
ডেস্ক রিপোর্টার,২৭ ফেব্রুয়ারি।।
দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন।রাজ্যের দুইটি আসন দখলের জন্য পূর্ন শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে শাসক দল বিজেপি। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল তিপ্রামথা(জনজাতি ভিত্তিক) শুরু করেছে টাল বাহানা। তিপ্রামথার মূল ভোট ব্যাংক জনজাতি অংশের মানুষ। তারাও জাতীয় দল গুলিকে ব্রাত্য রেখে বুবাগ্রা প্রদ্যুৎ কিশোরের কথায় ঢোক গিলছে। এই অবস্থায় বাঙালি ও জনাজতি অংশের ভোট বিভাজনের সমীকরণ স্পস্ট।
২৩- র নির্বাচনে তিন জাতীয় দল বিজেপি, সিপিআইএম ও কংগ্রেসের মান রক্ষা করেছিল বাঙালি ভোট ব্যাংক। পাহাড়ের ২০টি আসন থেকে বিজেপি পেয়েছিলো ছয়টি। এবং তাদের শরিক দল আইপিএফটি (জনজাতি ভিত্তিক দল) পেয়েছিল ১টি আসন।বাদবাকি ১৩টি আসন দখল করেছিলো তিপ্রামথা। বামেদের ঝোলা ছিলো শুন্য। কংগ্রেস তো গণনার বাইরে। বামেরা দীর্ঘ দিন জনজাতি তোষনের রাজনীতি করলেও তাদেরকে নিরাশ করে পাহাড়।

২৪- র লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি এখন বাঙালি ভোট ধরার জন্য আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছে। তাই এখন শাসক দলের নেতারা রাজ্যের ৭০ শতাংশ বাঙালি ভোট ব্যাংক ধরে রাখতে রিশার পরিবর্তে গলায় ধারণ করেছে “গামছা”। বাঙালিয়ানার প্রতীক গামছাকে গলায় ধারণ করে দলীয় কর্ম সূচি করলেন প্রদেশ বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য। সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক অমিত রক্ষিত। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি বিধায়ক সুশান্ত দেব বিজেপি নেতাদের গলায় গামছা ধারণের মধ্য দিয়ে বাঙালির জাতীয়তাবাদের জয় হয়েছে বলেই মনে করছেন রাজ্যের বাঙালি অংশের লোকজন।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার সিপাহীজলা (দ:) জেলা যুব মোর্চার উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছিল ”নমো যুব চৌপাল” কর্মসূচি। প্রদেশ বিজেপির এই কর্মসূচিতে যুবকদের সাথে মত বিনিময় করেন প্রদেশ বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, সাধারন সম্পাদক অমিত রক্ষিত। এই কর্মসূচিতে বিজেপির নেতা – কর্মীদের গলায় ছিলো গামছা। উত্তরীয়- র পরিবর্তে তারা গলায় তুলে নিয়েছিলো বাঙালিয়ানার প্রতীক “গামছা”।

রাজনীতিকরা বলছেন, এতো দিন রাজ্যের শাসক দল বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কাছে প্রাধান্য পেয়ে থাকতো জনজাতিদের “রিশা”। খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রিশার কদর করেছিলেন।রীতিমত রিশার আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি হয়েছিল। তাতে অবশ্যই কাউর কোনো আপত্তি নেই। জনজাতি ভোট টানতে রিশার প্রচার করতে গিয়ে এই রাজ্যের ৭০ শতাংশ বাঙালির বাঙালিয়ানার প্রতীক “গামছা” গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিলো।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কথায়, বিজেপি নেতৃত্ব বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছেন রাজ্যের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ভোট দখল করতে হলে তাদের পরাম্পরকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই বাঙালি জন গোষ্ঠীর ভোট তারা নিংড়ে নিতে পারবে।তখন প্রদ্যুৎ কিশোরের তিপ্রামথাকে ভোট ময়দানে ধূলিসাৎ করে দিতে পারবে ভারতীয় জনতা পার্টি। রাজ্য রাজনীতির ভোটের এই জাতিগত সমীকরণ উপলব্ধি করেই বিজেপি নেতারা গলায় গামছা ধারণ করেছেন।

কারণ এই গামছা (গা+ মোছা) বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। এটি একটি মামুলি ব্যবহায্য বস্ত্র হলেও বাঙালির সামাজিকতা, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, শিল্প-সাহিত্য, চিকিৎসা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, উৎসব ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর নানাবিধ ব্যবহার চোখে পড়ে। এক কথায় বাঙালির জীবনাচারের সঙ্গে গামছার এক অটুট বন্ধন রয়েছে। যা গড়ে উঠেছে দীর্ঘ কালব্যাপী, যুগ যুগান্তর ধরে। বাঙালি ভোট টানতে ২৪- র রণক্ষেত্রে গামছা-ই হবে বিজেপির হাতিয়ার।