
ডেস্ক রিপোর্টার,৪মার্চ।।
২৩- র ভোট শেষ হয়েছিল নির্বিঘ্নে। কিন্তু গণনা শেষ হতেই সারা রাজ্যে সন্ত্রাস পেয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সন্ত্রাস। ধর্মনগর থেকে সাব্রুম সব জায়গাতেই সন্ত্রাসের জাল বিস্তার করা হয়েছে। এতো দিন সন্ত্রাস নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ ছিলো বিজেপির দিকে।কিন্তু এখন বিরোধীদের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাস নিয়ে অভিযোগ তুলছে বিজেপি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে ১৪৪ধারা। গোটা রাজ্যেই অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতি বার ভোট গণনার পর পরই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল জোলাইবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্র। তিপ্রামথার কর্মীরা এসডিএম অফিসে হামলা চালায়। প্রকাশ্যে মোটর বাইক, গাড়িতে ভাঙচুর করে।এবং যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। জোলাইবাড়ির রেশ কাটতে না কাটতেই তেলিয়ামুড়া চাকমাঘাটেও হামলা সংঘটিত করেছিলো রাজনৈতিক দুষ্কৃতীরা। করা হয়েছিল বোমা বিস্ফোরণ। এরপর থেকে সারা রাজ্যেই শুরু হয়ে যায় সন্ত্রাস।পাহাড়ের বিভিন্ন অঞ্চলে এক চেটিয়া সন্ত্রাস শুরু করেছে তিপ্রামথা। অভিযোগ শাসক দল বিজেপির। পাল্টা অভিযোগ তিপ্রামথার। মথার নেতৃত্বের দাবি, বিজেপির কর্মীরা তাদের বিভিন্ন জায়গার পার্টি অফিস গুলিতে হামলা করছে। একই ভাবে শাসক দল বিজেপি সন্ত্রাস নিয়ে বামগ্রেসের দিকেও অভিযোগ তুলছে। বিজেপির বক্তব্য, বিভিন্ন জায়গাতে কংগ্রেস- সিপিআইএমের লোকজন যৌথ ভাবে হামলা করছে বিজেপির লোকজনের উপর। আবার বাম কংগ্রেস জোটও পাল্টা অভিযোগের তির ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপির দিকে।

শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা:মানিক সাহা ছুটে যান জিবি হাসপতালে। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আক্রান্ত দলীয় কর্মী সমর্থকদের চিকিৎসার খোজ খবর নেন। কথা বলেন আক্রান্ত কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে। এদিনও মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাবে জনিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাস কোনো ভাবেই কাম্য নয়। সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য তিনি বিরোধী কর্মী সমর্থকদের সংযত থাকার বার্তা দেন।অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।রাজ্যে সন্ত্রাস ইস্যু নিয়ে পুলিশকে আরো সতর্ক থেকে শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেছেন রাজ্যের পুলিশ মহানির্দেশকের সঙ্গে। এদিন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বও জিবি হাসপাতালে যান।তারাও আহত দলীয় কর্মীদের খোজ খবর নেন।কথা বলেন আহতদের সঙ্গে।

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, গণনার পর থেকেই চড়িলাম বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গাতে ধারাবাহিক ভাবে হামলা শুরু হয়েছে। অভিযোগ তিপ্রামথার লোকজন বিজেপির কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা সংঘটিত করছে। অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে।স্থানীয় আড়ালিয়া এলাকায় তিপ্রা মথার দুষ্কৃতীরা বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে নির্বিচারে হামলা চালায়। মানুষ ভয়ে বাড়িঘর থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেয় জঙ্গলে। পরে পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। একই পরিস্থিতি কমলপুর, বিশ্রামগঞ্জ, সোনামুড়া সহ বিভিন্ন অঞ্চলে।

বিরোধী দলের নেতা – কর্মীরাও বারবার সন্ত্রাস বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে আসছে। পুলিশকে আরোও সতর্ক থেকে কাজ করার অর্জি জানিয়েছে।

সব মিলিয়ে রাজ্যের নানান জায়গাতেই সন্ত্রাসের নিটোল জাল বিস্তার করেছে। রাজ্যের সমস্ত অংশের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সম্মিলিত ভাবে রাস্তায় নামলেই সমস্ত দলের রাজনৈতিক সন্ত্রাসীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।