ডেস্ক রিপোর্টার,১০জানুয়ারি।।
                   আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মঙ্গলবার রাজ্য রাজনীতির নয়া ক্লাইম্যাক্সে দিনভর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক মহলে। এদিন সকালে সবাইকে চমকে দিয়ে কংগ্রেস ও বাম ঐক্যের শরিকরা যৌথ বিবৃতি দেয়। যৌথ বিবৃতির উপপাদ্য বিষয় ছিল “রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা আক্রান্ত । অর্থাৎ গণতন্ত্রের লেশও নেই রাজ্যে।মানুষ শাসক দলীয় দুষ্কৃতীদের রক্ত চক্ষুর ভয়ে রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। মুর্দা কথা ভোটের মুখে রাজ্যের আইনশৃংখলার অবনতির বিষয় নিয়ে সরব হয়ে কংগ্রেস ও বাম জোটের  শরিকরা এই বিবৃতি প্রদান করে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বপ্রথম সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। কংগ্রেস ও বাম জোটের যৌথ বিবৃতি পোস্ট করার  পরেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে যায় নানান জল্পনা।
                   যৌথ বিবৃতিতে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সি পি আই এমের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। কংগ্রেসের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহা। এছাড়া বাম ঐক্যের শরিক সিপিআই এর পক্ষে যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন দলের সম্পাদ  যুধিষ্ঠির সাহা। আরএসপির পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন দলীয় সম্পাদক দীপঙ্কর দেব। ফরোয়ার্ড ব্লকের পক্ষে চেয়ারম্যান পরেশ সরকার এবং সিপিআইএমএলের পক্ষে সম্পাদক পার্থ কর্মকার সাক্ষর করেছেন ।
                   রাজনৈতিক মহলের খবর আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দল বিজেপিকে আটকাতে মরিয়া কংগ্রেস সহ বৃহত্তর বাম জোট। বিগত কয়েক মাস আগেই রাজ্যের বৃহত্তর বাম ঐক্যের শরিকরা বৈঠক করেছিল। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বিজেপিকে ঠেকাতে প্রয়োজনে তারা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে বাধ্য হবে । বৈঠকে বাম ঐক্যের বড় শরিক সিপিআইএম এই প্রস্তাব এনেছিল। পরবর্তী সময় বাদবাকি শরিকরা বড় শরিক সিপিআইএমের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল। অন্যদিকে কংগ্রেসও বারবার বামেদেরকে জোটের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।এতদিন কোনো রাজনৈতিক দলই জোটের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি। শেষ পর্যন্ত  মঙ্গলবার সকালে কংগ্রেস ও বামজোট যৌথ বিবৃতি দেয়। এবং   প্রমাণ করে দেয় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে আটকাতে এক মঞ্চে চলে এসেছে তারা। আগামী দিনে ভোটের প্রাক্ত লগ্নে কংগ্রেস ও বাম ঐকের শরিকরা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেবে জোটের। এমন খবর ভেসে আসছে রাজনৈতিক মহলে।
                   রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, কংগ্রেস ও বাম জোটের এই যৌথ বিবৃতি রাজ্য রাজনীতির এক নয়া মাইলস্টোন। এর আগে কখনো কংগ্রেস- সিপিএমকে যৌথ মঞ্চে দেখা যায়নি। যদিও রাজনৈতিক মহলে চর্চা ছিল কংগ্রেস সিপিএমের মধ্যে দিল্লিতে চলে দোস্তি আর রাজ্যে কুস্তি। এই কারণেই নাকি অষ্ট আশির পর ক্ষমতায় আসতে পারেনি কংগ্রেস। তবে ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচনে যদি কংগ্রেস ও বৃহত্তর বাম ঐক্যের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট হয়,তাহলে বিজেপির জন্য বিষয়টি ভারী হয়ে উঠতে পারে।কেননা রাজ্যের মানুষ যদি বাম কংগ্রেস জোটকে মেনে নেয়, তাহলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সমীকরণে ঘটতে পারে অনেক অদল বদল।তাই কংগ্রেস ও বৃহত্তর বাম ঐক্যের জোটকে সাধারণ মানুষও স্বাগত জানাতে শুরু করেছে। এটা অবশ্যই শাসক দল বিজেপির জন্য ডেকে আনবে এক অশনি সংকেত।এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *