ডেস্ক রিপোর্টার,১১ডিসেম্বর।।
ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় নারী পাচার চক্র। এটা কোনো নতুন বিষয় নয়।গত কয়েক দশক ধরেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে চলছে নারী পাচারকারীদের দৌড়ে ঝাঁপ। বর্তমানে নারী পাচার চক্রের আস্ফালন অনেক বেশি। পুলিশ-গোয়েন্দার চোখে ধুলো দিয়ে চক্রের চাইরা নিয়মিত নারীদের নানান ভাবে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
রাজ্য পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত রাজ্যে নারী পাচারের মামলা লিপিবদ্ধ হয়েছে ৬৪টি।তারমধ্যে ২২টি মামলায় পুলিশ সাফল্য পেয়েছে।অর্থাৎ নারীদের ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। বাদবাকি মামলার ক্ষেত্রে পুলিশের তেমন কোনো সাফল্য নেই।অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে নারী পাচার সন্দেহে থানায় মামলা হলেও বাস্তবে তদন্ত করে তার কোনো সারবর্তা পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট মামলাগুলিতে মেয়েরা ইচ্ছা করেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে প্রণয়ের সম্পর্কের জেরে।
বেশ কিছু মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের হারহিম হয়ে যায়।কারণ দেখা যায় প্রতারক চক্রের চাইরা মোবাইল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়ে বা অল্প বয়সী গৃহবধূদের প্রেমের ফাঁদ পাতে।প্রেমের জালে ফেলিয়ে নারীদের বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়।এবং শেষ পর্যন্ত তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায় “রেডলাইট” এরিয়াতে।
সম্প্রতি রাজ্যের দুই মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো বেঙ্গালুরুতে।সেখানে নিয়ে একটি হোটেলে বন্দি করে রাখা হয়েছিলো।উদ্দেশ্য ছিলো তাদেরকে ব্যাঙ্গালুরুর রেড লাইট এরিয়াতে নিয়ে যাওয়া।মূলত বহিরাজ্যে চাকরি দেওয়ার নাম করেই তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ব্যাঙ্গালুরুতে।
এর আগে কমলপুর থেকে ১০/১২জন মেয়েকে চাকরি দেওয়ার নাম করে চক্রের চাইরা নিয়ে গিয়েছিলো দিল্লিতে।সেখানেও একই অবস্থা ।মেয়েদের হোটেলে যাওয়া পর আর বের হতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু বিষয়টি টের পেয়ে হোটেল থেকে একটি মেয়ে কোনো ক্রমে বেরিয়ে যায়। এবং পার্শ্ববর্তী পুলিশ থানায় ছুটে যায়।এই মেয়ের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ এসে হোটেল থেকে রাজ্যের বাদবাকি মেয়েদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলো।একই ভাবে দালাল চক্রের চাইরা রাজ্যের কয়েকজন মেয়েকে চাকরি দেওয়ার নাম করে নিয়ে গিয়েছিলো তামিলনাড়ুতে।কিন্তু রেল স্টেশনে দালালদের কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়াতে তারা গোপনে বিষয়টি জানিয়েছিল রেল পুলিশ।পুলিশ গোটা চক্রের চাইদের আটক করেছিলো।তারা পুলিশের জিজ্ঞাসা বাদে স্বীকার করেছে,পাচারের জন্যই মেয়েদের আনা হয়েছিলো।শেষ পর্যন্ত তামিলনাড়ুর পুলিশের হস্তক্ষেপে মেয়েরা রাজ্যে ফিরে এসেছিলো।এই সমস্ত তথ্য থেকে পরিষ্কার রাজ্যে নারী পাচার চক্রের চাইরা কাজ করছে নিজস্ব ছন্দেই।
