ছামনু ডেস্ক,২১ফেব্রুয়ারি।।
” মানিকপুর এক সময় সন্ত্রাস কবলিত এলাকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলো। সেই মানিকপুরে এখন বহুমুখী উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। সমস্ত সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে সকল স্তরের নাগরিকদের সার্বিক কল্যাণে শহর থেকে প্রান্তিক এলাকা পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়িত হচ্ছে।” সোমবার ধলাই জেলার মানিকপুরে মনু নদীর উপর পাকা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
মানিকপুর বাজার মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মানিকপুর ও দেবাছড়ার মধ্যে সংযোগস্থাপনকারী এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরের পাশাপাশি ছৈলেংটা থেকে ছামনু পর্যন্ত আরও ৩টি পাকা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পাকা সেতুগুলি ছৈলেংটা থেকে ছামনুর মধ্যবর্তী দুর্গাছড়া, গুরুচরণছড়া ও হেজাছড়ায় নির্মিত হয়েছে। মানিকপুর ও দেবাছড়ার মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম বাঁশের সাঁকোটি পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে বিগত দিনে তাদের এই সাঁকো পথে চলাচলের সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হন। দীর্ঘদিনের স্থানীয়দের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে এই পাকা ব্রিজ নির্মাণে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্থানীয় জনগণ। উল্লেখ্য, এই পাকা সেতু নির্মাণে ব্যয় ধার্য করা হয়েছে ৫০০.৩৩ লক্ষ ও ছৈলেংটা থেকে ছামনু পর্যন্ত আরও ৩টি পাকা সেতুর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০০৩৬৮ লক্ষ টাকা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিনের অবহেলিত ও উপেক্ষিত মানিকপুরের সার্বিক বিকাশে গুচ্ছ পরিকল্পনা রূপায়িত হচ্ছে। সমস্ত সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে উন্নয়নের সমবিকেন্দ্রীকরণ ও স্বচ্ছতার সাথে নাগরিক পরিষেবা প্রদানে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছে বিজেপি সরকার। পাকা ব্রিজগুলি এই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের পাশাপাশি উন্নয়নের একটি শ্রেষ্ঠ অঞ্চল হিসেবে উঠে আসবে। এরফলে এখন আর প্রায় ১২ কিলোমিটার ঘুর পথে মানুষকে আসতে হবে না। একলব্য বিদ্যালয়, উন্নত সড়ক, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, পরিশ্রুত পানীয়জলের ব্যবস্থা গুচ্ছ পরিকল্পনা রূপায়িত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনে অপরিকল্পিত উন্নয়নের সফল বাস্তবায়নের অভাবে ভুগতে হয়েছে এই অঞ্চলের মানুষকে। বর্তমান সরকার রাজ্যের প্রান্তিক অঞ্চলেও উন্নয়ন কর্মসূচি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রূপায়ণ করছে।
বিগত দিনে রাজ্যে বেড়ে উঠা নেশা বাণিজ্যে লাগাম টানতে আপোষহীনভাবে কাজ করছে রাজ্য সরকার। নেশা বাণিজ্যের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে মহিলাদের আরও সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর বণ্টন, চাকরিতে নিয়োগ থেকে শুরু করে সমস্ত পরিষেবা কটনে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে স্বচ্ছতাই সরকারের অন্যতম প্রাধান্যের ক্ষেত্র।
-অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাংসদ রেবর্তী ত্রিপুরা বলেন, বিগত দিনে উন্নয়নের প্রশ্নে উপেক্ষিত বিভিন্ন অঞ্চলকে সার্বিক বিকাশের মূল স্রোতে সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যে ধলাই জেলার অন্তর্গত বেশ কয়েকটি ব্লককে চিহ্নিত করে প্রাধান্যের ভিত্তিতে সার্বিক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন চলছে। রাজ্য সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা গুচ্ছই এর অন্যতম পরিচায়ক। বিগত দিনে সন্ত্রাসবাদ, অসম উন্নয়ন সহ একাধিক কারণে এই অঞ্চলে কোনও কর্মচারিকে বদলি করা হলে তা শাস্তিমূলক হিসেবেই বিবেচিত হতো। কিন্তু বর্তমানে সার্বিক বিকাশ ধারায় বদলে যাচ্ছে এই অঞ্চলগুলির চেহারা। যার ফলশ্রুতিতে কর্মচারিরাও এখানে কাজে যোগ দিতে উৎসাহী হচ্ছেন। রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলিও সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমস্ত অংশের মানুষ এর সুফল পাচ্ছেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমা, এমডিসি হংসকুমার ত্রিপুরা, ধলাই জেলার জেলাশাসক গোভেকর ময়ূর রতিলাল প্রমুখ।
