ডেস্ক রিপোর্টার,১২মার্চ।।
” হিন্দুস্তানের ছাপানো টাকা দিয়ে বুবাগ্রাকে ক্রয় করা যাবে না”।—-বক্তা তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মন। শনিবার রাজধানীর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় একথা বলেন তিনি। জনসভা থেকে প্রদ্যুত বার্তা দিয়েছেন কোনো অবস্থাতেই তিনি তিপ্রাসাদের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করবেন না।
২০২৩-র লক্ষ্যে প্রদ্যুত কিশোরের তিপ্রামথা তাদের যাত্রা শুরু করেছে।এতদিন রাজ্যের জেলাগুলোতে তিপ্রামথা নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছিলো।এবার সরাসরি রাজধানীতে।এদিন শহরের স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে তিপ্রামথা ঐতিহাসিক জনসভা করে। জনসভায় ছিলো রেকর্ড সংখ্যক মানুষ।এই ঐতিহাসিক জনসভা থেকে তিপ্রামথা গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবিকে আরো জোরালো করে।
প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মন বলেন, তাকে ললিপপ দিয়ে কোনো কাজ হবে না।তিনি লড়াই করছেন তিপ্রাসাদের স্বার্থে। প্রদ্যুত আক্ষেপ করে বলেন, ” তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নানান ভাবে অপমানিত করেছে।শিলংয়ের আনারস বলেও তাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। এখন জবাব দেওয়ার সময় এসেছে।তিপ্রাসারা তাঁর অপমানের জবাব দেবে।
তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোরের বক্তব্য, স্বাধীনতার ৭০ বছরের অধিক সময় ধরে তিপ্রাসারা বঞ্চিত।সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকার দেওয়া হয়নি। আইপিএফটি’র নাম না করে প্রদ্যুত বলেন,টানা ১৪দিন জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। হয়েছিলো এগ্রিমেন্ট।কিন্তু চার বছর চলে গেছে।কি ছিলো সেই এগ্রিমেন্টের?
প্রদ্যুত কিশোর দাবি করেছেন, তিপ্রামথার সঙ্গে কোনো এগ্রিমেন্ট হলে তা হবে প্রকাশ্যে মানুষের সামনে। প্রদ্যুত বলেন, আজকে যারা মন্ত্রী হয়ে লালবাতির গাড়ি নিয়ে ঘুরছেন, বাংলোতে বাস করছেন তারা তিপ্রাসার ভোটে পাশ করে এসব ভোগ করছেন।কিন্তু তিপ্রাসার কিছু পায়নি।
প্রদ্যুত কিশোর নাম না করে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীকেও আক্রমণ করেন।তিনি বলেন, কিছু বাম তিপ্রাসা নেতা বলে থাকেন কোনোদিন গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড হবে না।আসলে এটা তাদের লজ্জা। কিন্তু তারাই আবার তিপ্রার ভোটে জয়ী হয়েছেন।
তিপ্রার সুপ্রিমো যোগ করেন, যখন কাঞ্চনপুরে রিয়াংরা সমস্যায় ছিলো এবং যখন ডম্বুর থেকে তিপ্রাসাদের তুলে হয়েছিলো তখন নেতারা মুখ খুলেননি।লালবাতির গাড়ি ও বাংলোর লোভে। “এই লড়াই তিপ্রাসাদের,বাঙালির বিরুদ্ধে নয়,”—জনসভা থেকে স্পস্ট ভাবে এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রদ্যুত।
প্রদ্যুত কিশোরের অভিযোগ, মথার জনসভায় যেনো না আসতে পারে মানুষ তার জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে।মানুষকে ভয় দেখিয়ে বলছে, মথার সভায় আসলে চাকরি চলে যাবে, পাবে না রেগার কাজ।তা সত্ত্বেও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তিপ্রাসারা সামিল হয়েছে জনসভায়।
প্রদ্যুত কিশোর কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ” মোদী সরকারের উচিত গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা।এখন তারা দিতে পারে।”
প্রদ্যুত কিশোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, ” লিখিত ভাবে মথার সঙ্গে চুক্তি না হলে ২৩-র ভোটে ৩৬টি আসনে প্রার্থী দেবে তাঁর দল। যদি লিখিত ভাবে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের চুক্তি করা হয় তাহলে তারা ২০টি আসনে প্রার্থী দেবে। অন্যথায় সমতলে এসেও হারিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রদ্যুত কিশোর।এক্ষেত্রে তিনি মূলত টার্গেট করেছেন বিজেপিকেই।”
সর্বোপরি তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোর স্পস্ট করে দিয়েছেন, গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড’র দাবি থেকে তারা পিছু হটবেনা।যেকোনো মূল্যে তারা দাবি আদায় করবে। তবে বলেছেন, তাদের দাবি আদায়ে বাঙালিরা সমস্যা নয়, সমস্যা হলো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তিপ্রাসা নেতারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, প্রকারন্তে প্রদ্যুত কিশোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে।
প্রদ্যুত কিশোর সরব হয়েছেন রাজনৈতিক সন্ত্রাস নিয়ে।তিনি বলেন, পাহাড়ে কোনো রাজনৈতিক সন্ত্রাস নেই। এডিসিতে মথা ক্ষমতায় আসার বাঙালি,মনিপুরী বা অন্যান্য সম্প্রদায়ের উপর কোনো হামলার ঘটনা নেই।
তিপ্রামথার এদিনের জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মথার সভাপতি বিজয় রাংখল, এডিসির চেয়ারম্যান জগদীশ দেববর্মা, এডিসির সিইএম পূর্ন চন্দ্র জমতিয়া, এডিসির কার্য নির্বাহী সদস্য অনিমেষ দেববর্মা সহ অন্যান্যরা।
