“বামুটিয়ায় যারা কথা দিয়েছিল তারা সকলেই ভোট দিয়েছে, তাই অতি উৎসাহে এমন কিছু করবেন না, যাতে যারা এসেছিল তাদের মনে যেন কোনরকম আঘাত না লাগে। বরং তাদের ধরে রাখতে পারলে বিজয় উল্লাস একবার নয়, বারবার করতে পারবেন।”…

ডেস্ক রিপোর্টার,১৩ জুন।।
রাজনীতিকরা ব্যস্ত থাকেন রাজনীতি নিয়ে।রাজনীতিকদের আবার পোশাকি নামও আছে। রাজনীতির গণ্ডির বাইরে মঞ্চে তাদের পোশাকি নাম
“সমাজসেবী”। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে আজকের দিনে কত জন রাজনীতিক সমাজ নিয়ে ভাবেন? তা অবশ্যই হলফ করে বলা কঠিন। কিন্তু তার মধ্যেও ব্যতিক্রম রয়েছেন। অনেক নেতাই আছেন রাজনীতির পাশাপাশি মানুষের দুঃখ দুর্দশা গুছানোর জন্য নিজেকে উজাড় করে দেন।

তাদের সংখ্যাটা নেহাৎ-ই কম। রাজ্য রাজনীতিতে এমন ব্যতিক্রম “প্রজাতি”র এক রাজনৈতিক নেতাকে খোঁজে পাওয়া গেলো বামুটিয়াতে। বামুটিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে এই নেতার টিআরপি এখন অনেকটাই বেশি। তার “জনপ্রিয়তার” টিআরপি’র টেক্কা দিতে পারছেন না এলাকার বর্তমান বিধায়ক নয়ন সরকার। তিনি অবশ্যই বাম শিবিরের। কিন্তু শাসক দলের প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাসও টাল সামলাতে পারছেন না।বলছেন সংশ্লিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন অংশের মানুষ।

সম্প্রতি বামুটিয়া মণ্ডল সভাপতি বিজু পাল তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তিনি পোস্টে লিখেন, “বামুটিয়া মণ্ডলের অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে । তাদের একাংশ একাদশ শ্রেণীর বইপত্র কিনতে না পারায় পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনেকে আবার পারিবারিক অভাবের কারণে পড়াশুনা বন্ধ রাখার নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একাদশ শ্রেণীর সমস্ত প্রকার বইপত্রের ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি।”

বিজু পাল তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন, প্রকৃত অর্থেই অর্থনৈতিক ভাবে দুঃস্থ পরিবারের অভিভাবকরা তাদের নিজ নিজ বুথের বুথ সভাপতিদের নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে। নিঃসন্দেহে বামুটিয়া মণ্ডল সভাপতির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দল – গোত্র যাই হোক না কেন রাজনৈতিক নেতারা এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ালে দূর হয়ে যাবে সমাজের দুর্গন্ধময় বিস্টা।

মণ্ডল সভাপতি বিজু পাল এই উদ্যোগ নিতে পারলেও প্রকারন্তে সামাজিক কাজকর্ম থেকে অনেকটাই দূরে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস। তিনি পাঁচ বছর এই এলাকার বিধায়ক ছিলেন।কিন্তু কোনো দিন এই ধরনের উদ্যোগ নেন নি। অভিযোগ, খোদ বিজেপির কর্মীদের। আমরা “জনতার মশাল ” বিজেপির কর্মীদের এই অভিযোগ যাচাই করে নি। আর বাম বিধায়ক নয়ন সরকারের দল তো এখন ক্ষমতায় নেই।

সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বামুটিয়া মণ্ডল সভাপতি বিজু পাল কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি তাৎপর্য পূর্ণ পোস্ট করেছেন, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন,
“বামুটিয়ায় যারা কথা দিয়েছিল তারা সকলেই ভোট দিয়েছে, তাই অতি উৎসাহে এমন কিছু করবেন না, যাতে যারা এসেছিল তাদের মনে যেন কোনরকম আঘাত না লাগে। বরং তাদের ধরে রাখতে পারলে বিজয় উল্লাস একবার নয়, বারবার করতে পারবেন।”

অর্থাৎ তিনি কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন, রাজনৈতিক সন্ত্রাস থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতে।কারণ বামুটিয়া মণ্ডলে অনেক বামপন্থী লোকজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। এবং বামেদের একটা বড় অংশ ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। তাই তাদের উপর যেন কোনো রকম আক্রমণ সংঘটিত না হয়, তার জন্য বিজু পালের এই সতর্ক বার্তা। বিজু পালের মতো যদি রাজ্যের অন্যান্য মণ্ডলের মণ্ডল সভাপতিরা কর্মীদের মিষ্টি ভাষায় সতর্ক করে দিতেন তাহলে সন্ত্রাসের নামে কালিমালিপ্ত হতো না ভারতীয় জনতা পার্টি। বলেছে ওয়াকিবহাল মহল।