
ডেস্ক রিপোর্টার,৩ ফেব্রুয়ারি।।
খাকি উর্দি পড়ে পুলিশ কর্মীরা নানান সময়ে নাগরিকদের সঙ্গে গুন্ডাগিরি করে থাকেন। বিনা দোষে মানুষকে করে হেনস্থা। এবং নিজেরাই জড়িয়ে যান নানান অপরাধের সঙ্গে। তাহলে পুলিশের বিচার করবে কে? পুলিশ কর্মীদের বিচারের জন্য আছে “পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশন”। তারাই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিচার করে থাকেন। পৃথক তদন্ত করে রিপোর্ট জমা করে আরক্ষা দপ্তরে।এরপর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি ঘোষণা করা হয়।এটাই নিয়ম। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্যের “পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশন” একেবারেই মেরুদণ্ডহীন। কস্মিন কালেও পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশন কোনো পুলিশ কর্মীকে শাস্তির যুপ কাষ্ঠে ঠেলে দিয়ে পারেনি। কালে কালেই এই চিত্র দেখা গিয়েছে পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশনে।

তথ্য অনুযায়ী, শেষ তিন বছরে পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশনে ৩৮ জন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। নেশা কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ থেকে শুরু করে নারী সংক্রান্ত বিষয়। তোলা আদায় থেকে শুরু করে বিনা দোষে নাগরিকদের হেনস্থা। কিন্তু একটি অভিযোগের ভিতিত্তেও অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির যুপ কাষ্ঠে নিয়ে যেতে পারেনি পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশন। এই কারণেই পুলিশ কর্মীদের সিনা ফুলে এখন ১৪ ইঞ্চি হয়ে গিয়েছে।তারা জানে অপরাধ করলেও তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না কেউ। পুলিশ দায় বদ্ধতা কমিশন তাদের কাছে মলিন কলাপাতার মতো।

স্বাভাবিক কারণেই পুলিশ কর্মীদের অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলেও তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ থাকে না। তারা ভালো করেই জানেন “অপরাধ” ক্ষমার যোগ্য। পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশনের নগ্ন চিত্র নতুন নয়। বাম জামানাতেও এটা ছিলো শুধু সাইনবোর্ড সর্বস্ব। রাম আমলেও একই অবস্থা। শুধুমাত্র এই সংস্থায় থাকা লোকজন মোটা অংকের বেতন হাতে পেয়ে সরকারী গাড়ি চড়ে একটা বিলাস বহুল জীবন যাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেন। এটুকুই তাদের কাজ।

সম্প্রতি আমতলীর এসডিপিও প্রসূন কান্তি ত্রিপুরার নামেও নির্যাতিত চিকিৎসক কৌশিক দেবনাথের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশ একাউন্টটিবিলিটি কমিশনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রসূন কান্তি ত্রিপুরাকে ডাকার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে নি কমিশন। অবশ্যই তারা নিজেদের মতো করে ঘটনা খতিয়ে দেখছে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ একাউন্টটিবিলিটি কমিশন প্রসূন ত্রিপুরার বিরুদ্ধে কতটা গর্জন করতে পারবে? তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অন্যান্য ঘটনার মতোই কমিশন প্রসূনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না। কারণ শেষ তিন বছরে ৩৮ জন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ জমা পড়েছে। কিন্তু কোনো ঘটনাতেই কমিশন তাদের মেরুদন্ড সোজা করে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নি। প্রসূনের ক্ষেত্রেও জল গড়াবে একই দিকে।তাহলে প্রশ্ন উঠছে, প্রতি মাসে এতো টাকা খরচ করে পুলিশ একাউন্টটিবিলিটি কমিশনের লোকজনকে লালন পালন কেন? খোদ পুলিশ কর্মীদের কাছেই কমিশন গুরুত্বহীন। তারা বিন্দু মাত্রও কমিশনে জমা পড়া অভিযোগ নিয়ে ভাবিত হন না।তাহলে কি সবটাই লোক দেখানো? নাকি অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য বসে আছে গর্বের “পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশন”? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে নাগরিকদের মনে।