
ডেস্ক রিপোর্টার,১৪ এপ্রিল
ত্রিপুরায় বসবাসকারী তিপ্রাসারা বহিরাগত।তাদের বংশ কূলের মূল শিকড় প্রোথিত আছে চীন ও বার্মাতে। রাজ্যের তিপ্রাসারা মঙ্গোলিয়ান জাতি।কালের বিবর্তনে খাদ্যের সন্ধানে যাযাবর মঙ্গোলিয়ান জাতি বঙ্গ দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। ত্রিপুরা বঙ্গ দেশের একটি অংশ। অর্থাৎ যাযাবর তিপ্রাসারা উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল।এটাই বলছে ইতিহাস।যদিও তিপ্রাসা জাতি তাদের এই পূর্বের ইতিহাস মানতে রাজি নয়। তারা চুরের মায়ের বড় মতো বড় গলা করে বলছে, তিপ্রাসারা ভূমি পুত্র। এই মুহূর্তে তিপ্রাসাদের মুকুট হীন রাজা প্রদ্যুৎ কিশোর নিজের জাতিকে সাংবিধানিক অধিকার পাইয়ে দেওয়ার জন্য বর্তমান বিজেপি সরকারকে নানান ভাবে হুমকি দিচ্ছে।বিজেপি অবশ্যই প্রাদ্যুতের হুঙ্কারকে দুই পয়সা দিয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে না। তার প্রমাণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তিপ্রাসা জাতির স্বার্থ রক্ষার অনৈতিক দাবির প্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত কোনো ইন্টারলোকেটর নিয়োগ করে নি।

রাজ্যে তিপ্রাসা জাতির আগমন ঘটেছিল চীন, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ থেকে। বলেছে ইতিহাসের তথ্য।এই তথ্য নতুন করে তুলে ধরে “মাষ্টার অফ টাইম” নামক বই প্রকাশ করার অপেক্ষায় রয়েছেন রাজ পরিবারের সদস্য তথা জনজাতি নেতা, প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মণ।
প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রীর তুলে ধরা তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করেছিলো “জনতার মশাল” ওয়েব পোর্টাল। আর তাতেই আতে ঘা লেগেছে জনজাতিদের বড় অংশের। “জনতার মশাল”-র প্রকাশিত খবরে ভীতু হয়ে উঠেছে জনজাতিদের বড় অংশ। ভীরুতা থেকেই তাদের অনেকেই বলছেন “জনতার মশাল” ইতিহাস বিকৃতি করেছে। বাস্তবে তা নয়।

আসলে সত্য কোনো দিন ছাই চাপা দিয়ে রাখা যায় না। তার প্রমাণ খোদ তিপ্রাসা জাতির বর্তমান মুকুটহীন স্ব ঘোষিত রাজা প্রদ্যুৎ কিশোর।আমরা তা মুখে বলছি না। তথ্য,প্রমাণ সহ বলছি। রাজ্যের তিপ্রাসা জাতির আদি নিবাস কোথায়?বা তাদের ভাষা ককবরকের উৎস কোথায়? তা সোজাসাপ্টা বলেছেন প্রদ্যুৎ নিজেই। প্রদ্যুৎ কিশোর নিজেকে এবং গোটা তিপ্রাসা জাতিকে রাজ্যের ভূমিপুত্র বলে দাবি করছেন। আর বাঙালিদের বলছেন বিদেশি। কিন্তু নিজেই জানিয়ে দিলেন, তিপ্রাসাদের চীন – বার্মার সঙ্গে নাড়ির যোগ। তাদের ভাষা ককবরকের মূল উৎসস্থল বার্মাতে।

সত্যকে কোনো দিন চাপা থাকে না।
মাটি ফুঁড়ে তা বেরিয়ে আসবেই। প্রদ্যুৎ কিশোর যতই নিজে সহ গোটা তিপ্রাসা জাতিকে ভূমি পুত্র বলে দাবি করলেও,নিজেই হাটে হাড়ি ভাঙলেন। তিনি বলছেন, তিপ্রাসাদের কক বরক ভাষার উৎপত্তি বার্মাতে। বর্মিজ ভাষা থেকেই ককবরকের জন্ম।

দেশ-বিদেশের ঐতিহাসিকরা তথ্য দিয়ে বলছেন রাজ্যে আগমনকারী তিপ্রাসা জাতির মূল ভিটেমাটি ছিল চায়না ও বার্মাতেই।
A Cultural History of Assam, Vol-1
নামক বইয়ে দেশীয় ঐতিহাসিক ডক্টর বি.কে. বড়ুয়া লিখেছেন, “তিপ্রাসা লোকদের আদি বাড়ি ছিল ইয়ান-সে-কিয়াং ও পশ্চিম চিনের হোয়াং হো নদীর নিকটে। সেখান থেকে তারা ব্রহ্মপুত্র, চিন্দোইন এবং ঈরাবতী নদীর গতিপথ বেয়ে ভারত ও বার্মায় প্রবেশ করে। আসামে আসা ঝাঁকটি ধুবড়ির কাছে ব্রহ্মপুত্র নদের বিশাল বাঁকের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাদের কেউ কেউ দক্ষিণে গিয়ে গারো পাহাড় ও পার্বত্য তিপেরা রাজ্য দখল করে।”

ব্রিটিশ লেখক W.W Hunter তার ‘A Statistical Account of Bengal Vol.-VI – নামক বইয়ে বলেছেন “ত্রিপুরার শাসকরা তিব্বতীয় বার্মিজ বংশোদ্ভূত ছিলেন”। Major Fisher মত দেন যে, “তিপরা এবং কাছারি একই উৎপত্তি এবং তাদের রীতিনীতি, ধর্ম, চেহারাও মোটামুটি একইরকম”। Sidney Endle তাঁর ‘দ্য কাছারিস’ এ বলেছেন, “বৈশিষ্ট্য এবং সাধারণ চেহারাতে তারা মঙ্গোলিয় ধরণের খুব কাছাকাছি বলে অনুমান করা যায় এবং তিব্বত এবং চীনকে জাতির আদি বাড়ি হিসাবেও মনে হয়”।

লেখক বিকে বড়ুয়ার A Cultural History of Assam, Vol-1। ডব্লিউ ডব্লিউ হান্টারের
Statistical Account of Bengal Vol.-VI এবং
কৈলাশ চন্দ্র সিনহার রাজমালায় তিপ্রাসাজাতির মূল ভিটে দেখানো হয়েছে চীন, তিব্বত ও বার্মাতেই। তিপ্রাসা জাতির বর্তমান মুকুট হীন রাজা প্রদ্যুৎ কিশোর নিজেই সেটাই স্বীকার করলেন পরিষ্কার ভাবে।

প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনের এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেল রাজ্যের তিপ্রাসা জাতির জিনের উৎপত্তিস্থল কোথায়? আর প্রদ্যুতের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অবসান হয়েছে সমস্ত জল্পনা কল্পনার। নিজেই বুঝিয়ে দিলেন তারা ভূমিপুত্র নয়। তারা এসেছে চায়না – বার্মা থেকে। এটা অবশ্যই বুঝতে হবে এই রাজ্যের ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো লাফানো জনজাতিদের।