ডেস্ক রিপোর্টার, ২সেপ্টেম্বর।।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “মাফিয়া, নিগোসিয়েশনকারীর নাম রাজ্য থেকে মুছে ফেলে দেওয়া হবে। পুলিশকে গ্রহন করতে হবে জিরো টলারেন্স নীতি।” কিন্তু কোথায়? রাজ্যের প্রতিটি মণ্ডলে চলছে রগরগে নিগোসিয়েশন বাণিজ্য। আবার কোথায় কোথায়ও নতুন করে সলতে পাকাচ্ছে নিগো বাণিজ্যের। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কি পৌঁছায় নি এই সংক্রান্ত খবর? যারা মুখ্যমন্ত্রীকে এই সংক্রান্ত খবর পৌঁছে দেবেন, তারাই নাকি এখন নিগোসিয়েশন কারবারের উপদেষ্টা। তাহলে কিভাবে বাস্তবায়িত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি? উঠছে প্রশ্ন।
* দক্ষিন জেলার প্রতিটি মণ্ডলে
হবে নতুন নিগোসিয়েশন গ্রুপ।
*বেশ কিছু মণ্ডলে আগেই
গঠিত হয়েছে নিগো টিম।
• বাদবাকি গুলিতে হবে নতুন টিম।
*হুলিয়া জারি করেছেন দক্ষিন জেলার
যুব মোর্চার সভাপতি বিপুল ভৌমিক।
*গত ১৭ আগষ্ট বিপুল ভৌমিক জেলার
সাংগঠনিক সভায় এই ঘোষণা দিয়েছেন।
*তাদেরকে অনুমতি দিয়েছেন আগরতলার
গুরুমা ও বিশালগড়ের নবা দাদা।
*বৈঠকে বিপুলই নাকি এই
সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
*অভিযোগ করেছেন
জেলার বিজেপির কর্মীরা।
দক্ষিণ জেলার নিগোসিয়েশন বাণিজ্যের উপদেষ্টা আগরতলার রঞ্জিত নগরের গুরু মা ও বিশালগড়ের নবা দাদা উভয়েই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা মানিক সাহার ঘনিষ্ট। কিন্তু তারা মুখ্যমন্ত্রীকে ঘুমে রেখে সংগ্রহ করছেন নিগোসিয়েশন বাণিজ্যের কাট মানি। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে শুরু করে সংগঠনের তাবড় নেতারা প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত কাটমানি পকেটস্থ করার জন্য। তাই, একা কুম্ভ নিষ্কলুষ মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। দাবী, কৃষ্ণনগরের কুশাভাউ ভবনে সর্বক্ষণ থাকা গেরুয়া সৈনিকদের।
বিজেপির দক্ষিন জেলার যুব মোর্চার সভাপতি বিপুল ভৌমিকের নিগোসিয়েশন সংক্রান্ত বড় ঘোষণার পর নড়েচড়ে বসেছে বিলোনিয়া মণ্ডলের নেতারাও। তারাও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন নিগোসিয়েশন টিম গঠন করার। তড়িৎ গতিতে ইতিমধ্যে নতুন টিমও গঠিত হয়েছে ।বিলোনিয়া মণ্ডলের রান্না ঘরের খবর, নব গঠিত নিগোসিয়েশন টিমের সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জয়দেব সাহা। মহামান্য জয়দেব বিলোনিয়া মণ্ডলের যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক।
শেষ রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ জয়দেব সাহার বাড়িতে নতুন নিগোসিয়েশন গ্রুপের বৈঠক হয়েছে।নতুন গ্রুপের ক্যাশিয়ার নির্বাচিত হয়েছেন বিলোনিয়ার যুব মোর্চার নেতা সুরজিত দত্ত।অভিযোগ,বিলোনিয়া মণ্ডলের নব গঠিত নিগোসিয়েশন গ্রুপের স্থানীয় উপদেষ্টা নাকি খোদ মণ্ডল সভাপতি গৌতম সরকার ও প্রাক্তন মণ্ডল সদস্য পার্থ চৌধূরী।তিনি আগরতলার রঞ্জিত নগরের গুরুমার ঘনিষ্ঠ। গুরু মার প্রতিনিধি হয়েই গৌতম- পার্থরা বিলোনিয়াতে গজিয়ে উঠা নতুন নিগোসিয়েশন গ্রুপের তদারকি করবেন। সবটাই নাকি হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে ঘুমে রেখে।
বিলোনিয়ার নতুন নিগোসিয়েশন গ্রুপের সম্পাদক জয়দেব সাহা কে? এবার আসা যাক জয়দেব সাহার পরিচয়ে।গত কয়েকমাস আগে বিলোনিয়াতে গ্রেফতার হয়েছিলেন দাগী মাফিয়া মানিক দাস ওরফে কালা মানিক। জয়দেব সাহার মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেফতার হয়েছিলো কালা মানিক। অভিযোগ ছিলো, স্থানীয় আনন্দ মেলার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রাতের অন্ধকারে কালা মানিক জয়দেবের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ছিলো। এক সময়ে জয়দেব ছিলো স্থানীয় মাফিয়া সম্রাট কালা মানিকের চামচা। এখন কালা মানিকে গর্তে পুড়ে দিয়ে জমি দখলের জন্য মারিয়া হয়ে উঠেছে তোলাবাজ নেতা জয়দেব।গুরু মা থেকে নবা দাদা, গৌতম সরকার থেকে পার্থ চৌধুরী এবং যুব মোর্চার জেলা সভাপতি বিপুল ভৌমিকের হাত তার মাথার উপর। ব্যস, আর তাতেই তো কেল্লা ফতে।
রাজ্যে দ্বিতীয় বার বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেফতার করা হয়েছিল বিলোনিয়ার তোলাবাজ সুমন দেবনাথকে। তৎকালীন সময়ে সুমন দেবনাথ ছিলো দক্ষিন জেলার যুব মোর্চার সভাপতি। গ্রেফতারের পর রাতারাতি তোলাবাজ সুমনকে দায়িত্ত্ব থেকে ছেটে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এবং দক্ষিন জেলার যুব মোর্চার নতুন সভাপতি করা হয়েছিল বিপুল ভৌমিককে। তবে চেয়ারে মুখ পরিবর্তন হলেও, পরিবর্তন হয় নি কালো ব্যবসার রুট। তার প্রমাণ বিপুল ভৌমিক নিজেই।
বিজেপির কর্মীদের বক্তব্য, গত ১৭ আগস্ট বিলোনিয়াস্থিত বিজেপির দক্ষিণ জেলার অফিসের সেকেন্ড ফ্লোরে জেলার যুব মোর্চার নেতা ও মণ্ডলের যুব মোর্চার নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়। সাংগঠনিক বৈঠকের পাশাপাশি নেতারা নিগোসিয়েশন সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক পুরোহিত্য করেছিলেন দক্ষিণ জেলার যুব মোর্চার সভাপতি বিপুল ভৌমিক।সঙ্গে ছিলেন বিলোনিয়া মণ্ডলের যুব মোর্চা ও মন্ডল নেতৃত্ব। তথ্য বলছে, এই বৈঠকেই স্থির হয় দক্ষিন জেলার প্রতিটি মণ্ডলে হবে নিগোসিয়েশন গ্রুপ। ঋষ্যমুখ সহ আরো কয়েকটি মণ্ডলে ইতিমধ্যে নিগো গ্রুপ হয়ে গিয়েছে। যেগুলি নেই,সেখানেই হবে নতুন গ্রুপ। এই বৈঠকেই নাকি দক্ষিন জেলার যুব মোর্চার নেতৃত্ব ঘোষনা দিয়েছিলেন,, আগরতলা থেকে গুরু মা এবং বিশালগড়ের নবা দাদার নির্দেশেই গঠিত হবে নতুন নিগোসিয়েশন গ্রুপ।