
ডেস্ক রিপোর্টার, আগরতলা।।
প্রত্যাশিত ভাবেই শনিবার ঘোষনা হয়েছে বিজেপির যুব মোর্চার প্রদেশ কমিটি। বিশালগড়ের বিধায়ক সুশান্ত দেবের নেতৃত্বে নব গঠিত কমিটি বিতর্কের উর্ধ্বে থাকতে পারে নি।অভিযোগ, কমিটিতে এমন একজন সদস্যা রয়েছেন, যিনি সম্প্রতি স্বামীর ঘর ত্যাগ করে পর পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন। কয়েক মাস কলকাতায় থাকার পর এক যুব নেতার হস্তক্ষেপে এই মহিলাকে আগরতলায় ফিরিয়ে আনেন তার স্বামী। তাকেই এখন স্থান দেওয়া হয়েছে প্রদেশ যুব মোর্চার কমিটিতে। তাহলে এই নারী কি বার্তা দেবেন যুবাদের? নাকি রাজনীতিকে হাতিয়ার করে নিজের নানান বাণিজ্যের শ্রীবৃদ্ধি করবেন পর পুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়া বিজেপির এই যুবা নেত্রী?প্রশ্ন উঠছে খোদ প্রদেশ বিজেপির অন্দরেই।

রাজধানীর পুলিশ হাবের তথ্য বলছে, গত বছরের অক্টোবর মাসে শহরের এক প্রতিষ্ঠিত বিদ্যা ব্যাবসায়ী পশ্চিম আগরতলা থানায় একটি মামলা রুজু করেছিলেন। তিনি ছিলেন রামনগর ৮ নম্বর এলাকার বাসিন্দা। এই এলাকাতেই তার কনসালটেন্সি। থানায় দায়ের করা মামলার উপপাদ্য বিষয় ছিলো, ” বিদ্যা ব্যবসায়ীর কর্মচারীর সঙ্গে তার স্ত্রীর অবৈধ প্রনয়ের সম্পর্ক ছিলো দীর্ঘ দিন ধরেই। এই সম্পর্কের টানে গত ১১ অক্টোবর বিদ্যা ব্যবসায়ীর স্ত্রী তার কর্মচারী শুভঙ্করকে নিয়ে পালিয়ে যান রামনগরস্থিত বাড়ি থেকে। সঙ্গে নিয়ে যান নগদ ৫০ লক্ষ টাকা ও প্রচুর স্বর্ন অলঙ্কার।”

বিদ্যা ব্যাপারীর অভিযোগ মূলে পশ্চিম থানার পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮০,৪০৯,৩৮৬,৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করে।মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন জীবন চন্দ্র দাস। বিদ্যা ব্যবসায়ী অভিযোগ পত্রে জানিয়েছিলেন, তার স্ত্রী কর্মচারী শুভঙ্করকে নিয়ে কলকাতার টালিগঞ্জে বসবাস করছেন। এই বাড়িতেই থাকে শুভঙ্করের মা – বাবা।
কিন্তু মামলা দায়ের করার পরও এক রহস্য জনক কারণে পুলিশ বিদ্যা ব্যবসায়ীর অভিযুক্ত স্ত্রী ও কর্মচারীকে কলকাতায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা কোনো প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি।

প্রদেশ বিজেপির হেঁসেলের খবর, শেষ পর্যন্ত শহরের এই বিদ্যা ব্যাপারী তার স্ত্রীকে পাওয়ার জন্য দারস্ত হন প্রদেশ যুব মোর্চার এক নেতার দরবারে। তিনি অবশ্যই “রূপান্তরিত” বিজেপি। এখনো শরীর থেকে যায় নি পোস্ট অফিস চৌমুহনীর সাদা বাড়ির বুদ বুদ গন্ধ।তার বাড়ি শহর দক্ষিণাঞ্চলে। অবশেষে গত এক পক্ষ কাল আগে “রূপান্তরিত” এই যুবনেতার হস্তক্ষেপে বিদ্যা ব্যাপারী তার স্ত্রীকে প্রেমিক শুভঙ্করের কলকাতার টালিগঞ্জস্থিত বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। যাই হোক, এটা একান্তই তাদের পারিবারিক বিষয়। তা নিয়ে “জনতার মশাল”- র বলার কিছু নেই।
কিন্তু অবাক করার মতো ঘটনা বিধায়ক সুশান্ত দেবের নেতৃত্বে নব গঠিত যুব মোর্চার কমিটিতে কিভাবে স্থান পেলেন পর পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া বিদ্যা ব্যাবসায়ীর স্ত্রী? খবর অনুযায়ী, রূপান্তরিত যুব নেতার হস্তক্ষেপেই নাকি “পর-পুরুষে” আসক্ত বিদ্যা ব্যাপারীর স্ত্রীকে যুব মোর্চার কমিটিতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে ।আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে নেতাদের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা নিয়ে। নেতারা কি এই নারীর অপকর্ম সম্পর্কে কিছুই জানেন না? নাকি জেনেও কোনো এক রহস্য জনক কারণে মন্থ হয়ে বসে আছেন।কারণ যাই হোক না কেন, তাতে কিন্তু কালিমা লিপ্ত হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রদেশ সভাপতি সহ গোটা দল।

একই ভাবে যুব মোর্চার কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকজন “প্রাক্তন কমরেড”- কে। যাদের শিরা, উপশিরা – ধমনীতে আজও বইছে বামপন্থীদের “রক্তবীজ”। তারা এখন শুধু সুযোগের সন্ধানের জন্যই জোর করে মুখে জপ করছেন জয়শ্রীরাম ধ্বনি।তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় জমিদস্যুপনা সহ আদালত চত্বরে নিরীহ মুহুরী অমিত আচার্য্যকে খুনের প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আদালতে কান পাতলেই শোনা যায় এই সংক্রান্ত তথ্য। অভিযোগ, কমিটিতে স্থান পাওয়া এক “কমরেড”তো চিটফান্ডের নাম করে হাতিয়ে নিয়েছিলো লক্ষ লক্ষ টাকা। তাও আবার পকেট খালি করেছিলো বিজেপির কার্য্যকর্তাদেরই। অর্থাৎ ঘরেই ইদুরই কেটে ছিলো ঘরের বেড়া।কমিটিতে থাকা প্রাক্তন কমরেডদের বিরুদ্ধে নেশা কারবারের অভিযোগও তুলছেন খোদ কুশাভাউ ভবনের আবাসিকরাই। অথচ ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বই কণ্ঠে ধরছেন “নেশা মুক্ত ত্রিপুরা” গড়ার স্লোগান।