ডেস্ক রিপোর্টার,১৯ ফেব্রুয়ারি।।
আগামী ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে রাজ্যের বিরোধী দল সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন। এই রাজ্য সম্মেলনে ২৩’র ভোটযুদ্ধের অভিমুখ চূড়ান্ত করবে সিপিএম নেতৃত্ব। রাজ্য সম্মেলনকে সফল করতে বাম শিবিরে চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গাতে লাগানো হয়েছে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন। একই ভাবে অন্যান্য মহকুমাগুলিতেও রাজ্য সম্মেলন নিয়ে প্রচার শুরু করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। ২৩-র মহারণের আগে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি সহ নির্বাচনী কৌশল নির্ধারিত করা হবে রাজ্য সম্মেলনে। এই সম্মেলনেই সিপিএম নির্ধারণ করবে স্থায়ী রাজ্য সম্পাদককে। বর্তমানে জিতেন্দ্র চৌধুরি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তা অস্থায়ী। মেলারমাঠ সূত্রের খবর, রাজ্য সম্মেলনেই জিতেন্দ্র চৌধুরিকে আগামী দিনগুলির জন্য স্থায়ীভাবে রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে জিতেন্দ্র চৌধুরি ব্যাতিত এই মুহূর্তে রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার মতো কোনো হেভিওয়েট নেতা নেই বাম শিবিরে। তাই জিতেন্দ্র চৌধুরীই যে রাজ্য সিপিএমের মূল কান্ডারি হয়ে উঠবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সিপিএমের অন্দর মহলের খবর অনুযায়ী, রাজ্য সম্মেলন কেন্দ্র করে প্রতিটি জেলা ও মহকুমাস্তরে বৈঠক করছেন বাম নেতৃত্ব। লোকাল কমিটি ও ব্রাঞ্চ কমিটিতেও নিয়মিত হচ্ছে বৈঠক। নানান কারণে প্রকাশ্যে বৈঠক করতে না পারলেও দলের সাংগঠনিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। এই জন্য তারা হাতিয়ার ‘অনলাইন’। অনলাইনে ঘরে বসেই অ্যানড্রয়েড মোবালই ব্যবহার করে সেরে নিচ্ছে সাংগঠনিক কার্যকলাপ। ব্রাঞ্চ থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত অনলাইনকে হাতিয়ার করে সাংগঠনিক বৈঠক করছে সিপিএম। কোনো কোনো জায়গায় ঘরোয়া সভা বা উঠান সভা না করতে পারলেও হাল ছাড়ছে না সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা। তারা অনলাইনে সেরে নিচ্ছে দলীয় কার্যকলাপ। বাম নেতা-কর্মী-সমর্থকদের এই উদ্দিপনা থেকে স্পষ্ট, ২৩-র ভোটযুদ্ধে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে মেলারমাঠ।
সিপিএমের আসন্ন রাজা সম্মেলনে শীর্ষ নেতৃত্ব বেশ কিছু কড়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যে সমস্ত নেতা-কর্মীরা একসময় দলকে আমের আঁটি বানিয়ে ছেড়েছিলো, কিন্তু দলের অসময়ে তাদের দেখা নেই। দল থেকে শত যোজন দূরে সরে আছেন তারা। এই সমস্ত নেতা-কর্মীদের শনাক্ত করবে সিপিএম। এই তালিকায় রয়েছেন কয়েকজন বিধায়কও। সংশ্লিষ্ট বিধায়ক ও নেতা-কর্মীদের আগামীদিনে দল গুরুত্বহীন করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। দলের নতুন মুখ তুলে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। ৭৫ বছরের ঊর্দ্ধে থাকা নেতাদের অব্যাহতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো পলিটব্যুরো। এবং পার্টি কংগ্রেসে এই সিদ্ধান্তে দেওয়া হয়েছিলো সিলমোহর। এই নিয়ম প্রযোজ্য ত্রিপুরার ক্ষেত্রেও। তাই ভবিষ্যৎ রাজনীতির কথা চিন্তা করে যুবাদের তুলে আনতে জোর দেবে সিপিএম নেতৃত্ব। বয়সের কারণে অনেক নেতারাই হারাতে পারেন তাদের অলঙ্কৃত পদ। সব মিলিয়ে রাজ্য সম্মেলনে ২৩-র নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই নীতি নির্ধারণ করবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিএম। এই মুহূর্তে বিজেপির ঘরোয়া অন্তর্কোন্দলের কারণে সিপিএম নেতৃত্ব আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন। তারা মনে করছেন অবাম ভোটের কাটাকাটির ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে পারে বামেরা। তাছাড়া একসময়ে বাম দুর্গ বলে খ্যাত রাজ্যের পাহাড়েও শক্তি বৃদ্ধি করছে সিপিএমের উপজাতি সংগঠন গণমুক্তি পরিষদ। তার পেছনে অবশ্যই কাজ করছে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরির সুচতুর রাজনৈতিক মস্তিষ্ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *