ডেস্ক রিপোর্টার, ১৫মে।।
হাস্যকর। বিশালগড় সেন্ট্রাল জেল থেকে দাগি অপরাধী স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অসহায় দুই কারা প্রহরীকে শাস্তির যুপ কাষ্ঠে ঠেলে দিয়েছে তারা প্রশাসন। বুধবার দুপুরে দুই কারা প্রহরী মফিজ মিয়া ও তপন রূপিণীকে গ্রেফতার করে বিশালগড় থানার পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কেন্দ্রীয় কারাগারে সুপার তথা মহকুমা শাসক রাকেশ চক্রবর্তী। এদিনই এই ধৃত দুই কারা প্রহরীকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দাগি অপরাধী স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার ষড়যন্ত্রে নাকি তারা জড়িত।জানিয়েছেন বিশলগড় থানার ওসি রানা চ্যাটার্জি।

প্রশ্ন হচ্ছে, স্বর্ণকুমার ত্রিপুরার মত দাগি অপরাধী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে দুইজন কারা প্রহরীকে। অথচ বহাল তবিয়তে আছেন বিশালগড় সেন্ট্রাল জেলের সাব জেলার দেবাশিষ শীল। এই ঘটনার জন্য সাব জেলার দেবাশীষ শীল নিজেও দায়ী। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই সেন্ট্রাল জেলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা চলছে ঢিলেঢালা। জেলে নিয়মিত লকআপ দেখাশুনা হয় না। সাব জেলার দেবাশীষ শীল নিজেই থাকেন না জেলে। তিনি আবার দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমার আশীর্বাদ ধন্য। সেন্ট্রাল জেলে কাজ কর্ম ফেলে দিয়ে সাব জেলার দেবাশিষ শীল দিন ভর খাটেন মন্ত্রী সান্তনা নানা রকম ফরমায়েশ। জেলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায় এই সংক্রান্ত বহু তথ্য।

স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা এর আগেও একবার কেন্দ্রীয় কারাগার ও সাব্রুম সাব জেল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।প্রথমবার ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর। এই সময় বিশালগড় সেন্ট্রাল জেল থেকে কারা রক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে স্বর্ণকুমার পালিয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার পর কারা দপ্তর সেন্ট্রাল জেলের তৎকালীন সুপার সন্তোষ বাহাদুরকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। সঙ্গে ঘটনার সময় জেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কারা রক্ষীকে।দ্বিতীয়বার ২০১৯ সালের জুন মাসে। এই সময় স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা অবস্থান ছিল সাব্রুম সাব জেলে। সেখান থেকে কারা রক্ষীদের বোকা বানিয়ে স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা পালিয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার পর সাব্রুম সাব জেলের জেলার কাজল দেব সহ দায়িত্বপ্রাপ্ত রক্ষীদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলো।

তৃতীয় বার ২০২৪ সালের ১৩ মে। বিশালগড় সেন্ট্রাল জেলের সমস্ত রক্ষীদের চোখে গোলক ধাঁধা লাগিয়ে কারাগার থেকে চম্পট দেয় স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা। কিন্তু এই ঘটনার পর কারা দপ্তর কেন
কেন্দ্রীয় কারাগারের বর্তমান সাব জেলার দেবাশীষ শীলের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। সন্তোষ বাহাদুর ও কাজল দেবকে যে অপরাধের জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, একই অপরাধ করেছেন সাব জেলার দেবাশিষ শীল। কিন্তু কারা দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমার কাছের লোক হওয়ার সুবাদে
দেবাশীষ শীলকে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিনিময়ে বলির পাঁঠা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে দুই কারা প্রহরী মফিজ মিয়া ও তপন রূপিনিকে। অন্তত মহিলা মন্ত্রী সান্তনা চাকমার কাছে এটা আশা করছে না দপ্তরের সাধারণ কারা প্রহরীরা।