ডেস্ক রিপোর্টার,আগরতলা।।
২৩- র ভোটের আগে এক সময় মনে হয়েছিল বাম – কংগ্রেসের জোটের সঙ্গে চলে আসবে তিপ্রামথা। প্রদ্যুৎকে সঙ্গে আনার ক্ষেত্রে আত্ম বিশ্বাসী ছিলো বাম – কংগ্রেস নেতৃত্ব। তারা বারবার দাবি করছিলেন,প্রদ্যুৎ আছেন তাদের সঙ্গেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রদ্যুৎ কিশোর একাই ৪২আসনে প্রার্থী দিয়ে ছিনিয়ে নেয় ১৩টি আসন।সঙ্গে ১৭টি আসনে বাম – কংগ্রেস জোটের কফিনে পুতে দিয়েছিলো শেষ পেরেক।তাতে লাভবান হয়েছে বিজেপি। মথা বামেদের ভোট কেটে দেওয়াতেও রাজনীতির ময়দান থেকে ক্রিম তুলে নেয় ভারতীয় জনতা পার্টি।
রাজনীতির অন্দর মহলের খবর অনুযায়ী, নির্বাচনের আগে প্রদ্যুৎ কিশোর তিন দফায় বৈঠক করেছিলেন বাম – কংগ্রেস জোটের সঙ্গে। প্রতিটি বৈঠকে প্রদ্যুৎ ২৫টি আসন দাবি করেন।তারমধ্যে পাহাড়ের ২০টি আসন।এবং সমতলের আরো ৫টি আসন। প্রতিটি বৈঠকে প্রদ্যুৎ তার দাবিতে অনড় ছিলো। প্রদ্যুৎ স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলো, মথাকে ২৫টি ছেড়ে দিলেই,তিনি জোটে আসতে রাজি।কিন্তু প্রদ্যুৎ কিশোরের এই দাবি মানতে রাজি হয়নি আত্ম বিশ্বাসে ভরপুর কমিউনিস্ট নেতারা।কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি ছিলো না। কিন্তু বাধা হয়ে দাড়ায় সিপিআইএম।
বৈঠকে সিপিআইএম পাহাড়ের ২০টি আসন ১০টি করে ভাগাভাগি করার প্রস্তাব দিয়েছিল।বামেদের দাবি ছিল, পাহাড়ে তাদের ভিত যথেষ্ট মজবুত।পাহাড় থেকে নূন্যতম ৭থেকে ৮টি আসন দখল করতে পারে।তাই প্রদ্যুৎ কিশোরের দাবি মানতে রাজি হয়নি বাম নেতৃত্ব।তবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব পাহাড়ে প্রদ্যুৎ কিশোরের শক্তির আঁচ করতে পেরেছিল।তাই কংগ্রেস শিবির বারবার তাদের মিত্র শক্তি সিপিআইএম নেতৃত্বকে বুঝানোর চেষ্টা করেছিল।যদিও আত্ম বিশ্বাসী জিতেন চৌধুরী কংগ্রেস নেতৃত্বের কথা আমল দেন নি।
রাজনীতিকরা বলছেন, আসলে পাহাড়ের ঝড় সম্পর্কে বামেরা আঁচ করতে পারে নি। বামেদের জনসভা গুলিতে জনজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত হলেও ভোট দেয় নি তারা।জনজাতির পুরোপুরি ভাবে ঝুঁকে যায় তিপ্রামথার দিকে। আর যে সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রে ভালো অংশের বাঙালি ভোট ছিলো,সেগুলিতে বাজিমাত করে বিজেপি।আক্ষরিক অর্থে পাহাড়ের ভোট পুরোপুরি ভাবে তিপ্রামথা ও বিজেপির দিকে বাক নেয়। বাম নেতৃত্ব ভোটারদের গতি প্রক্রিয়া বুঝতেই পারেন নি। তাহলে পাহাড়ে বামেদের জনজাতি সংগঠন জিএমপি কি করেছে? জিএমপি নেতৃত্বের দেওয়া রিপোর্টের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিলই নেই।আসলে এডিসি নির্বাচনের পর থেকে পাহাড়ে বামেদের মাটি একেবারেই আলগা হয়ে যায়। তার প্রমাণ পাওয়া যায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই।
