
ডেস্ক রিপোর্টার, ৬নভেম্বর।।
রাজ্যে কমিউনিষ্টদের রাহুর দশা আরো গাঢ় হচ্ছে। আগামী দিন কমিউনিস্টদের আরো ভয়াবহ সময় অপেক্ষা করছে। অন্তত বর্তমান পরিস্থিতি এমনই ইঙ্গিত করছে। দীপাবলি উৎসবের পরেই বড়সড় ধাক্কা লাগতে পারে সিপিআইএমে। সমতলের অনেক ভোটার ও বিভিন্ন স্তরের নেতারা যোগ দিতে পারেন বিজেপি ও কংগ্রেসে। জনজাতি অংশের অবশিষ্ট ভোটারাও ঝুঁকবে তিপ্রামথাতে। কারণ বাম কর্মী সমর্থকরা ভালো করেই বুঝে গিয়েছে সিপিআইএমের পক্ষে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব। ক্ষমতা দখল তো দূর অস্ত। বাংলার মতো ত্রিপুরার সিপিআইএমও হারিয়ে যাবে কালের বিবর্তনে। খোদ বামপন্থীরাই এই মন্তব্য করছেন নিজেদের দল সম্পর্কে।

২৪- র জাতীয় নির্বাচনের লড়াইয়ের ফলাফল কি হবে? তা নিয়ে আপাতত ভবিষ্যত বাণী করা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে বিজেপি ও ইন্ডিয়া জোট উভয় শিবির দাড়িয়ে আছে তুলা যন্ত্রের সমান দূরত্বে। তবে নির্বাচনের আসন বন্টন প্রক্রিয়া শুরু হলে ইন্ডিয়া জোটের চেহারার পরিবর্তন ঘটার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।রাজনীতিকরা বলছেন, ২৪- র লড়াইয়ে কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টি বা ইন্ডিয়া জোট যদি ক্ষমতায় আসুক না কেন,তাতে সিপিআইএমের কোনো লাভ হবে না। কারণ বামেরা একেবারেই নি:স্ব।কেরালা ব্যতীত বামেদের আর কোনো রাজ্য থেকে আসন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ত্রিপুরা ও বাংলায় বামেরা লড়াই করবে নিজেদের সাইনবোর্ড ধরে রাখার জন্য। কেরেলার কয়েকটি আসন দিয়ে দিল্লিতে ইণ্ডিয়া জোটের মধ্যে কতটা প্রভাব খাটাতে পারবেন সীতারাম-প্রকাশ করাতরা এটা অবশ্যই সময়েই বলবে।

রাজনীতিকদের যুক্তি, দিল্লীতে ইণ্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে গোটা দেশে কংগ্রেসের ব্যাপক প্রভাব বাড়বে।
কংগ্রেস দিল্লিতে ক্ষমতার ভর কেন্দ্রে থাকলে, ত্রিপুরাও তাদের প্রভাব বাড়বে।তখন মানুষ ঝুঁকবে কংগ্রেসের দিকেই।বিজেপির বহু বিক্ষুদ্ধ নেতাও গা ভাসাবে কংগ্রেসের দিকেই। বামেদের হালের কোনো পরিবর্তন হবে না। বরং তারা আরো তলানিতে ঠেকবে।এই সময় বাম নেতা,কর্মীরাও হাঁটবে একই রাস্তায়।কারণ তখন তারা বাম শিবিরে থেকে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখতে পারবে না। স্বাভাবিক ভাবেই বাম নেতা – কর্মীরা তাদের শিবির পরিবর্তন করতে বাধ্য।

রাজনীতিকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের জল বিজেপির দিকে গড়ালেও ত্রিপুরায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে সিপিআইএমের। তখন বাম কর্মী সমর্থকরা বিজেপির দিকেই গা ভাসিয়ে দেবে।কারণ তাদের কাছে বিকল্প কোনো পথ থাকবে না। বিজেপিই হবে শেষ ভরসা।স্বাভাবিক কারণে বামপন্থীরা সিপিআইএমকে আলবিদা জানতে বাধ্য হবে। এই চিত্র এখনই পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিচু স্তরের নেতা-কর্মীরা পুরোপুরি ভাবে বসে গিয়েছে।
বাম নেতা – কর্মীদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মানিক – জিতেন্দ্রর লড়াই।

বাম কর্মীদের বক্তব্য, জিতেন্দ্রকে দিয়ে বিশেষ কিছু হবে না, তাও তারা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছেন।কারণ জিতেন্দ্র চৌধুরী তিপ্রামথার নেতা প্রদ্যুৎ কিশোরের প্রতি দূর্বল। বাম কর্মী সমর্থকরা বিশ্বাস করে ২৩- র নির্বাচনে প্রদ্যুৎ তাদের বিজয় আটকে দিয়েছে।তারপরও জিতেন্দ্র চৌধুরী সখ্যতা বজায় রাখছেন প্রদ্যুৎ কিশোরের সঙ্গে। এটা বামেদের বাঙালি অংশের ভোটাররা মেনে নিতে পারছে না। তাই তারাও জিতেন্দ্রকেও মেনে নিতে পারছে না। এবং নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তারা গেরুয়া শিবিরে ঝাঁপ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই চিত্র প্রকট হবে দীপাবলি উৎসবের পরেই। ইতিমধ্যে রাজধানীর বাম – নেতা কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। বড়দোয়ালি, প্রতাপগড়, সূর্যমনি নগর রামনগর, আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে বামেদের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বাঁধন ছিঁড়ে মানুষ গেরুয়া পতাকা তলে আসার জন্য অপেক্ষা করছে। স্রোত বইয়ে কালী পূজার পরেই। কিছুটা লাভবান হবে কংগ্রেসও।