নেতাদের সম্পদ সুরক্ষিত রাখতেই
আন্দোলনের মূল ইস্যু থেকে বামেদের বিচ্যুতি!


       ডেস্ক রিপোর্টার, ২সেপ্টেম্বর।।
              রাজ্যে এখন উপভোটের আবহ। শাসক -বিরোধী উভয় শিবির মিছিল মিটিংয়ে ব্যস্ত। তবে নির্বাচনের মুহূর্তে বিরোধী দল সিপিআইএম শাসক দলকে বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ করছে। তবে এমন কিছু ইস্যু রয়েছে,যেগুলি নিয়ে বিরোধী দল কথায় বলছে না।স্বাভাবিক কারণেই বামপন্থী নেতাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজনীতিকরা।
              রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, গত পাঁচ বছরে রাজ্যে বেশ কিছু অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় বিরোধীরা সরকারের এই সমস্ত কেলেঙ্কারি নিয়ে রহস্য জনক ভাবে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছে। রাজ্যের মন্ত্রী টিংকু রায় জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট নিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন।এর আগে টিংকু রায় শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান ছিলেন।তখন দুর্নীতির কারণে আদালত টিংকু রায়ের চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলো।তথাপি বামেরা ছিল নিশ্চুপ। বাম জামানার প্রাক্তন বিধায়ক পার্থ দাসের জাল এসসি সার্টিফিকেট নিয়ে তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেস নাস্তানাবুদ করেছিলো বামেদের। শেষ পর্যন্ত পার্থ দাসকে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছিলো। মামুন মিয়া কাণ্ডে সহিদ চৌধুরীর মতো নেতাকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছিলো। আর এখন ভোটের মুখেও বামেদের আন্দোলনের কোনও ঝাঁঝ নেই।


বিজেপি সরকারের জামানায় ১২কোটি টাকার জল জীবন মিশনের সিলিকন বোর্ড কেলেঙ্কারি হয়েছে। অবাক করার মতো সিপিআইএম নেতারা এই ইস্যুতে মুখ খুলেন নি। ভোটের মুখেও নিশ্চুপ বামপন্থীরা। দক্ষিণ জেলায় ফেটে চৌচির হয়ে গেলো জাতীয় সড়ক। এটা নিম্ন মানের  নির্মাণ কাজের  বড় ঘোটালা। এটা জাতিয় ইস্যুও বটে।কিন্তু বিরোধীরা চুপ। পবিত্র বিধানসভায় বিধায়ক যাদব লাল নাথের পর্নো ছবি দেখার  ইস্যুতে বামেদের কোনো আন্দোলন নেই।


আগরতলা পূর নিগমের এক কর্পোরেটের শারিরীক সম্পর্কের বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। তাতেও ঠোঁট নড়ে নি সিপিআইএম নেতাদের।রাজ্য সরকারের বড় কেলেঙ্কারির মধ্যে বিদ্যুৎ দপ্তর একটা।এখানে পাহাড় সমান দুর্নীতি চলছে। এই সব নিয়ে বামপন্থীরা কথা বলতে রাজি নয় ।কেন?   গোটা রাজ্যে অবৈধ ভাবে খাস জমি দখল করছে বিজেপি নেতারা।আছে তোলা সংস্কৃতি। এই গুলি নিয়ে বাম নেতাদের কথা বলার কোনো জায়গা নেই।কারণ তাদের সময়েও নিগোসিয়েশন, জমি কেনাবেচা সবই চলছিলো নিয়ম করে।


সিপিআইএম নেতারা রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা, কর্মসংস্থান ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করছে।তাদের কাছে যেন আর কোনও ইস্যু নেই। কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার মতো বহু ইস্যূ রয়েছে।তারপরও তারা এই সমস্ত বিষয়ের ধারে কাছে যেতে পারছে না। এই ক্ষেত্রে সিপিআইএম নেতাদের দুর্বলতা কি? খোদ এই প্রশ্ন তুলছে রাজনীতিকরা।


বাম কর্মীদের দাবি, গত ২৫ বছরে বাম নেতৃত্ব অনেক ঘোটালা করেছে। বাম জামানায় কেলেঙ্কারির সংখ্যাও কম ছিলো না। দুই হাত ভরে রোজগার করেছেন বাম নেতারা। এখন তাদের মূল উদ্দেশ্য নিজেদের তৈরি করা সম্পদ রক্ষা করা। তাই সম্পদ রক্ষার তাগিদে সিপিআইএম নেতারা বিজেপির কেলেঙ্কারি নিয়ে সরব হওয়ার সাহস করছে না। তাছাড়া সিপিআইএম নেতারা বিজেপির আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে চিৎকার করলে, বামেদের কেলেঙ্কারির ফাইলও বের করবে বিজেপি। স্বাভাবিক কারণেই শাসক দল ও বিজেপি সরকারের দুর্নীতি ইস্যুতে জিতেন্দ্র,পবিত্র, নারায়নরা মুখে কালো সেলোট্যাব লাগিয়ে রেখেছে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *