ডেস্ক রিপোর্টার,৪ এপ্রিল।।
রাজ্যে তৃণমূলের প্রসারের পরিকল্পনা আদৌ কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রাজ্যে তৃণমূলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান দলের বড় অংশ। কর্মীদের কথায়, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয় আগামি কয়েক দিনের মধ্যে বড়সড় ভাঙন দেখা দিতে পারে প্রদেশ তৃণমূলে।
তৃণমূল কংগ্রেসের একমাত্র সবেধন নীলমনি কাউন্সিলর সুমন পাল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। রাজ্যের উন্নয়নের টানে তিনি গেরুয়া শিবিরে ভিড়েছেন। যদিও তৃণমূলের একাংশের দাবি, ত্রিপুরায় দলের একমাত্র জনপ্রতিনিধিকে নেতৃত্ব কোনও সম্মান দেয়নি, দলের কাজেও লাগায়নি। এমন পরিস্থিতি দলের অন্যদের ক্ষেত্রেও তৈরি হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন।
প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি আশিসলাল সিং দীর্ঘ দিন ধরে বেপাত্তা। তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বও যোগাযোগ করতে পারেনি। তৃণমূলের একটা সূত্র জানাচ্ছে, বিজেপির হামলায় তিনি অসুস্থ হয়ে দিল্লির সেহগাল ও বেদান্ত নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। কিছু দিন বিদেশেও কাটিয়েছেন। তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়নি। তিনি নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীরাও যোগাযোগ করতে পারেনি। প্রশ্ন উঠেছে, আশিসলাল সিংয়ের মতো একনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা কেন দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছেন?
মাথা ন্যাড়া হয়ে প্রায়শ্চিত্ত করে ঢাকঢোল পিটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস। রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।
কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে দল কোনও দায়িত্ব না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন আশিস দাস। সামাজিক মাধ্যমে ত্রিপুরা তৃণমূল নেতৃত্বকে তুলোধোনা করতেও ছাড়েননি আশিসবাবু। সরাসরি তেপ দেগেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। দলের সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশও বিতশ্রদ্ধ নেতৃত্বের প্রতি।
রাজ্য তৃণমূলের দায়িত্ব আশিস দাসকে দেওয়ার জন্য সওয়াল করেছেন ত্রিপুরা তৃণমূলের একটা বড় অংশ। আশিস দাসও দাবি করেছেন, তাঁকে দল দায়িত্ব দিলে সাফল্যের রাস্তা দেখাতে পারবেন। আশিসবাবুকে সামনে রেখে দলের ওই অংশ লড়াই করতে চাইছে। তাহলেই দলের ভোলবদল সম্ভব বলে তাঁরা মনে করছেন। দলের একাংশ আসন্ন উপনির্বাচনে আশিস দাসকে তাঁর পুরনো কেন্দ্র সুরমা থেকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়েছে। যদিও এবিষয়ে দলের অন্দরেই দ্বন্দ্ব রয়েছে। নেতাদের বক্তব্য, দল যেভাবে চলছে তাতে তৃণমূলে বড়সড় ভাঙন অপেক্ষা করছে।সেক্ষেত্রে ওই অংশের বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারা ঝুঁকবে তিপ্রামথার দিকে। মথার নেতৃত্বের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যের সংগঠনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে ২৩-র বিধানসভা নির্বাচনে হাত কামড়ানো ছাড়া তৃণমূলের কিছু করার থাকবে না। ৬ এপ্রিলের মহামিছিলেও দলের বিক্ষুব্ধ অংশ যোগ দেবে না বলেই খবর। কর্মীদের দাবি, খুব শীঘ্রই তৃণমূল কংগ্রেস আশীষ দাসকে মুখ করেই ২৩-র ক্যানভাস আঁকতে পারে।
