ডেস্ক রিপোর্টার, ১০সেপ্টেম্বর।।
              রাজ্য পুলিশের ডিরেক্ট ডিএসপি প্রমোশনপ্রাপ্ত ডিএসপিদের মধ্যে শুরু হয়েছে ঠান্ডা লড়াই। তার পেছনে মূল দায়ী খোদ রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তর। অভিযোগ, ডিরেক্ট টিপিএস অফিসাদের (ডিএসপি) অনেকটাই কোণঠাসা করে, প্রমোশনপ্রাপ্ত ডিএসপিদের প্রাধান্য দিচ্ছে  দপ্তর। পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এই বিমতৃ সুলভ আচরণে ক্ষুব্ধ ডিরেক্ট ডিএসপি হিসেবে রাজ্য পুলিশে যোগ দেওয়া টিপিএস অফিসারা।


গত কয়েক বছরে ইন্সপেক্টর থেকে ডিএসপি স্তরে বেশ কিছু পুলিশ অফিসারকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে টিএসআরেও সুবেদার থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ডিএসপি এবং এসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট পদমর্যাদার মানদন্ড একেই। রাজ্য পুলিশে সরাসরি ডিএসপি হিসেবে চাকরিতে যোগ দেওয়া অফিসারদের বক্তব্য, বর্তমানে আরক্ষা দপ্তর ডিরেক্ট ডিএসপিদের হাত বেধে রেখেছে।


তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে পোস্টিং দিচ্ছে না। বরং তুলনামূলক ভাবে অনেক গুরুত্বহীন জায়গাতে তাদেরকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছেন এই সমস্ত অফিসাররা। অনেকেই টিএসআরের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রাজ্য পুলিশের এমন কিছু শাখা রয়েছে, যেখানে মাছি মারা ছাড়া আর কোন কাজ নেই। অথচ এই জায়গা গুলিতে সংশ্লিষ্ট টিপিএস অফিসারদের পুনর্বাসন দিয়েছে আরক্ষা দপ্তর।
             


ইন্সপেক্টর থেকে ডিএসপি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া অফিসাররাই এখন অধিকাংশ পুলিশ সাব ডিভিশনের প্রধান। অর্থাৎ এসডিপিও। রাজ্যের সবকটি জেলাতেই প্রায় একই চিত্র। তথ্য বলছে, ডিরেক্ট টিপিএসদের মধ্যে অনেক তুখুর অফিসার আছেন। কিন্তু তাদেরকে কোন এক রহস্য জনক কারণে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে।


পুলিশ মহলে গুঞ্জন,  তার পেছনে কাজ করছে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি। জানা যায়, সাব ইন্সপেক্টর থেকে ইন্সপেক্টর, পরে পদোন্নতি পেয়ে ডিএসপি হওয়া অফিসারদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের দন্ডমুন্ডের কর্তাদের সম্পর্ক বরাবরই মধুর। কারণ তাদের অধিকাংশ অফিসার কোন না কোন সময় রাজ্যের থানা গুলিতে ছিলেন ওসির দায়িত্বে। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য পুলিশের ডিজিপি, এডিজি, আইজি, এসপিদের সঙ্গে তাদের পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। থানায় থাকার সুবাদে পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে তাদের আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপঢৌকন দেওয়ার বিষয়গুলিও রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।


এখন এই সমস্ত অফিসাররা প্রমোশন পেয়ে ডিএসপি হয়েছেন। নানান কারণে তাদের প্রতি পদস্থ আধিকারিকদের একটা সফট কর্নারও রয়েছে। এই সমস্ত প্রমোশনপ্রাপ্ত ডিএসপিদের সাব ডিভিশন পুলিশের মুখিয়া করতে পারলে হেডকোয়ার্টারে থাকা পদস্থ আধিকারিকদের কামাই বাণিজ্য অনেকটাই ভালো হবে এবং হচ্ছেও। তাই নাকি খাট, পালং দামি সোফা, বিদেশ ভ্রমণের অর্থ সহ নানান ভাবে প্রমোশনপ্রাপ্ত ডিএসপিদের কাছ থেকে পেয়ে থাকছেন পুলিশ সদর দপ্তরের শীত তাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে থাকা পুলিশ আধিকারিকরা।

।।এডিজি সৌরভ ত্রিপাঠী।।

ডিরেক্ট ডিএসপিদের কাছ থেকে পদস্থ আধিকারিকরা যে কিছু পাচ্ছেন না তাও নয়, কিন্তু সংখ্যাটা কম তাদের সঙ্গে বন্ডিংয়ের একটা অভাব রয়েছে ডিজি, আইজি স্তরের অফিসারদের। স্বাভাবিকভাবেই কামাই বাণিজ্যকে সরলীকরন করতে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ঠান্ডা করে বসে থাকা পদস্থ আধিকারিকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশ্বাস ও ভরসা করেন  পদোন্নতিপ্রাপ্ত ডিএসপিদের। এই কারণেই পুলিশ সাব ডিভিশনের মুখিয়া সহ পুলিশের বিভিন্ন শাখা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলিতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে প্রমোশনপ্রাপ্ত ডিএসপিদের।


স্বরাষ্ট্র দপ্তরের খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যে কয়েকজন ডিএসপিকে এডিশনাল এসপি পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তার জন্য নাকি মুখ্য ভূমিকা নিচ্ছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি সৌরভ ত্রিপাঠী। অভিযোগ, এই খেলার পেছনেও নাকি হাত রয়েছে রাজ্যের এক সাংসদের।মূলত তার কাছের এক ডিএসপিকে প্রমোশন পাইয়ে দেওয়ার জন্য সৌরভ ত্রিপাঠীকে সমস্ত ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন সাংসদ বাবু। যদিও পুরো বিষয়টি নিয়ে ঘুমিয়ে আছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা:মানিক সাহাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *