
তেলিয়ামুড়া ডেস্ক, ১৫জানুয়ারী।।
মন্ত্রী ঘনিষ্ঠদের আধিপত্য বিস্তারে চরম অব্যবস্থার ছাপ রাখল ঐতিহ্যবাহী ২৫তম চাকমাঘাটের পৌষ মেলা। নিমন্ত্রণ জনিত ত্রুটিতে অনুপস্থিত অনেক অতিথিরা। একেবারেই ফ্লপ সরকারি এই পৌষ মেলা। মেলার চারিদিকে শুধুই জুয়ার রমরমা।
খবর অনুযায়ী, স্মরণকালের মধ্যে চাকমাঘাটের পৌষ সংক্রান্তি মেলা উপলক্ষে তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে এই মেলার বিভিন্ন আয়োজন শুধুই ফ্লপ বলা যায় না, বলা চলে এই মেলাকে কেন্দ্র করে একাধারে নানান দুর্নীতি নিয়েও প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হল নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে পৌষ মেলার উদ্বোধনী পর্বে বেপাত্তা মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা। নিজ বিধানসভা কেন্দ্র হলেও তাৎপর্যপূর্ণভাবে জাতি জনজাতির মেলবন্ধনের এই মহতী কার্যক্রমে উপস্থিত থাকেননি রাজ্যের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা নিজে, যদিও হাতে গোনা কয়েকজন আমন্ত্রিত অতিথি নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত থেকে মন্ত্রী বাহাদুরের জন্য দীর্ঘ প্রায় তিন ঘন্টা অপেক্ষা করার পর অবশেষে কোনভাবে খোয়াই জেলা পরিষদের সভাধিপতি জয়দেব দেববর্মা, মুঙ্গিয়াকামি বিএসি চেয়ারম্যান সুনীল দেববর্মা প্রমুখদের উপস্থিতিতে জৌলুস হিন উদ্বোধন পর্ব সম্পন্ন হয়। জানা গেছে নিজ মহকুমা তথা নিজ বিধানসভা এলাকার এই পৌষ সংক্রান্তি মেলাকে উপেক্ষা করে মন্ত্রী মশাই ডুম্বুরে হাজির হয়েছেন। এদিকে একেবারে ফাঁকা মঞ্চে উদ্বোধন করে সংশ্লিষ্ট মেলার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে জেলা সভাধিপতি জয়দেব দেববর্মা সহ জনাকয়েক বক্তারা বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করলেও মুঙ্গিয়াকামী বিএসি চেয়ারম্যান সুনীল দেববর্মা প্রকাশ্যে এভাবে মন্ত্রী বাহাদুরের অনুপস্থিতিসহ নির্ধারিত সময়ের তিন ঘন্টা পরে মহকুমা ভিত্তিক মেলার উদ্বোধন ঘিরে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদিকে এই মেলায় শুধুমাত্র উদ্বোধন পর্ব ঘিরে বিশৃঙ্খলতা তৈরি হয়েছে ঘটনা তা না।

বিভিন্ন সূত্রের খবর,, এই মেলা’কে ঘিরে কৃষ্ণপুর বিধানসভার মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ একাংশরা রীতিমতো হরির লুটের আসর বসিয়েছেন, শুধু তাই না মেলায় একাংশ নেতৃত্বদের মদতে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার আসরও বসতে দেখা গেছে। তাছাড়াও, চাকমাঘাটে অনুষ্ঠিত হওয়া ঐতিহ্যবাহী এই পৌষ সংক্রান্তি মেলা’কে ঘিরে দুরদুরান্ত থেকে আগত পূরণার্থীদের মধ্যেও চরম ক্ষোভ দেখা যায়। প্রতিবছর দূর-দূরান্ত থেকে আগত পূর্ণ্যার্থীদের বিশ্রাম এবং রাত্রিযাপনের জন্য টিনের ঘর মেলা কমিটির উদ্যোগে নির্মাণ করা হলেও, এবার দুর্নীতির ছয়লাভে মেলা প্রাঙ্গণে শুধুমাত্র গোছের কিছু স্কিন কাপড়ের ঘর ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি। এবছর এই ঘরগুলি তৈরি যে শুধুমাত্র দুর্নীতির হাতিয়ার আর লোকদেখানো, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে। এই কনকনে শীতে রাত্রিযাপনের জন্য এই ঘরগুলো ছিল একেবারেই থাকার অযোগ্য। এমনকি পূরণার্থীদের এই কনকনে শীতে ঘন কুয়াশার থেকে রক্ষা করার জন্য ঘরগুলো তৈরিতে যে কাপড় এবং প্লাস্টিকের আবরণ দেওয়া হয়েছিল সেগুলো ও ছিল ছিদ্রযুক্ত যার ফলে ঘরগুলোর ভেতর কুয়াশার জল পড়ে পূরণার্থীদের রাত্রিযাপনে বিরক্ত করে তুলে। যার ফলস্বরূপ মেলাতে দেখা গিয়েছে দুরদুরান্ত থেকে আগত পূরণার্থীরা মেলাতে পূরণার্থীদের জন্য তৈরি অস্থায়ী ঘরগুলোতে অবস্থান না করে মেলার বিভিন্ন জায়গায় আগুন ধরিয়ে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এবং না ঘুমিয়ে রাত্রিযাপন করে।

চাকমাঘাট পৌষ সংক্রান্তি মেলার মতো একটা ঐতিহ্যবাহী মেলাতে দুরদুরান্ত থেকে আগত পূরণার্থীদের রাত্রিযাপনের জন্য মেলা কমিটির এই ধরনের নিম্নমানের ব্যাবস্থা কে ঘিরে একাংশ পূরণার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং মেলা কমিটির এইরূপ নিম্নমানের ব্যবস্তার জন্য ঐতিহ্যবাহী এই মেলার আকর্ষনে দুরদুরান্ত থেকে যে পরিমাণ পূরণার্থীদের সমাগম ঘটে তা আগামী দিনে হবে কিনা এটাও একাংশ শুভবুদ্ধি সম্পূর্ণ মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে। সব মিলিয়ে বলা চলে ২৫,-তম বর্ষে বিবর্ণ চাকমাঘাট মেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রশাসন তথা রাজ্যের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা গোটা রাজ্য জুড়েই একটা নেতিবাচক বার্তা রেখেছেন।।