ডেস্ক রিপোর্টার,২৩ ফেব্রুয়ারি।।
বিপ্লব কুমার দেব । রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বর্তমান রাজ্য সভার সাংসদ।২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রদেশ বিজেপির মুখ ছিলেন বিপ্লব কুমার দেব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফ্লেবার ও বিপ্লব দেবের ফ্রেশ মুখকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। সঙ্গে অবশ্যই ভোটারদের মনে ছিলো তীব্র বাম বিদ্বেষ। প্রত্যাশা অনুযায়ী বিপ্লব কুমার দেবকে বসানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে।
বিপ্লব কুমার দেবের সময় কালের মধ্যে দুই বছর কেটে যায় মহামারী করোনার প্রকোপের মধ্যে।বাদবাকি সময় কাজ করার সুযোগ পান তিনি।
২০২২- র মে মাসে আচমকা বিপ্লব কুমার দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।তার স্থলাভিষিক্ত হন ডা: মানিক সাহা।
রাজনীতিকরা বলছেন, বিজেপির সর্ব ভারতীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত রাজ্য রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। বিপ্লব কুমার দেব মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর পরই বিরোধীরা বিজেপিকে আক্রমণের মুক্ত মঞ্চ পেয়ে যায়। বিরোধী সহ বিজেপির কর্মী সমর্থক ও সাধারন মানুষ জানতে চেয়েছিল বিপ্লব কুমার দেবকে কেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হলো? কিন্তু আজও এই প্রশ্নের উত্তর দেয় নি বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
বিজেপির অন্দর মহল থেকে গুঞ্জন উঠেছিলো আর্থির দুর্নীতির জন্য বিপ্লব কুমার দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছে ।কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় আজ পর্যন্ত বিপ্লব কুমার দেবের আর্থিক দুর্নীতির কোনো প্রমাণ সামনে আনতে পারে নি নিন্দুকরা।
বিপ্লব কুমার দেবকে কেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর আজও অধরা। যে কারণেই বিপ্লব কুমার দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করা হোক না কেন?তাতে কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই প্রবল ক্ষতি হয়েছে বিজেপির।দলের নেতা – কর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্ত। মাথা চাড়া দিয়েছে লবিবাজি। ক্ষুন্ন হয়েছে বিপ্লব অনুগামীরা। রাজনীতিকদের দাবি, বিজেপির কর্মী সমর্থকদের একটা বড় অংশের মধ্যে বিপ্লব কুমার দেবের জনপ্রিয়তা ছিলো। এই সমস্ত জায়গাগুলোতে বিজেপির ঘরোয়া রাজনীতিতে ধাক্কা লাগে। তার চেয়ে বড় বিষয় প্রবল বিক্রমে মাথা চাড়া দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায় বিরোধীরা। কংগ্রেস – সিপিআইএম ও তৃণমূল বিপ্লব ইস্যুতে বিজেপিকে বারবার হেমারিং করতে সক্ষম হয়েছে।তাতে অব্যশই বিজেপির সমস্যা বেড়েছে দিনদিন।
বিপ্লব কুমার দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ফের তাকে পাঠানো হয় রাজ্য সভায়।তখন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা আরো ধন্দে পড়ে যায়।একই অবস্থা সধারণ মানুষের।
কোন অপরাধে বিপ্লবকে নামানো
হলো মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে?আবার কোন ভালো কাজের জন্য । তাকে পাঠানো হলো রাজ্য সভায়?
কেন তাকে বসানো হলো দেশের
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গুরুত্ব পূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটিতে?
বিজেপির কর্মী,সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রশ্ন বারবার চাগার দিচ্ছে। কিন্তু উত্তর কেউ আজ পর্যন্ত খুঁজে পায় নি। বিপ্লব কুমার দেবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ কেন্দ্র করে বিরোধীরা রাজনৈতিক মঞ্চে অতিরিক্ত অক্সিজেন পেয়ে যায়। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বিরোধীদের জন্য হয়ে উঠে আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ। তার প্রভাব পরিলক্ষিত হয় ২৩- র রণভূমিতেও। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা চেষ্টা করেছেন ড্যামেজ কন্ট্রোল করার জন্য। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না।কারণ হাতে সময় ছিলো খুব কম। তাই এখন বিজেপিকে পুনরায় সরকার গড়তে চেয়ে থাকতে হচ্ছে প্রদ্যুতের মুখাবয়বের দিকে।