ঊনকোটি জেলা। শেষ নির্বাচনে জেলার পঞ্চাশ শতাংশ আসন দখল করেছিলো বিজেপি।কিন্তু ২৩ র নির্বাচনে পরিস্থিতি বিজেপির অনুকূলে নেই বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা। বুথ ফেরত সমীক্ষা ভাবিয়ে তুলছে শাসক দল বিজেপিকে।
        ঊনকোটি জেলার চারটি আসন এবার বিজেপির পক্ষে ধরে রাখা সম্ভব নয়। অন্তত এমনটাই মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা।ভোটের গতি প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে ভোট পর্যবেক্ষকরা বলেন, ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর বিধানসভা কেন্দ্রটি এবারও বিজেপি দখল করতে পারবে না। প্রাক্তন বাম বিধায়ক মবস্বর আলী এবার ছিলেন বিজেপির প্রার্থী।গত নির্বাচনে তিনি সিপিআইএমের টিকিটে লড়াই করেছিলেন।এবং হয়েছিলেন জয়ী। ২৩ র ভোটে মবস্বর শিবির পাল্টিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না। রাজনীতিকদের দাবি, ২৩-র ভোটে কৈলাসহর আসনটি কংগ্রেসের দখলে চলে যাবে।এই কেন্দ্রে জোটের প্রার্থী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহার জয় প্রায় নিশ্চিত।
        ঊনকোটির অপর হেভিওয়েট কেন্দ্র চণ্ডীপুর বিধানসভা। এই আসনটি বরাবর ছিলো বামেদের দখলে। প্রাক্তন মন্ত্রী তপন চক্রবর্তীর গড় ছিলো চণ্ডীপুর। শেষ বিধানসভা নির্বাচনে তপন চক্রবর্তী মাত্র ৪২০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। তারপরও এই কেন্দ্রে এবার সিপিআইএম- ই ফেভারিট। কারণ বিজেপি প্রার্থী টিংকু রায়ের উপর আস্থা নেই এই কেন্দ্রের অধিকাংশ বিজেপির লোকজনের।তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই। প্রার্থী হিসাবে টিংকুর নাম ঘোষণা হতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল চন্ডীপুর।বিজেপি নেতৃত্ব ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেও সমস্যা সুরাহা করতে পারেনি। বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা রঞ্জন সিনহা টিংকুর জন্য কাল হয়ে উঠেন। মণিপুরী সম্প্রদায়ের ভোট, চা শ্রমিকদের ভোট ও জনজাতি অংশের ভোট টিংকু কতটা টানতে পেরেছেন? তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিজেপি ও তিপ্রামথার ভোট কাটাকাটিতে বাম – কংগ্রেস জোটের প্রার্থীর(সিপিআইএম)জয়ের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠছে। অর্থাৎ চণ্ডীপুর বিজেপির হাত ছাড়া হচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।
          ফটিকরায় বিধানসভা কেন্দ্রটি শেষ নির্বাচনে দখল করেছিল বিজেপি।জয়ী হয়েছিলেন বিধায়ক সুধাংশু দাস।এবারও এই কেন্দ্রে সুধাংশু পালা ভারী।নানান দিক থেকে বিশ্লেষণ করে রাজনীতিকরা বলছেন, ২৩ র মহারণে সুধাংশু এই কেন্দ্রটি রাখতে পারবেন নিজের দখলে। স্বাভাবিক ভাবেই ফটিকরায় কেন্দ্রটি আঁকড়ে ধরে ঊনকোটিতে গেরুয়া পতাকা তুলে ধরতে পারবে বিজেপি।
              ঊনকোটি জেলার অপর কেন্দ্র পাবিয়াছড়া।এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী মন্ত্রী ভগবান দাস। গত নির্বাচনে ভগবান দাস এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন।কিন্তু এবার খুব নড়বড়ে অবস্থা।নির্বাচনের প্রাক লগ্নে প্রচুর সংখ্যক ভোটার ভগবান দাসের নানান কার্যকলাপের কারণে দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল।এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ভোটে।তাছাড়া এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী সত্যবান দাস।তিনি এক সময় ছিলেন বিজেপিতে।মন্ত্রী ভগবান দাসের মূল ফিন্যান্সার ।কিন্তু এবার পাবিয়াছড়া কেন্দ্রে তিনি জোটের প্রার্থী। তার জনপ্রিয়তা বেশ। বাম – কংগ্রেস জোট হওয়ার কারণে সত্যবান দাসের দিকে ঝুঁকে বাজির দর। রাজনীতিকরা বলছেন,মন্ত্রী ভগবান দাসের পক্ষে পাবিয়াছড়া ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব।স্বাভাবিক ভাবেই পাবিয়াছড়া কেন্দ্রটি বিজেপির হাত ছাড়া হাওয়ার সম্ভবনা প্রবল হচ্ছে দিনের পর দিন।সব মিলিয়ে সার্বিক ভাবে বিচার করলে ঊনকোটিতে বিজেপি অবস্থান তলানিতে। তবে রাজনীতিকদের এই ধারণা সব সময় সঠিক  হবে তার কোনো অর্থ নেই।কারণ ভোটাররা শেষ মুহূর্তে কাকে ভোট দিয়েছে, তা এখনো বন্দি আছে ইভিএমে।
      
       

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *