ডেস্ক রিপোর্টার,২৬ফেব্রুয়ারি।।
প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার টাকা
হ্যাকিং করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুই
হ্যাকারকে গ্রেফতার করেছিলো রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।অভিযুক্তরা হলো- নবনীত কুমার
ও বিনোদ কুমার। উভয়কে বিহারের তাজপুর মহকুমার সমষ্টিপুরের বাংদা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। গত ২০ফেব্রুয়ারি বিকালের বিমানে ধৃতদের নিয়ে আসা হয়েছিলো আগরতলায়।এমবিবি বিমান বন্দর থেকে পুলিশ অভিযুক্তদের নিয়ে আসে এনসিসি থানায়। পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কৈলাসহরে।প্রসঙ্গত ২০২১সালে কৈলাসহর ও কুমারঘাট থানার দুইটি মামলার প্রেক্ষিতে ক্রাইম ব্রাঞ্চ দুই হ্যাকারকে গ্রেফতার করে।
প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার টাকা
হ্যাকিং চক্র গোটা দেশে সক্রিয়। চক্রের চাইরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।হ্যাকাররা সিস্টেম হ্যাক করে নিয়মিত ভাবেই হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।শুধু ত্রিপুরা নয়,দেশের অন্যান্য প্রান্তেও হ্যাকাররা জাল বিস্তার করেছে।
রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী ক্রাইমব্রাঞ্চ জানিয়েছে, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো কয়েকজন পান্ডার খোঁজ পেয়েছে পুলিশ।তারা প্রত্যেকেই বহিঃ রাজ্যের।তবে রাজ্যেও তাদের লিংকম্যান রয়েছে।পুলিশ সংগ্রহ করছে লিঙ্কম্যানদের ঠিকুজি। খুব শীঘ্রই অনুসন্ধানকারী ক্রাইম ব্রাঞ্চ লিঙ্কম্যানদের জালে তোলার কাজ শুরু করবে পুলিশ।
ধৃত দুই হ্যাকার নবনীত কুমার
ও বিনোদ কুমার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বহু রোমহর্ষকর তথ্য উগলে দিয়েছে।তারা ক্রাইম ব্রাঞ্চকে জানিয়েছে, সারা দেশে গোটা চক্রের সঙ্গে ২০-২৫জন জড়িত রয়েছে।তারা প্রত্যেকেই আইটি সেক্টরে পারদর্শী।এই গ্রুপে রয়েছে উচ্চ শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা।তারাই মূলত গোটা সিস্টেম পরিচালনা করে।বিহার,দিল্লি, বাঙ্গালুরুতে তাদের কর্পোরেট অফিস রয়েছে।সংশ্লিষ্ট অফিস গুলিতে বসেই চক্রের চাইরা তাদের নেট ওয়ার্ক পরিচালনা করছে।
ধৃতরা তদন্তকারী ক্রাইম ব্রাঞ্চকে জানিয়েছে, রাজ্য থেকে তারা মোট ১৮০০ মহিলার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।প্রত্যেকের একাউন্ট থেকে ৬হাজার করে।অর্থাৎ মোট টাকার পরিমাণ ১০,৮০০,০০০।ধাপে ধাপে হ্যাকাররা এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভারত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী,প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনায় প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলাকে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় থাকে।এই টাকা সরাসরি দেওয়া হয় গর্ভবতী মায়েদের একাউন্টে। চক্রের চাইদের কুনজরে পড়ে রাজ্যের কৈলাসহর ও কুমারঘাটের প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার সুবিধা ভোগী গর্ভবতী মায়েদের ফান্ড। হ্যাকাররা নিয়মিত সিস্টেম হ্যাক করে দিনের পর দিন টাকা আত্মসাৎ করেছে। শেষ পর্যন্ত ২০২১-র মাঝামাঝি সময়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নজরে আসে বিষয়টি।এর আগে সুবিধা ভোগীরা অভিযোগ করেছিলো, তাদের একাউন্টে টাকা আসলেই মুহূর্তে সেই কে বা কারা তুলে নেয়।এই অভিযোগের পর স্বাস্থ্য দপ্তর বিষয়টি খতিয়ে দেখে।এবং খোঁজে পায় সত্যতা।
পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে কৈলাসহর ও কুমারঘাট থানায় পৃথকভাবে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। প্রাথমিক ভাবে থানা পুলিশ মামলার তদন্ত করে।পরে গুরুত্ব বুঝে মামলা ক্রাইম ব্রাঞ্চের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ক্রাইম ব্রাঞ্চ তদন্ত শুরু করতেই বেরিয়ে আসে বড়সড় আর্থিক কেলেঙ্কারি।চক্রের চাইদের সঙ্গে স্বাস্থ্য দপ্তরের লোকজন জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে ক্রাইম ব্রাঞ্চ।তবে এখনো নির্দিষ্ট করে দপ্তরের কুশীলবদের সনাক্ত করতে পারে নি তদন্তকারী সংস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *