ডেস্ক রিপোর্টার, ৩০ডিসেম্বর।।
রাজধানী সহ গোটা রাজ্যে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে নেশা কারবারের চাইরা।এলাকা দখলের জন্য এক গোষ্ঠি অপর গোষ্ঠির লোকজনকে করছে খালাসের পরিকল্পনা।শহরের নেশা বাণিজ্যের অন্দর মহল থেকে উঠে এসেছে এই হাড়হিম করা তথ্য।অথচ নিশ্চিন্তে শীত ঘুমে আচ্ছন্ন রাজধানীর পুলিশ-গোয়েন্দা।
রাজধানীর পোস্ট অফিস চৌমুহনী ও বটতলা ফাঁড়ির মাঝখানেই গান্ধীঘাট।পোস্ট অফিস চৌমুহনীকে “পুলিশ হাব” বললেই চলে।এখানে পশ্চিম থানা, পশ্চিম মহিলা থানা ও সদর এসডিপিও অফিস। একদিকে ‘পুলিশ হাব’ অন্য দিকে বটতলা ফাঁড়ি। নিরাপত্তার এই ঘেরা টোপের মধ্যেই গান্ধীঘাটের এক নেশা কারবারীকে হত্যার ছক কষেছে তার প্রতিপক্ষ গোষ্ঠি।শহরের মাদক কারবারের অলিন্দে কান পাতলেই শুনা যায় এই খবর।কিন্তু অচৈতন্য স্মার্ট সিটির “আন স্মার্ট পুলিশ”।
রাজধানীর মাদক কারবারের অতুর ঘরের খবর, গান্ধীঘাট এলাকার নেশা কারবারী সুমন দেব।তার বড় নেটওয়ার্ক রয়েছে।রাজ্যের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুধীর রঞ্জন মজুমদারের বাড়ির আশপাশের একটি গাড়ির গ্যারেজে তার ঠেক।এখানে বসেই সুমন তার নেশা কারবারের নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে থাকে।পাইকারি ও খুচরো নেশা সামগ্রী বিক্রি করে সুমন।
সুমন দেবের প্রতিপক্ষ গোষ্ঠি রয়েছে।এই গোষ্ঠীর নেতা সঞ্জু দাস।তার বাড়ি শহরের ঝুলন্ত ব্রিজ লাগোয়া সুরেন্দ্র পল্লী এলাকায়।ঝুলন্ত ব্রিজের রাস্তা ধরে সুরেন্দ্র পল্লীর দিকের সাত নম্বর বাড়ি সঞ্জু দাসের। তার বাড়ি ত্রিতল। খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি গান্ধীঘাটের সুমন সুরেন্দ্র পল্লীর সঞ্জু দাসের একটি ফেন্সিডিলের বড় চালান পুলিশকে দিয়ে ধরিয়ে দেয়।এরপর শুরু হয় সংঘাত।এই ঘটনার পর সঞ্জু দাস তার প্রতিপক্ষ সুমনকে জানিয়ে দেয় গান্ধীঘাট এলাকায় সেও ব্যবসা করবে। এরপর দুইজনের মধ্যে ঝামেলা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ।কিন্তু সঞ্জু কোনো ভাবেই সুমনের আড়তে দখল নিতে পারেনি।
রাজধানীর মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত লোকজনের বক্তব্য অনুযায়ী, সঞ্জু গান্ধীঘাট দখল নিয়ে না পারায় সুমনকে কুতলের ছক কষে। সঞ্জু দাস চলে যায় বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে।সেখান থেকে তিন জন সুপারি কিলারকে নিয়ে আসে আগরতলায়। তিন সুপারি কিলার নিজামউদ্দিন, শাহরিয়া খান ও হাবিবুল রহমানকে তার বাড়িতে রাখে সঞ্জু।বাংলাদেশের অপরাধ জগতে তিনজনই শুটার হিসাবে পরিচিত। ১৫লক্ষ টাকার টাকার বিনিময়ে সঞ্জু বিদেশি সুপারি কিলারদের নিয়ে আসে আগরতলায়। গত ১২ ডিসেম্বর, ১৫ ডিসেম্বর ও ২৫ ডিসেম্বর সঞ্জুর সুপারি কিলাররা সুমনকে টার্গেট করেছিলো খালাস করার জন্য।কিন্তু কোনো বারেই তারা টার্গেট মিলাতে পারেনি।কারণ প্রতিদিন সঞ্জুর গ্রুপ থেকেই সুমনের কাছে আগাম খবর পৌঁছে যেত।এবং সুমন চলে যেত সেভ জোনে। শেষ পর্যন্ত সঞ্জু তার সুপারি কিলারদের গত ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়।
শহরের নেশা কারবারের গর্ভ গৃহে কান পাতলেই শুনা যায়,বসে নেই সুমনও।এবার সঞ্জুকে পৃথিবী থেকে বিদায়ের জন্য ছক কষেছে সুমন।সেও বিহার থেকে সুপারি কিলার আনার পরিকল্পনা নিয়েছে।।আলোচনাও প্রায় শেষ পর্যায়ে।নতুন বছরের গোড়াতেই সুমনের সুপারি কিলাররা আসবে আগরতলায়।তারা টার্গেট করবে সঞ্জু দাসকে।
রাজধানীতে নেশা কারবার কেন্দ্র করে এতো কিছু চললেও ঘুমে আচ্ছন্ন পুলিশ-গোয়েন্দা।পুলিশ দ্রুত কোমর বেঁধে না নামলে যে কোনো সময় ঝরবে তাজা রক্ত।প্রসঙ্গত ২০১৩-সালে আগরতলা পুর নিগমের নিগোসিয়েশন নিয়ে দুই গোষ্ঠির ঝামেলার আগাম খবর দিয়েছিল সংবাদ মাধ্যম।কিন্তু পুলিশ খবরের কোনো গুরুত্ব দেয় নি।আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই শহরের দুর্গা চৌমুহনীতে আততায়ীরা সন্ধ্যা রাতে গুলি করে খুন করেছিলো নিগোসিয়েশন কারবারী দিলীপ ঘোষকে।এবারও যদি তার পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।তারজন্য অবশ্যই দায় এড়াতে পারবে না রাজধানীর “পুলিশ হাবে’র” পুলিশ।
