ডেস্ক রিপোর্টার,১৭ মার্চ।।
        তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর রাজ্যের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। তার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রদ্যুতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা দুইটি পোস্ট থেকে।২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে করা দুইটি পোস্টের মধ্যে প্রদ্যুৎ প্রমাণ করলেন তিনি কত বড় খেলোয়াড়।এবং প্রদ্যুৎ নিজেই প্রমাণ দিলেন তিনি মস্ত বড় একজন প্রতারক। তাকে বিশ্বাস ঘাতক বললেও কোন অংশে ভুল হবে না। প্রদ্যুৎকে কেন প্রতারক ও বিশ্বাস ঘাতক বলা হয়েছে, “জনতার মশাল”র এই প্রতিবেদনে তার চুল চেরা বিশ্লেষণ করা হবে।

“I also urge the Tipra Motha warriors to also stand up and give protection to the Minorities who are vulnerable today! “

তিপ্রামথার সুপ্রিমো তথা বুবাগ্রা প্রদ্যুৎ কিশোর গত ৪মার্চ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছিলেন।সেই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন,

তার মানে, “প্রদ্যুৎ কিশোর তিপ্রামথার যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যেন রাজ্যের সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ায়।এবং  সুরক্ষা দেয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে। কারণ আজকের দিনে রাজ্যের সংখ্যালঘুরা দুর্বল বলেও দাবি করেন প্রদ্যুৎ কিশোর।”

গত ৪ঠা মার্চে প্রদ্যুতের পোষ্ট

গত চার মার্চের করা পোস্টের ২৪ ঘন্টা ব্যবধানে প্রদ্যুৎ আরো একটি পোস্ট করেন। অর্থাৎ প্রদ্যুৎ তার পরের পোস্ট করেছিলেন গত পাঁচ মার্চ।
        প্রদ্যুৎ গত ৫ মার্চের পোস্টে কি লিখেছিলেন?
প্রদ্যুৎ কিশোর তার এই পোস্টে লিখেছেন,
“Majority of the tiprasa voted for Motha !
Majority of the Muslims voted for CPIM and Majority of the general areas voted for BJP.”

     এই বক্তব্যের বঙ্গানুবাদ অনুযায়ী, প্রদ্যুৎ  বলেছেন, ” সিংহভাগ তিপ্রাসা ভোট দিয়েছে মথাকে।
বড় অংশের মুসলিমরা ভোট দিয়েছে সিপিআইএমকে। এবং সাধারণ এলাকার অধিকাংশ মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে।”

  গত চার মার্চ প্রদ্যুৎ কিশোর তিপ্রামথার যোদ্ধাদের বলেছিলেন, রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মানুষ আজকের দিনে দুর্বল।তাদেরকে রক্ষা করতে হবে। প্রদ্যুৎ কিশোরের একথা প্রমাণ করে ২৩- র নির্বাচনে সংখ্যালঘুরা প্রদ্যুৎ কিশোরের দল তিপ্রা মথাকে ভোট দিয়েছে।এই কারণেই সংখ্যালঘুদের প্রতি তার এই মায়া কান্না। প্রদ্যুৎ কিশোরের প্রতিটি সভাতে বাঙালি মুখের বড় অংশ ছিলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। সংখ্যালঘুদের প্রদ্যুৎ নির্বাচনে প্রার্থীও করেছেন। প্রদ্যুৎ কিশোরের দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও। তাতে অবশ্যই আপত্তির কিছু নেই। কোনো সম্প্রদায় কোন রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবে এটা তাদের নিজস্ব বিষয়।

গত ৫মার্চে প্রদ্যুৎ কিশোরের ফেসবুক পোস্ট।

রাজ্যের সংখ্যালঘুদের নিয়ে  অরণ্য রোদনের একদিন পর প্রদ্যুৎ তার ছলম পাল্টে নেন।মুহূর্তেই দূরে সরিয়ে দেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে। প্রদ্যুৎ পরিষ্কার বলে দেন, সংখ্যালঘুদের বড় অংশ ভোট দিয়েছে সিপিআইএমকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সংখ্যালঘুদের সম্প্রদায়ের ভালো অংশের মানুষ ভোট দিয়েছে তিপ্রামথাকে। হিন্দু বাঙালিদের ভোটও মথাতে পড়েছে।এই কারণেই প্রদ্যুৎ কিশোরের দল তিপ্রামথার পক্ষে গিয়েছিল ১৩টি আসন। বরং পাহাড়ে ঝুলি খালি হয়ে যায় সিপিআইএমের। বিজেপি – আইপিএফটি জোট পেয়েছে মাত্র ৭টি আসন।

  রাজ্যে শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কথায়, দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি প্রদ্যুৎ কিশোর জনজাতি ব্যতীত অন্য কোনো সম্প্রদায়ের মানুষজনকে আপন করে নিতে পারেন নি। বিশেষ ভাবে বাঙালি সম্প্রদায়ের মানুষকে।ভোটের আগে সংখ্যালঘু কাছে টেনে নিয়ে সংগ্রহ করেছে ভোট। ভোটের পর তাদের ছুঁড়ে ফেলে দিলো। এবং তাদের পেছনে লাগিয়ে দিলেন কমিউনিস্ট তকমা।
  রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, নির্বাচনের আগে প্রদ্যুৎ কৌশলে হিন্দু – মুসলিমের নাম করে বাঙালি ভোটের মেরুকরণ করেছিলেন। ভোট শেষ হতেই স্ব – মহিমায় ফিরে এসেছেন তিনি। তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোরের এই কুট চাল অবশ্যই বুঝতে হবে এই রাজ্যের হিন্দু – মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকে। অন্যথায় বাড়বে বিড়ম্বনা।
    রাজনৈতিক প্রাজ্ঞরা বলছেন, প্রদ্যুৎ কিশোরের দল তিপ্রামথা অনুপজাতি অংশের মানুষের ভোট পেয়েছে।কিন্তু ভোটের পর অনুপজাতি অংশের মানুষের স্বার্থ সম্বলিত কোনো বিষয় নিয়ে প্রদ্যুৎ কিন্তু টু – শব্দও করেন নি। বরং জনজাতি স্বার্থ নিয়ে সুর ছড়াচ্ছেন বুবাগ্রা। বকলমে প্রদ্যুৎ কিশোর রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাস ঘাতকতা দুইটাই করেছেন, এটা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছেন সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজনও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *