ডেস্ক রিপোর্টার,২৭ ডিসেম্বর।।
‘মর্গে’র মতো সংবেদনশীল রুমের নেই দরজা-জানালা।প্রায় উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে মর্গে আসা মৃতদেহ গুলি। রাতের আঁধারে কুকুর-শেয়াল খুবলে দেয় লাশ। জন্তু-জানোয়াররা কখনো লাশ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসে ভগ্নদশা গ্রস্থ মর্গের বাইরে। সূর্য উদয় হতেই আশপাশের মানুষকে পরখ করতে হয়ে কুকুর-শেয়ালের খুবলে দেওয়া ক্ষত-বিক্ষত লাশ।এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ। এ যেন এক অদ্ভুদ স্বাস্থ্য বিপ্লব! এই দৃশ্য দেখা যায় সাব্রুম মহকুমা হাসপাতাল মর্গে। স্থানীয়রা চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ তুলছে সাব্রুম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
সাব্রুম নগর পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝ বরাবর আনন্দ পাড়া।পাশেই মৈত্রী সেতু যাওয়ার রাস্তা। এখানেই সাব্রুম মহকুমা হাসপাতালের “মর্গ”। এই মর্গে করা হয় মৃতদেহের ময়নাতদন্ত। স্বাভাবিক ভাবেই সাব্রুম হাসপাতালে মৃত রোগীদের(অস্বাভাবিক মৃত্যু) লাশ নিয়ে আসা হয় আনন্দপাড়া লাগোয়া মর্গে।
সাব্রুম নগর পঞ্চায়েতের “শবযান” চালক মানিক দাসের বক্তব্য, ” মর্গের অবস্থা ভালো নয়।মর্গের দরজা নেই।জানালা ভাঙা। সিলিং ভেঙে পড়ে আছে মেঝেতে।” চোখে-মুখে এক রাশ
আতঙ্ক নিয়ে “শবযান” চালক মানিক জানিয়েছেন, রাতের আঁধারে লাশ ঘরে প্রবেশ করে কুকুর-শেয়াল। তার ব্যাখ্যা, মৃতদেহ গুছিয়ে রেখে গেলেও,সকালে দেখা যায়,মৃতদেহটি উপর-নিচ হয়ে আছে।কখনো লাশ মুড়িয়ে রাখা পলিথিন ছেড়া অবস্থায় পাওয়া যায়। খুবলে থাকে লাশের বিভিন্ন অংশ।কেন এমন হয়? প্রশ্নের সটান জবাব শবযান চালকের। তার কথায়, ভগ্নদশার কারণে জন্তু-জানোয়াররা মর্গে প্রবেশ করে লাশ খুবলে দেয়।কখনো লাশ বের করে মর্গের বাইরে নিয়ে যায়।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, মর্গের সামনেই ঘনবসতি এলাকা।প্রতিদিন পাশের রাস্তা দিয়ে শত শত চলাফেরা করে। এই রাস্তা ধরে স্কুলে যায় পড়ুয়ারা।প্রায়শই তাদের শুঁকতে হয় পচা লাশের দুর্গন্ধ।নাকে চাপা দিতে হয় রুমাল।তারপরও হেলদোল নেই সাব্রুম মহকুমা হাসপাতালের।এই সমস্যার কথা জানানো হয়েছে নগর পঞ্চায়েতকে।কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
গত কয়েক মাস আগে সাব্রুম মহকুমা নব নির্মিত হাসপাতাল উদ্বোধন হয়েছে।এই হাসপাতালের সঙ্গেই রয়েছে হাসপাতালে নতুন মর্গ।কিন্তু নতুন মর্গে লাশ রাখেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দা গোপী হাজারের অভিযোগ,অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হওয়া লাশ নতুন মর্গে ময়নাতদন্ত না করে জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকা পুরানো মর্গে পাঠিয়ে দেয় হাসপাতালের কর্তব্যরত স্বাস্থ্য কর্মীরা। হাসপাতালের পুরানো মর্গে রাখা অজ্ঞাত মৃতদেহগুলি কখনো কখনো তিন চার ধরেই পড়ে থাকে। তাতেও কাউর কোনো হেলদোল নেই।অর্থাৎ সাব্রুম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে বিষিয়ে উঠছে মৈত্রী সেতু’র আশপাশ অঞ্চল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *