ডেস্ক রিপোর্টার, ১৭আগরতলা।।
সুবলহীন তৃণমূল কংগ্রেসেও অশান্তির অন্ত নেই। দলের প্রদেশ সভাপতির পদ শূন্য। এই অবস্থায় দলের কাজকর্ম দেখাশোনা করছেন পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব । কিন্তু তাতেই বাধছে ঝামেলা। রাজীব ও সুস্মিতার মধ্যে শুরু হয়েছে কাজিয়া। ইতিমধ্যেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গ নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানিয়েছেন সুস্মিতা দেবের বিরুদ্ধে।আর তখনই মাস্টার স্ট্রোক দিলেন সুস্মিতা। টিডিএফকে ভাঙ্গিয়ে শামিল করে নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। টিডিএফের সভাপতি পুজন বিশ্বাস সহ ৪৫০ জন কর্মী সমর্থক বুধবার তৃণমূলে যোগ দিলেন। এই যোগদান পর্ব নিঃসন্দেহে লেখা থাকবে সুস্মিতা দেবের নামে। নিঃসন্দেহে বঙ্গ নেতৃত্বের কাছে সুস্মিতার গুরুত্ব আরো অনেকটাই বেড়ে যাবে। তবে নিজের রাজ্য অসমে সুস্মিতা দেবের জনপ্রিয়তা তলানিতে। তিনি রীতিমত অসম রাজনীতির একজন জনবর্জিত নেত্রী।
রাজ্যের চার কেন্দ্রের উপ ভোটের পরেই তৃণমূল কংগ্রেসে সমস্যা বাড়তে থাকে। উপ ভোটে জঘন্য ফলাফলে মাথা হেট হয়ে যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরপরই দলের খারাপ রেজাল্টের ময়নাতদন্ত করে বঙ্গ নেতৃত্ব। তৃণমূলের ল্যাবে পাওয়া পরীক্ষালব্ধ ফল থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, সুবল ভৌমিকের ব্যর্থতার কারণেই ভোটবাজারে ধুলোয় মিশিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস l অথচ প্রচারে কোন খামতি রাখেননি বঙ্গ নেতৃত্ব। সমস্ত ধরনের প্রচার মাধ্যমিক চলছিল তৃণমূলের ভোট প্রচার। তারপরও চার বিধানসভা কেন্দ্রে জামানত জব্দ হয়েছিল তৃণমূল প্রার্থীদের। স্বাভাবিকভাবেই সুবলের উপর কোপ পড়ে। শাস্তি স্বরূপ সুবলকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়েও দেয় বঙ্গ নেতৃত্ব।
সুবল চাপ্টার ক্লোজ হওয়ার পর সামনে চলে আসেন প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুস্মিতা দেব। তারা দুজনে মিলেই মূলত দল পরিচালনা করছেন ।কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে মতানৈক্য ঘটতে শুরু করে। রাজীব অনুগামীদের অভিযোগ,সুস্মিতা দেব গোপনে রেখেই অনেক কার্যকলাপ করছেন। নিচ্ছেন নানান সিদ্ধান্ত। কিন্তু তা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানোর প্রয়োজন বোধ মনে করেন নি। সুস্মিতার এধরনের কার্যকলাপ সহ্য করতে পারেননি রাজীব। তাই তিনি চিঠি লিখে পুরো বিষয়টি জানিয়ে দেন বঙ্গ নেতৃত্বকে।
চলন্ত কাজিয়ার মধ্যেই সুস্মিতা দেব মাস্টার স্ট্রোক দেন। মূলত তার একক প্রচেষ্টায় টিডিএফ্কে ভাঙতে সক্ষম হন। তবে রাজ্য ও রাজনীতিতে টিডিএফ একেবারেই অস্তিত্বহীন। শুধুমাত্র টিডিএফ নেতৃত্ব তৃণমূলের যোগ দেওয়াতে ঘাসফুলের কিঞ্চিত শক্তি বৃদ্ধি হবে, এইটুকুই। এর চেয়ে বিশেষ কোন লাভ হবে না তৃণমূল শিবিরের। কেননা টিডিএফ নেতা পীযূষ বিশ্বাস ও পূজন বিশ্বাস রাজ্য রাজনীতিতে তেমন কোনো এফেক্টিভ নন। তাছাড়া রাজ্যের প্রথম সারির নেতৃত্বেদের মধ্যেও তাদের স্থান নেই। হয়তোবা, জৌলুস হীন কংগ্রেসে একসময় তারাই ছিলেন সর্বে সর্বা। রাজনৈতিক ব্যর্থতার কারণেই বাপ – বেটার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল কংগ্রেসের হাই – কমান্ড। শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে কংগ্রেস ছেড়ে বেড়িয়ে যান পীযুষ – পূজন। এখন পূজন তৃণমূল কংগ্রেসে এসেছেন।হয়তো বা আগামী দিনে আসতে পারেন পীযুষ বিশ্বাসও।তবে রাজীব – সুস্মিতার এই লড়াইয়ের মধ্যে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন সুস্মিতা।বলছেন রাজনীতিকরা।
