ডেস্ক রিপোর্টার, ১৭মার্চ।।
রাজ্য রাজনীতিতে সুদীপ রায় বর্মন এক রহস্য চরিত্র হয়ে উঠছেন। সমস্ত জল্পনাকে উস্কে দিয়ে বৃহস্পতিবার বিধায়কদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। সুদীপের অনুপস্থিতি জল আরো ঘোলা হয়ে যায়।এদিন বিধায়কদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের অপর দুই বিধায়ক বীরজিত সিনহা ও গোপাল রায় উপস্থিত ছিলেন।তাছাড়া বিজেপির ৩০জন বিধায়ক।এবং বামেদের ১১জন ও আইপিএফটির একজন বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক মহলে খবর, কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের যোগাযোগ চলছে ভোটের আগে থেকেই। বিধানসভা ভোটের প্রাক লগ্নে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে সুদীপ রায় বর্মন সাক্ষাৎ করেছিলেন।তাও আবার রাজধানীর একটি তারকা হোটেলে।এবং এই সাক্ষাৎ পর্ব হয়েছিলো ভোর রাতে। এই খবর ছিলো প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছেও। কিন্তু ভোটের মুখে কংগ্রেস নেতৃত্ব সুদীপ রায় বর্মনকে তা বুঝতে দেন নি। সুদীপের সব সিদ্ধান্তে তারা গলা মিলিয়ে ছিলেন। কিন্তু খটকা লেগেছিল বাম- কংগ্রেসের আসন বণ্টন প্রক্রিয়া নিয়ে। কংগ্রেসে ১৭টি আসন দাবি করেছিল।আসলে এই দাবি বকলমে ছিলো সুদীপ রায় বর্মনের। দল ভারী করার জন্য সুদীপ ১৭টি আসন চেয়েছিল।কারণ যদি কংগ্রেস বাজীমাত করতো,তাহলে সুদীপের লবির বিধায়ক সংখ্যা বেশি থাকতো। এতে দল ত্যাগ করলে আইনি ঝামেলায় এড়ানো সম্ভব।এই কথা মাথায় রেখেই সুদীপ আগাম পরিকল্পনা করে ১৭টি আসন দাবি করেছিলেন।
সুদীপ রায় বর্মনের এই পরিকল্পনা ধরে ফেলে কংগ্রেস নেতৃত্ব।তখন তারা বামেদের স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলো তারা ১৩টি আসনেই সন্তুষ্ট। তবে দুয়েকটিতে শুধু রদবদল করলেই হবে।তখন সুদীপ বুঝতে পারেন কংগ্রেস তার কথা খুব বেশি আমল দিচ্ছে না। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন,এই সময়েই হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে সুদীপ রায় বর্মনের গোপন বৈঠকের গন্ধ ম- ম করে উঠে কংগ্রেস ভবন। ভোটের মুখে উত্তাপ বাড়লেও কংগ্রেস সুদীপের উপর ফিট করেছিলো টর্চ লাইট। সর্ব ভারতীয় কংগ্রেসের রাডারে সব ধরা পরে যায়।তখন থেকেই সুদীপের উপর সন্দেহ বাড়তে থাকে এআইসিসি- র নেতৃত্বের।
ভোটের ফলাফল ঘোষনার পর সাড়া রাজ্যে যখন সন্ত্রাস চলছে,তখন সুদীপ রায় বর্মন মুখে কুলুপ এঁটে রাখেন।তার কর্মী সমর্থকরা গণহারে মার খেলেও তিনি বসে থাকেন ঠান্ডা ঘরে। বাম – কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে তাকে সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। বাম – কংগ্রেসের সাংসদ টিম রাজ্যে এলেও সুদীপের দেখা নেই।ভোটের পর থেকে সুদীপ নিজেকে এক ঘরে করে নেন । তখন থেকে সুদীপের উপর সন্দেহ আরো গাঢ় হয়। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে কংগ্রেস নেতৃত্বের সন্দেহের মধ্যে প্রাথমিক শীলমোহর দিয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
