।।সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা।।

আগরতলা,৭ জুলাই।।
     বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ সবকা বিকাশের মন্ত্র প্রকাশ পেয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায় শুক্রবার বিধানসভায় ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য যে বাজেট পেশ করেছেন তা একাধারে অন্তর্ভুক্তিমূলক, ভবিষ্যতমুখী ও প্রবৃদ্ধিমুখী। এই বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ সবকা বিকাশের মন্ত্র প্রকাশ পেয়েছে। ফলে রাজ্যের সমাজের সমস্ত অংশের জনগণ এই বাজেটের মাধ্যমে লাভবান হবেন।শুক্রবার বিধানসভায় নিজ অফিস কক্ষে বাজেটের উপর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য মোট ২,৭৬৫৪.৪০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। বাজেটে মূলধনী ব্যয় রাখা হয়েছে ৫৩৫৮.৭০ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বাজেটে সমাজের সকল অংশের জনগণ যেমন, মহিলা, ছাত্রছাত্রী, যুবসমাজ, তৃতীয় লিঙ্গের জনগণ সহ তপশিলি জাতি, তপশিলি জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর জাতি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, কর্মচারি, পেনশনার সহ সকল অংশের জনগণ লাভবান হবেন। বাজেটে উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রগুলির মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৯৩৯ কোটি টাকা, সড়ক উন্নয়ন ক্ষেত্রে ১৩৬০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ১৭৫৬ কোটি টাকা এবং কৃষি ও কৃষি সম্বন্ধীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৪৩৬ কোটি টাকা।


মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে ১৩টি নতুন প্রকল্পের ঘোষণা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে ‘মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার’ জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৯ কোটি টাকা, ‘মুখ্যমন্ত্রী ইন্টিগ্রেটেড গ্রুপ ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে’ রাখা হয়েছে ১০ কোটি টাকা, ‘মুখ্যমন্ত্রী ক্রীড়া উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ কোটি টাকা, ‘মুখ্যমন্ত্রী জনজাতি কল্যাণ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা, রাজ্যের যুব সমাজকে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষ করে তুলতে “মুখ্যমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ণ প্রকল্পের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা, “মুখ্যমন্ত্রী নার উন্নয়ণ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সি এম-সাথ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ কোটি টাকা।


মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবারের বাজেটে রাজ্যে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেন্দ্র স্থাপনের সংস্থান রাখা হয়েছে। যা রাজ্য সরকারকে জন পরিষেবা ও সুশাসন প্রদানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে সহায়তা করবে। পাশাপাশি সরকারের কার্যকারিতা বৃদ্ধির স্বার্থে ও জনগণের জীবনযাত্রাকে সহজ ও সুগম করার লক্ষ্যে বাজেটে নতুন একটি গুড গর্ভনেন্স ডিরেক্টোরেট তৈরী করার সংস্থান রাখা হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবারের বাজেট তৈরী করা হয়েছে বিগত ৫ বছরে রাজ্য সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ড ও পরিকল্পনার উপর। বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিকাঠামোতে বিনিয়োগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবারের বাজেটে মূলধনী ব্যয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার খুবই ভালো। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রাজ্যের গড় উৎপাদন প্রবৃদ্ধির হার (জিএসডিপি) ছিল ৮.৮ শতাংশ। যা জাতীয়স্তরের হার থেকেও বেশী ছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে আশা করা যাচ্ছে। সর্বোপরি ‘এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা’ গঠনে রাজ্য সরকারের যে অঙ্গীকার রয়েছে তা এবারের বাজেটে পরিলক্ষিত হয়েছে।


সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এদিন বিধানসভায় বিরোধী দলের সদস্যগণ যে অশোভন আচরণ করেছেন তা অত্যন্ত দুঃখের ও পরিতাপের বিষয়। পবিত্র বিধানসভায় এধরণের আচরনকে রাজ্যের জনগণ ভালোভাবে মেনে নেবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *