ডেস্ক রিপোর্টার,১জুন।।
রাজ্যে বিজেপি সরকারের জামানায় সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির নাম “জি -২০ সম্মেলন”। “জি – ২০’ র নাম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বহিঃ রাজ্যের কয়েকটি ভূঁইফোড় ঠিকাদারি সংস্থা। সাধারন কোটেশনের মাধ্যমে বাগিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকার কাজ। এবার বকেয়া বিল আদায়ের জন্যও আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছে ভুঁইফোড় সংস্থাগুলি। বিল পেতে সংস্থা গুলির ভরসা এখন রাজ্যের এক ধান্দাবাজ অবসর প্রাপ্ত আমলা। ঠিকাদারি সংস্থাকে বকেয়া বিল পাইয়ে দিতে কোমর কেছে মাঠে নেমেছেন এই আমলাবাবুও।তার জন্য অবশ্যই মাঠে – ঘাটে – হাটে ফেরী করছেন রাজ্যের নিষ্কলুষ মুখ্যমন্ত্রীর নাম।

ঠিকাদারি সংস্থার নাম:”ভিরাকস কন্ট্রাক্টর”
আগরতলা অফিস: কুমারীটিলা, কুঞ্জবন।
সংস্থার কর্নধার: শুভম জিন্দাল
বাড়ি : গাজিয়াবাদ, উওর প্রদেশ।
অন্যান্য অফিস: উওর প্রদেশ, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ সহ উত্তর পূর্বের অসম,মনিপুর

আমরা বলেছিলাম, সাধারণ কোটেশনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার কাজ বগলদাবা করেছে বহিঃ রাজ্যের সংস্থা “ভিরাকস কন্ট্রাক্টর”। আমরা তুলে ধরবো সেই তথ্যও। তার আগে দেখে নিন আরোও কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য।

কাজ: লেজার লাইট শো এবং সাউন্ড সিস্টেম
স্থান: নীর মহল,মেলাঘর
ওয়ার্ক অর্ডার নম্বর: TSIC/MISC/Work/G-20/2023/4627-32
তারিখ: ১লা মার্চ ২০২৩
ওয়ার্ক অর্ডারে স্বাক্ষর: সুরেশ চন্দ্র দাস, এমডি টিএসআইসি
কাজের মূল্য: ৫ কোটি ৪৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

৫ কোটি ৪৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার কাজ হাতিয়ে নিয়েছে বহিঃ রাজ্যের সংস্থা “ভিরাকস কন্ট্রাক্টর” একেবারেই সাদামাটা একটি কোটেশন দিয়ে। ভাবা যায় কি? কেলেঙ্কারির মাত্রা কোন পর্যায়ে নামলে এমন হতে পারে। দর্শক বন্ধু আপনারা দেখুন, শুভম জিন্দালের সংস্থা “ভিরাকস কন্ট্রাক্টর”- র সাদামাটা কোটেশনের কাগজ।
সরকারী দপ্তরে একটি সুই ক্রয় করলেও টেন্ডার দেওয়া হয়। আর জি -20 সম্মেলনে কোটি কোটি টাকার কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে সাধারণ কোটেশনের মাধ্যমে। কেন?জি -20 সম্মেলন তো ত্রিপুরায় হঠাৎ করে হয় নি। এটা পূর্ব পরিকল্পিত। আসনের গৌরী সেনের টাকা বলে কথা তো। তাই কেন্দ্রের টাকা লুটেপুটে খাওয়ার এক উত্তম ফন্দি এটা।

জি – ২০’ র আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে ওয়াকিবহাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা। দুর্নীতির কারণে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই আটকে রেখে দিয়েছিলেন জি – ২০ সম্মেলনে কাজ করা বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল। গুঞ্জন রাজ্য সচিবালয়ে। এই বিষয়টি জানা সত্ত্বেও “ভিরাকস কন্ট্রাক্টর”- র কর্নধার শুভম জিন্দালকে বিল পাইয়ে দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত খাটাখাটনি করছেন বাম মার্কা আমলা অবসর প্রাপ্ত আমলা পি কে। তিনি এখন অবশ্যই বাস করেন রাজ্যের রাম রাজত্বের “রাজার” গর্ভগৃহে। মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহাকে ঘুমের মধ্যে বিক্রি করছে মহামান্য পি কে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কি বুঝতে পারছেন না?

“ভিরাকস কন্ট্রাক্টর”- সংস্থাকে বকেয়া বিল পাইয়ে দিতে আমলা পিকে এতো তৎপর? নেপথ্যে কমিশন বানিজ্য। বিজেপি সদর দপ্তরে কান পাতলেন শোনা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর নাম ফেরী করা অবসর প্রাপ্ত আমলা পিকে’ র সঙ্গে “ভিরাকস কন্ট্রাক্টর- র কর্নধার শুভম জিন্দালের চুক্তি হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ সংস্থাটির বকেয়া বিল মিটিয়ে দিতে পারলে শুভম জিন্দাল আমলা পি কে’ র একাউন্টে দেবে নগদ ১৫ লক্ষ। মোটা অঙ্কের কমিশনের জন্যই শুভম জিন্দালকে বিল মিটিয়ে দেওয়ার জন্য টিএসআইসি- র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুরেশ চন্দ্র দাসকে চাপ দিচ্ছে অতীতের বাম মার্কা এবং হালের ভেকদারি রাম মার্কা অবসর প্রাপ্ত আমলা পিকে।

ভারতীয় জনতা পার্টির কৃষ্ণনগর গেরুয়া বাড়ির তথ্য বলছে, শুধু অবসর প্রাপ্ত আমলা পি কে নয়, ভিরাকস কন্ট্রাক্টর”কে বকেয়া বিল পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন রাজ্য বিধানসভার এক সদস্যও। গত লোকসভা নির্বাচনের পর তিনি রাজ্যে এসেছিলেন। এবং ২৩- র বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট বাগিয়ে নিয়েছিলেন। এখন তিনি বিধায়ক।
ভিরাকস কন্ট্রাক্টর- র কর্নধার তার দ্বারস্থও হয়েছে।

বিধায়ক বাবুর সঙ্গে নাকি কমিশনের কাঞ্চনমূল্য ত্রিশ লক্ষ টাকা। এই পরিস্থিতিতে বিলের অর্থ প্রদানকারী সংস্থা টিএসআইসি- র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুরেশ চন্দ্র দাস পড়েছেন মহা ফাফরে। আমলা পিকে হুমকি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে। আবার বিধায়ক বাবু দিচ্ছেন চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকি। এই অবস্থায় কোথায় যাবেন টিএসআইসি- র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুরেশ চন্দ্র দাস? রাজ্যের নিষ্কলুষ মুখ্যমন্ত্রী ডা মানিক সাহা যদি ভিজিলেন্স, ইডি’কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারেন আমলা পিকে ও বিধায়ক বাবুর বিরুদ্ধে,তাহলে বেরিয়ে আসবে কমিশন সিন্ডিকেটের কান – মাথা। মুখ্যমন্ত্রী কি পারবেন? আপাতত এই কোটি টাকার প্রশ্ন তোলা থাক কুলুঙ্গিতে।