ডেস্ক রিপোর্টার,১৪সেপ্টেম্বর।।
রাজ্যের উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন সর্বভারতীয় স্তরে “লাইম লাইটে”। প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম নেতৃত্ব এখন দেশের রাজধানীতে গিয়ে সরব হয়েছে।মঙ্গলবার দিল্লিতে সিপিআইএম’র সদর দপ্তর এ কে গোপালন ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন সিপিআইএম’র সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার ও জিএমপির রাজ্য সভাপতি তথা কমিউনিস্ট জিতেন্দ্র চৌধুরী।
সিপিআইএম’র সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে।সীতারামের বক্তব্য, “পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি’র দুষ্কৃতীরা মিছিলে এসে ত্রিপুরায় সিপিআইএম’র সদর দপ্তর আক্রমণ করেছে।দলীয় কার্যালয়ের সামনে থাকা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিজেপি’র দুষ্কৃতীরা।তারা ভেঙে দেয় কিংবদন্তী কমিউনিস্ট নেতা দশরথ দেবের মূর্তি।
সীতারাম ইয়েচুরি বলেন,” বিজেপির দুষ্কৃতীরা ঘটনার পর থেকে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে।কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে না।বিজেপি’র লোকজন প্রতিদিন আক্রমণ করছে বিরোধীদের।বাদ যাচ্ছেন না বিরোধী দলের নেতা-বিধায়করা। সীতারাম ইয়েচুরি স্পস্ট ভাষায় বলেন, ত্রিপুরাতে নেই কোনো গণতন্ত্র।বিজেপির রাজত্বে ত্রিপুরার মানুষ বিষিয়ে উঠছে। সর্ব ভারতীয় স্তরের প্রেক্ষাপট টেনে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, বিজেপি দেশের মানুষকে ঠকিয়েছে।অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো।কিন্তু কোনোটাই বাস্তবায়িত করতে পারেনি নরেন্দ্র মোদি সরকার।ত্রিপুরাতেও একই অবস্থা।মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ত্রিপুরার ক্ষমতায় এসেছিলো বিজেপি।কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেনি।গোটা রাজ্যেই চলছে সন্ত্রাস। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।
“ত্রিপুরায় নেই গণতন্ত্র। বিজেপি’র হিংসার আগুনে জ্বলছে গোটা রাজ্য।এখানে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী-বিধায়ক কেউ নিরাপদে নেই।সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যম,আইনজীবী, চিকিৎসক সবাই আক্রান্ত।”—–দিল্লিতে সিপিআইএম’র সদর দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা বললেন বিরোধী দল নেতা মানিক সরকার।দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে সামনে বসিয়ে মানিক সরকার অভিযোগ করেন, “সংবিধান অনুযায়ী ত্রিপুরাতে কিছুই হচ্ছে না। বিজেপি’র শাসনে রাজ্যের মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসছে। শাসক দল বিজেপি ও রাজ্য সরকার মানুষের গণতন্ত্র হরণ করেছে। সরকার বিরোধী কথা বললেই পড়তে হয় আক্রমণের মুখে।বিজেপির প্রথম টার্গেট সিপিআইএম।”
বিরোধী দল নেতা মানিক সরকারের অভিযোগ, বিরোধী দলের মোট বিধায়ক ১৬জন।তারা সবাই সিপিআইএম’র।কিন্তু কোনো বিধায়ক তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রে যেতে পারছেন না।গেলেই শুরু হয় আক্রমণ।অর্থাৎ বিরোধীদের কন্ঠ চেপে ধারার জন্য যা যা করা দরকার তাই করেছে বিজেপি।
কমিউনিস্ট নেতা মানিক সরকার বলেন, সম্প্রতি বিজেপির উগ্র সমর্থকরা গোটা শহরে আস্ফালন করে চারটি সংবাদ মাধ্যমের অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।পুড়িয়ে দিয়েছে সংবাদ মাধ্যমের গাড়ি।অল্প কিছু দিনে গোটা রাজ্যে ৩৫জন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।বন্ধ করে দেওয়ার হয়েছে বহু ক্যাবল টিভি চ্যানেল।
বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার বলেন, সিপিআইএম’র সদর কার্যালয়ে যারা আক্রমণ করেছে তারা প্রকাশ্যে ঘুরছে।তাদের গ্রেফতার করেছে না পুলিশ।মানিকের কথায়,এভাবে একটি রাজ্য চলতে পারেনা।বিজেপির শাসনে প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে রাজ্যের পরিস্থিতি। বিষিয়ে উঠছে মানুষ।আর বিজেপি’র একমাত্র বিকল্প সিপিআইএম।তাই সিপিআইএমকে দেখে দেখে আক্রমণ করছে।তবে বাদ যায়নি কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।
