
ডেস্ক রিপোর্টার, ৪জুন।।
ত্রিপুরায় ৭০ বছর ধরে বঞ্চিত জনজাতিরা।তাদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়ছেন প্রদ্যুৎ।জনজাতিদের তিনি দিতে চান গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড।দিতে চান রোমান স্ক্রিপ্টের সুবিধা।
প্রদ্যুৎ কিশোর দিল্লীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক সেরে রাজ্যে এসে কি বলেছেন? সেই গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড ও রোমান স্ক্রিপ্টের গল্প।
প্রদ্যুৎ কিশোর এখনো তার স্ট্যান্ড পয়েন্টে দাড়িয়ে আছেন।তবে যে কোনো সময় ফস্কেও যেতে পারেন। মনে করছেন রাজনীতিকরা। প্রদ্যুৎ বলছেন, জনজাতিরা ৭০ বছর ধরে বঞ্চিত। কিভাবে?

রাজ্যের ৭০ শতাংশ জমি এডিসির অন্তর্ভুক্ত।এই জমি জনজাতিদের জন্য।এডিসি অঞ্চলে নেই অনুপজাতিদের জমি কেনার অধিকার।
অনুপজাতিদের জন্য মাত্র ৩০শতাংশ জমি।
এই ৩০ শতাংশ জমি কেনার অধিকার আছে জন জাতিদের।জনজাতিরা সংখ্যায় কম হয়েও তাদের বেশি জমি।অনুপজাতিরা সংখ্যায় বেশি
হয়েও তাদের কম জমি। জনজাতিরা করের
আওতারও বাইরে।
চাকরি থেকে শিক্ষা সর্ব ক্ষেত্রে আছে জনজাতিদের জন্য সংরক্ষণ।রাজ্যের সরকারী দপ্তরগুলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পদস্থ আধিকারিকরা জনজাতি সম্প্রদায়ের। তাছাড়া দপ্তরের মেঝ বাবু, সেজো বাবু, ছোট বাবুদের মধ্যে জনজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন বেশি।তাহলে তারা কোথায় পিছিয়ে? যদি পিছিয়ে থাকে তার জন্য দায়ী কে? এই বিষয়টি পরিষ্কার করে কেন খোলসা করছেন না প্রদ্যুৎ?

জনজাতিরা সর্ব ক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছে রাজ্যের জনজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন। প্রদ্যুৎ কিশোরের মা বিভু কুমারী দেবী, বাবা কিরিট বিক্রম সাংসদ ছিলেন। প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে লোকসভায় যাচ্ছেন একজন জনজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। রাজ তন্ত্রে ১৮৩ জন রাজা – মহারাজা বিভিন্ন সময় শাসন করেছিলেন ত্রিপুরা। তারপরও যদি জনজাতিরা পিছিয়ে থাকার পেছনে মূল কুশীলবরা কে?প্রদ্যুৎ কিশোর কি এটাই ময়না তদন্ত করতে পারেন না?
রাজনীতিকরা বলছেন, আক্ষরিক অর্থে রাজ্যের জনযাতিদের এলিট ক্লাসের লোকজন তাদের মধ্যে পিছিয়ে পড়া লোকজনের উন্নয়নের জন্য কোনো চিন্তায় করেন নি। রাজা – মহারাজার ছিলেন তাদের ভোগ – বিলাসে। নেতা – মন্ত্রীরা ছিলেন তাদের আখের গোছাতে।তাহলে সাধারণ জনজাতিদের স্বার্থে চিন্তা করার সময় কোথায় তাদের? দেখুন রাজ্যের রাজা – মহারাজারা কিভাবে ব্যস্ত ছিলেন তাদের ভোগ বিলাসে।

এই ছবিতে রয়েছেন মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য ও প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মনের বাবা। সম্প্রতি এই ছবি পোস্ট করেছিলেন জিষ্ণু দেববর্মন নিজেই। আমাদের আর কিছু বলার নেই। কথা বলছে উপ মুখ্যমন্ত্রীর পোষ্ট করা ছবিই। একই হাল জনজাতি সম্প্রদায়ের নেতা – মন্ত্রীদেরও।

প্রদ্যুৎ কিশোর নিজেই আক্রমণ করছেন সরকারে থাকা জনজাতি ভিত্তিক দল আইপিএফটিকে। তারা সরকারে বসেও তিপ্রাল্যান্ড নিয়ে কোনো কথা বলে নি। এই ভূল করবে না প্রদ্যুতের মথা।বলেছেন তিনি নিজেই।
প্রয়াত এন সি দেববর্মা, মেবার কুমার জমাতিয়া কেন মন্ত্রীসভায় তিপ্রাল্যান্ডের বিষয়টি উত্থাপন করেন নি? তাদেরকেও কেউ নিষেধ করেন নি বিষয়টি সামনে আনতে। তারা আনেন নি নিজেদের স্বার্থে।তারাও টুপি পড়িয়েছিলেন জনজাতিদের।এখন নতুন ভাবে প্রদ্যুৎ টুপি পড়ানোর জন্য পরিশ্রম করছেন প্রদ্যুৎ কিশোর। তার বর্তমান কার্যকলাপ পর্যালোচনা করে একথা বলছেন রাজনীতিকরা।
ঘুরিয়ে এখন প্রদ্যুৎ মন্ত্রীসভাতে যাওয়ার কথাও বলছেন। তবে পূরণ করতে হবে তার শর্ত।এটাও প্রদ্যুৎ কিশোরের নতুন খোলস।

সম্প্রতি প্রদ্যুৎ কিশোর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল।এরপর তিনি গিয়েছিলেন দিল্লীতে। কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে। কে,ই বা জানেন জনজাতিদের ঠকানোর জন্য প্রদ্যুৎ আবার কোন স্ক্রিপ্ট রচনা করছেন।
পরিষ্কার ভাবে বললে, রাজ্যের জনজাতিদের অনুন্নয়নের পেছনে প্রদ্যুৎ দায়ী করেন বাঙালিদের। কিন্তু এখন দরজায় কড়া ২৪- র লোকসভা নির্বাচন। তাই বাঙালিদের বেইজ্জত করা থেকে মুখের কিছুটা লাগাম টেনেছেন প্রদ্যুৎ কিশোর। তার দরকার বাঙালি ভোটও।নির্বাচন শেষ হলেই প্রদ্যুতের গলা থেকে ফের ঝেড়ে পড়বে বাঙালি বিদ্বেষ এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। প্রদ্যুৎ সম্পর্কে এই সার্টিফিকেট দিচ্ছেন তাবড় রাজনীতিকরা।