ডেস্ক রিপোর্টার, ৩১মে।।
রাজ্যের শাসক দল বিজেপির শরিক তিপ্রামথার সংসারে অশান্তির আভা। তাও আবার দলের দুই মুখ্য নেতার মধ্যে।তিপ্রামথার ফাউন্ডার প্রদ্যুৎ কিশোর ও দলের বর্তমান প্রধান বিজয় রাংখলের মধ্যে সংঘাত শুরু।খুব শীঘ্রই শুরু হতে পারে রাজ বিদ্রোহ।বিদ্রোহের আগুন আঁছড়ে পড়বে বুবাগ্রার রাজ অন্দরে।আনারস বাগানে কান পাতলেই ভেসে আসছে প্রদ্যুৎ – রাংখলের সংঘাতের কিচ্ছা।

তিপ্রামথার সংসারে ফিসফিস,আগামী ৪ঠা জুন লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগেই প্রদ্যুৎ কিশোরের সংসারে জ্বলে উঠেছে ধাউ ধাউ আগুন।নির্বাচনে প্রার্থী ইস্যুতেই প্রথম দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল প্রদ্যুৎ ও রাংখলের মধ্যে। বিজয় রাংখল সহ মথার প্রথম সারির নেতাদের দাবি ছিলো দলের কোনো নেতাকে প্রার্থী করতে। নেতাদের সঙ্গে প্রদ্যুৎ নিজেও সুর মিলিয়ে ছিলেন। দলের নেতারা ভরসা রেখেছিলেন প্রদ্যুৎ কিশোরের উপর।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রদ্যুৎ পাল্টি খান। তিনি যে লোকসভা নির্বাচনে নিজের দিদি কৃতি সিংকে প্রার্থী করবেন, তা ঘুণাক্ষরেও দলের নেতাদের জানান নি।অন্তিম মুহূর্তে লাল খামে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে প্রদ্যুৎ তার দিদি কৃতি সিংয়ের নাম পাঠিয়ে দেন। বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর তিপ্রামথার নেতারা অবাক হয়ে যান। তখন তাদের মাথাও ভেঙ্গে পড়ে আকাশ। কিন্তু ভোটের মুখে বুবাগ্রার বিরুদ্ধে সরাসরি বলার সাহস করেন নি কেউ ।নির্বাচনে নানান কাজের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন বুবাগ্রার এই সিদ্ধান্ত তারা মেনে নিতে পারেন নি।

লোকসভা নির্বাচন চলাকালে মাথার অনেক নেতা প্রদ্যুৎ কিশোরের এই সিদ্ধান্তের নীরব প্রতিবাদও জানিয়েছিলেন। তাই তারা নির্বাচনে সক্রিয় ভাবে কাজ করেন নি।অঘোষিত ভাবে বসে গিয়েছিলেন। একই ভাবে তিপ্রামথার বহু কর্মীও সরে গিয়েছিল নির্বাচনী ময়দান থেকে। প্রথমত তিপ্রামথার বর্তমান চেয়ারম্যান বিজয় রাংখল সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চেয়েছিলেন লোকসভার দুই কেন্দ্র থেকেই পৃথক ভাবে প্রার্থী দিতে। তারা বিজেপির সঙ্গে জোট করতে রাজী ছিলেন না।তারা ভালো করেই জানেন বিজেপির সঙ্গে জোট মানেই গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড তো দূরের কথা তিপ্রাল্যান্ড’ র স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।

কিন্তু প্রদ্যুৎ দলের অধিকাংশ নেতার বিপক্ষে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে সরকারে শরিক হন।এবং পৃথক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকেও সরে আসেন। নেতারা বুঝে গিয়েছিলেন, প্রদ্যুৎ কিশোরের এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের সাধারণ কর্মী – সমর্থকদের সামনে কথা বলার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলছে। তা সত্বেও তারা বুবাগ্রার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলেন।তাই তাদের কাছে একমাত্র ভরসা ছিলো দলের স্থানীয় নেতাদের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করা। এই আশায় বুক বেঁধেছিলেন বিজয় রাংখল থেকে শুরু করে তিপ্রামথার সমস্ত প্রথম সারির নেতারা। বুবাগ্রা প্রদ্যুৎ তাদের বিশ্বাস নিয়েও ছিনিমিনি খেলেছেন।

গোপনীয়তা বজায় রেখে অন্তিম মুহুর্তে নিজের দিদি কৃতি সিংকে পূর্ব আসনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেন । এটা দলের বড় অংশের নেতৃত্ব মেনে নিতে পারেন নি। নেতাদের বক্তব্য, তারা সারা বছর কাজ করছেন মানুষের পাশে থেকে।সমর্থকদের সুখ – দুঃখের শরিক হয়েছেন। দলের জন্য ঝরিয়েছে রক্ত – ঘাম।তারপরও কেন তাদেরকে বঞ্চিত করে প্রদ্যুৎ ছত্রিশগড় থেকে তার দিদিকে উড়িয়ে এনে বসিয়ে দিয়েছেন সোনার সিংহাসনে? এই জিজ্ঞাসা তিপ্রামথার নেতা – কর্মী – সমর্থকদের।রাজনীতিকরা বলছেন , প্রদ্যুৎ কিশোরের এই সিদ্ধান্ত আগামী দিনে বুমেরাং হবে। তিপ্রামথার ক্ষুব্ধ নেতা – কর্মীরা প্রদ্যুৎ কিশোরের রাজ ভবনে হামলা করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সর্বপরি তারা বুবাগ্রা প্রদ্যুৎ কিশোরের বিরুদ্ধে ঘোষণা করতে পারে রাজ বিদ্রোহ।