
ডেস্ক রিপোর্টার, ৩০জুন
আচমকা সুবল ভৌমিকের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর আগমন।তার আগে দেওধরের দরবারে
সুবল ভৌমিকের গমন।মুখ্যমন্ত্রী – দেওধর ও সুবলের
নতুন রাজনৈতিক রসায়ন।কিসের ইঙ্গিত করছে সংশ্লিষ্ট খন্ড চিত্র? উত্তরের দৃষ্টি কোন বহু।
সুবল ভৌমিক রাজ্য রাজনীতির ডাক সাইটের নেতা। এখন সুবলের একক রাজনৈতিক জৌলুস অনেকটাই ফিকে। তবে তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ভান্ডার অনেক গভীর।তার রাজনৈতিক লড়াইয়ের ইতিহাসও উজ্জ্বল।এটা নিঃসন্দেহে স্বীকার করে রাজ্যের মানুষ।

একজন কট্টর বাম বিরোধী নেতা হিসাবে এখনো সুনাম আছে সুবল ভৌমিকের।একই ভাবে দুর্নামের বহরও কম নয়। রাজ্য রাজনীতিতে “দল বদলু” নেতাদের নামের তালিকায় সুবল ভৌমিকের নাম প্রথম সারিতেই।

এতো কিছুর পর রাজ্য রাজনীতির ভারী নামগুলোর একটি সুবল ভৌমিক। দীর্ঘ বাম জামানায় সুবল ছিলেন কট্টর বাম বিরোধী নেতা।তখন সুবলের রাজনৈতিক জীবন ছিলো সাফল্যের মধ্য গগনে। তিনি কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে।২০১৮ সালে বামেদের ক্ষমতাচ্যুত করে মসনদে বসে ছিল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের এই সাফল্যের পেছনে নরেন্দ্র মোদী ব্যতীত নাম উঠে আসে বিপ্লব কুমার দেব ও সুনীল দেওধরের নাম।
বাস্তবে ১৮- র নির্বাচনে রাজ্য বিজেপির সারথি ছিলেন সুবল ভৌমিক। সুবলকে দিয়েই বিজেপি নেতৃত্ব পথ- ঘাট চিনেছিলেন। এবং সুবলের মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে বাম বধের রন কৌশল তৈরি করেছিলো বিজেপি।

বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে দ্বৈরথ শুরু হয় সুবল ভৌমিকের। সঙ্গে সুনীল দেওধরেও। তবে সুবল – দেওধরের রাজনৈতিক ক্যামেস্ট্রি ছিলো মজবুত। সুবল আচমকা চলে যান রাজনৈতিক অন্তর্ধানে। দেওধর চলে যান রাজ্য ছেড়ে। এরপর ইতিহাস। চার বছর শাসন করেন বিপ্লব দেব।এই সময়ে সুবল ধর্য্য হারিয়ে বিজেপি ছেড়ে চলে যান তৃনমূল কংগ্রেসে।লড়াই করে টিকিয়ে রাখেন নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব।

সুবল ভৌমিকের নেতৃত্বে ২১- র পুর ও নগর ভোটে ২৩ শতাংশ ভোট দখল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর অবশ্যই উপ নির্বাচনেও তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুবল। তবে উপভোটে তৃণমূলকে সাফল্য এনে দিতে পারেননি। আর তাতেই মমতার শাস্তির যুপকাষ্ঠে পড়েন তিনি।মমতা তাকে নামিয়ে দেন প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে।
১৮- র নির্বাচনের প্রাক লগ্নে সুবল ভৌমিক ফের যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এখন বিজেপিতে চলছে মানিকরাজ। মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহার সঙ্গে সুবলের সম্পর্কও ভালো। সুবল ভৌমিকের রাজনৈতিক লড়াই সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মুখ্যমন্ত্রী।

সুবল একজন সুদক্ষ ও পরিশ্রমী নেতা। রাজনৈতিক মহল্লায় তার এই সুনাম রয়েছে।এদিকে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহার সঙ্গে সুনীল দেওধরের সম্পর্কও অনেক গভীরে প্রোথিত। সুবল – দেওধরের সম্পর্ক বরাবর মধুর।সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী – সুনীল দেওধর ও সুবল ভৌমিকের রাজনৈতিক রাজনৈতিক কেমেস্ট্রি এখন তুঙ্গে।বকলমে এরা সবাই বিপ্লব বিরোধী।সম্প্রতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সরব হয়েছিলেন প্রদেশ বিজেপিতে বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ নিয়ে।রাজনীতিকরা বলছেন, বিপ্লব কুমার দেবের বহিরাগত ও অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তিটি আসলে সুনীল দেওধর।ধীরে ধীরে মিলছে তার প্রমাণও।

বিজেপিতে গুঞ্জন, এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী ও সুনীল দেওধর চাইছেন এগিয়ে আসুক সুবল। এবং সুবল নিজেও তাই চাইছেন। স্বাভাবিক ভাবেই আগামী দিনে সুবল ভৌমিকের রাজনৈতিক জীবনে ফের সুদিন ফেরার অপেক্ষা।গেরুয়া বাড়ির তথ্য বলছে, প্রদেশ বিজেপির সভাপতি, লোকসভার পশ্চিম আসন ও ধনপুর কেন্দ্র,যে কোনো একটিতে সুবল ভৌমিকে নতুন রূপে দেখতে পাবে রাজ্যের মানুষ।