ডেস্ক রিপোর্টার,৩১ডিসেম্বর।।
” বিজেপি’র কোনো কৌশলই আর কাজে লাগবে না। ত্রিপুরায় বিজেপির অপশাসনের অবসান সুনিশ্চিত। বিধানসভা নির্বাচনের এক বছর আগে চলে আসবো ত্রিপুরায়”—-বক্তা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।রবিবার আগরতলা রবীন্দ্র ভবন চত্বরে আয়োজিত জনসভায় এই ভাষায় রাজ্যের শাসক দল বিজেপি’র বিরুদ্ধে সুর চড়ান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য বিজেপিকে রীতিমত হুমকি দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভাঙচুর করে,গুন্ডামি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না।মানুষ তার উপযুক্ত জবাব দেবে। এদিন আগরতলায় এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২৩-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিমুক্ত ত্রিপুরা গড়ার ডাক দেন।অভিষেকের ভাষায়, ত্রিপুয়ায় নেই কর্মসংস্থান।শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অবস্থা কাহিল।ভালো নেই বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা।রাস্তার অবস্থা করুন।সব মিলিয়ে অনুন্নয়ন চলছে ত্রিপুরায়।নেই উন্নয়নের নাম-গন্ধ।
অভিষেক শাসক দল বিজেপির উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস মাথা উঁচু করে লড়াই করবে।বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না তৃণমূল। প্রয়োজনে রক্ত ও জীবন দিতে প্রস্তুত।অর্থাৎ কোনো ভাবেই ২৩-র নির্বাচনে বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না। বিজেপি ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সন্ত্রাস করবে,মানুষকে ভয় দেখাবে।তৃণমূল কংগ্রেস এই ভয় পরোয়া করে না।তারা মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে এগিয়ে যাবে।
বিজেপিকে বার্তা দিতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসে রাজ্যে আসবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের ১৪৪ ধারা ইস্যুতে অভিষেকের বক্তব্য, “তৃণমূলকে আটকানোর জন্য ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।তাতে ক্ষতি ত্রিপুরার মানুষের। তাদের নানান সমস্যা পোহাতে হয়েছে।কিন্তু এই ভাবে তৃণমূলকে আটকানো। যাবে না। প্রসঙ্গক্রমে অভিষেক বলেন, “ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব যখন বিজেপির প্রচারের জন্য বাংলায় গিয়েছিলো, তখন কিন্তু তাঁর উপর আক্রমণ হয়নি।” বিজেপিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ভয় তাড়া করছে।এই কারণেই তৃণমূলকে আটকাতে এত কারসাজি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে আগাগোড়ায় আক্রমণ করেন শাসক দল বিজেপিকে।
অভিষেকের এদিনের জনসভায় ত্রিপুরা ও বাংলার বিজেপি’র দুই বিধায়ক আশীষ দাস ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। মঞ্চে তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারা দুই জন অভিষেকের সঙ্গে কলকাতা থেকে আগরতলায় আসেন।রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময় তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলার মন্ত্রী।কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন।এখন তাঁর ভোল বদল হয়েছে। ত্রিপুরার বিজেপি’র বিধায়ক আশীষ দাস গত একমাস ধরেই অবস্থান করছিলেন কলকাতায়।তার সঙ্গে কংগ্রেস নেতা রতন দাস। আশীষ-রতন সহ বাংলার বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন অভিষেকের সঙ্গে চলে আসেন আগরতলায়।এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
বাংলার বিজেপি’র বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ত্রিপুরাতে যোগদান করিয়ে বিজেপি সহ রাজ্যের মানুষকে “বিজেপি” বিরোধী বার্তা দেয় তৃণমূল। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরে ফিরে গিয়ে তাঁর ভাষণে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপিকে। একই মেরুতে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে বিধলেন ত্রিপুরার বিধায়ক আশীষ দাস। এদিনের জনসভায় বক্তব্য রাখেন তৃণমূল নেত্রী সুস্মিতা দেব, কুণাল ঘোষ, স্থানীয় নেতা সুবল ভৌমিক ও আশীষলাল সিংহ প্রমুখরা।
