
ডেস্ক রিপোর্টার, ১৭এপ্রিল।।
২১- র বঙ্গ নির্বাচনের পর সাড়া জাগিয়ে রাজ্যে রাজনীতির ঝাঁপ খুলে বসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার তৃণমূল কংগ্রেসকে সামনে পেয়ে আস্থা বেড়েছিল রাজ্যের মানুষের।বিজেপি বিরোধী মানুষ এক মঞ্চে চলে আসার একটা পথ উন্মোচন হয়েছিলো।দিনের পর দিন সমর্থন বাড়তে শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। তার মধ্যে তৃণমূলীদের উপর পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের আগ্রাসন নীতি তৃণমূল কংগ্রেসের ভিত শক্ত হয়ে উঠেছিল। তার প্রমাণ পাওয়া যায় ২১- র পুর ও নগর ভোটে। তারা ২৩শতাংশ ভোট পেয়েছিল।

আমবাসা পুর সভায় একটি আসন পেয়েছিল। তারপর থেকেই হঠাৎ ত্রিপুরার রাজনীতির ময়দান থেকে উধাও তৃণমূল। টানা পাঁচ ছয় মাসের জন্য অজ্ঞাত বাসে চলে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি সুবল ভৌমিক। সঙ্গে অবশ্যই বঙ্গ নেতৃত্ব।

পুর ও নগর ভোটের ৫-৬ মাস পর তৃণমূল কংগ্রেস ফের পরিযায়ী পাখির মত উড়ে আসে রাজ্য রাজনীতির ময়দানে। তখন অবশ্যই অনেক কিছু শেষ হয়ে গিয়েছিলো।মানুষ বুঝতে পেরেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের মূল উদ্দেশ্য। ততক্ষনে তৃণমূল নেতৃত্বের ভাওতাবাজি বুঝে মানুষ তাদের সঙ্গ ত্যাগ করতে থাকে।একেবারে হিরো থেকে জিরো হয়ে যায়।২২- র উপ নির্বাচনে রাজপথে ফ্ল্যাগ ফেস্টুন লাগানোর লোক ছিল না তৃণমূল কংগ্রেসে। তারপরও তৎকালীন প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা হালের বিজেপি নেতা সুবল ভৌমিক বেশ হাক ডাক দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের জামানত জব্দ হয়।

উপভোটের পর তৃণমূল সুবল ভৌমিককে সরিয়ে দেয় সভাপতির দায়িত্ব থেকে। তবে রাজনীতির বস্তা পঁচা মুখ সুস্মিতা দেব ও রাজীব ব্যানার্জী ছিলেন। ত্রিপুরায় দলের হাল ফেরাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছুট আরেক বস্তা পচা রাজনীতিবিদ পীযূষ কান্তি বিশ্বাসকে সভাপতির চেয়ারে বসেছিলেন।তার মধ্যেই চলে আসে ২৩র মহাযুদ্ধ। সুপার ফ্লপ করে তৃণমূল।এক শতাংশের চেয়েও কম ভোট পড়ে তৃণমূলের ভোট বাক্সে। মাথা হেড হয়ে যায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বঙ্গ নেতৃত্ব চুলচেরা বিশ্লেষণ করে। তাতে দেখা গিয়েছে দলের সভাপতি পীযূষ বিশ্বাস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোন কাজেই করতে পারেননি।

পরাজয়ের ভয়ে পীযুষ নির্বাচনে নিজে লড়াই করেন নি। বরং পুত্র স্নেহে অন্ধ পীযূষ বিশ্বাস তার ছেলে পূজন বিশ্বাসের রাজনৈতিক কেরিয়ার নিয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলেন। রাজধানীর রামনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পীযূষ বিশ্বাস তার ছেলে পূজন বিশ্বাসকে টিকিট দেন। কিন্তু ভোটের দিন পূজন নেশাগ্রস্থ অবস্থায় জনতার রোষের মুখে পড়েছিলেন।

২৩র নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২৮ টি বিধানসভা কেন্দ্রে তাদের দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল রাজ্য রাজনীতির গ্ৰেড হীন নেতা। অর্থাৎ রাজনীতির কোন লেয়ারের মধ্যেই তাদের স্থান ছিল না। এই কারণেই নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের লজ্জাস্কর পরাজয় হয়েছে। মানুষ তাদের দিয়েছে উচিত শিক্ষা। কারণ প্রার্থীরা ছিল জন বিচ্ছিন্ন ।তবে এই সমস্ত কিছুর পেছনে ছিলেন পীযূষ কান্তি বিশ্বাস, সুস্মিতা দেব ও রাজীব ব্যানার্জির মতো রাজনীতির প্রস্তাব পঁচা নেতারা। বলছেন, খোদ তৃণমূল কর্মীরা। প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের বস্তা পঁচা নেতারা মমতা – অভিষেকের ত্রিপুরা জয়ের অলীক স্বপ্নকেও একে বারেই নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন।

বাংলার খবর অনুযায়ী, ত্রিপুরার ভোটে এই ভরাডুবির জন্য পীযূষ – সুস্মিতা ও রাজীবকে সমানভাবে দায়ী করেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় দলের তকমাও এখন পৌঁছেছে কবরে। সব মিলিয়ে দল নিয়ে ব্যতিব্যস্ত মমতা- অভিষেক।ত্রিপুরায় দলের এই ভরাডুবির জন্য কড়া শাস্তির মুখে পড়বেন রাজ্য দলের সভাপতি পীযূষ কান্তি বিশ্বাস, অসম থেকে আসা “মহানেত্রী” সুস্মিতা দেব এবং বাংলার “মহান নেতা” রাজীব ব্যানার্জি।

তাদের প্রত্যেককেই মমতা দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেবেন গলা ধাক্কা দিয়ে। খবর তৃণমূল সূত্রের। তবে মমতা – অভিষেক নাকি ছাড়বেন না ত্রিপুরার মাটি। তারা এই মাটিতে সমান্তরাল ভাবে লড়াই চালিয়ে যাবেন বিজেপি – কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসের সঙ্গে।

ডাল – তরোয়াল হীন অবস্থায় কত দিন লড়াই চালাবেন মমতা- অভিষেক।প্রশ্ন গুটি কয়েক তৃণমূল কর্মীদের।