ডেস্ক রিপোর্টার, ৬জুন।।
মান্দাই থেকে অমরেন্দ্র নগর, কল্যাণপুর থেকে গঙ্গানগর।রাজ্যের বুকে একের পর এক নারকীয় গণহত্যা লীলা সংঘটিত হয়েছে নানান সময়ে।প্রতিটি গণহত্যার পর মাঠে নেমেছিল রাজনীতিকরা। তারা শুনিয়ে ছিলো সম্প্রীতির ক্যাসেট। কিন্তু গণহত্যাকারীদের বিচারের জন্য কেউ সোচ্চার হয় নি। কারণ ভোট ব্যাংক যে বড় বলাই।
কিন্তু যাদেরকে মেরেছে তাদের সম্প্রদায়ও যে মস্ত বড় ভোট ব্যাংক। তাতে কি, এই ভোট ব্যাংক যে,সহজেই ভাঙ্গা যায়! তাই গণহত্যার বলি হওয়া লোকজনের সম্প্রদায়ের সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোট ব্যাংককে তোয়াক্কা না করে, রাজনীতিকরা শূকরের পালের মতো ছুটছে সংখ্যা লগিষ্ঠ ভোট ব্যাংকের দিকেই।এটাই এই রাজ্যের রাজনীতির রেওয়াজ। তাই সত্তরের দশক থেকেই রাজ্যের বুকে একের পর এক হত্যার লীলা সংঘটিত হয়েছিলো। বারবার রক্তস্নাত হয়ে ছিলো রাজ্য। কিন্তু দোষীরা সনাক্তই হয় নি। গ্রেফতার ও তাদের শাস্তি তো দূরের কথা।

রাজ্যে ধারাবাহিক ভাবে বাঙালি কিলিং হলেও কখনো আওয়াজ উঠে নি সেই ভাবে।কখনো, কখনো বাঙালি প্রতিবাদে সরব হয়েছিল।কিন্তু তা ছিলো ক্ষণস্থায়ী। বারংবার বাঙালির টুটি চেপে ধরেছিল রাজ্যের মসনদে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা লাল সরকার। এখন দিনের বদল ঘটেছে, মুষ্ঠি শক্ত করছে বাঙালিও। তাই মান্দাই গণহত্যার ৪৪ বছর পর ২০২৪- র ৬ জুন,বৃহস্পতিবার “মান্দাই দিবস” পালন করলো ধলাই জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পশ্চিম ডলুছড়া। সনাতনী বাঙালি সুরক্ষা মঞ্চের ব্যানারে।নেতৃত্বে অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মানিক দেবনাথ। তিনি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।এর আগে কেউ- ই সাহস করেন নি। কেন? বাঙালির স্বার্থন্বেষী সুশীল সমাজ কি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে? না, কারণ তারা বঙ্কিম চন্দ্রের “বাবু শ্রেণী”র বাঙালি সমাজ।

ধলাই জেলার কমলপুরের সালেমার প্রত্যন্ত গ্রাম ডলুছড়ার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মানিক দেবনাথ আক্ষেপ করে বলেন, ” মান্দাই – র গণহত্যা আর কেউ দেখতে চায় না।কিন্তু প্রতি বছর এমন দিনে ভেসে উঠে দাঙ্গার বিষ বাষ্প। তাই জাতি – জনজাতি উভয় অংশের মানুষের মধ্যে সম্প্রতির বার্তা পৌঁছে দেওয়া জন্য তিনি মান্দাই দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন”।

মানিক দেবনাথের কথায়, তাঁর গ্রাম পশ্চিম ডলুছড়াতেও ধারাবাহিক ভাবে সংঘটিত হয়েছিল হত্যার লীলা। রক্ত পিপাসু ঘাতক বাহিনী একে একে এই গ্রামের ৩৭ জন বাঙালীকে হত্যা করেছিলো। পশ্চিম ডলু ছড়ার পাশের গ্রাম থেকেই অতীতের জঙ্গি সংগঠন টি এন ভি- র নেতা তথা হালের তিপ্রামথার প্রধান বিজয় কুমার রাঙ্খল আদি ভারতীয়দের বিতরণের ডাক দিয়েছিলেন।

শুরু তাই নয়, তিনি বলেছেন, মান্দাই গণহত্যা কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে শনিবার পর্যন্ত সন্ধ্যায় পশ্চিম ডলুছড়া গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে প্রদীপ প্রজ্বলন করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
অভিযোগ, সনাতনী বাঙালি সুরক্ষা মঞ্চের এই মহতী উদ্যোগে বিষ ঢেলে দেন সালেমা থানার ওসি দীপক দাস। তিনি গ্রামবাসীদের প্রদীপ প্রজ্বলন না করার হুলিয়া জারি করেছেন।প্রশ্ন হচ্ছে ওসি দীপক দাসের আতে ঘা লাগছে কেন?

স্বাধীন দেশে বাঙালিরা কি স্বজন হারানোর জন্য শোক জ্ঞাপন করতে পারবেন না? তার জন্য পুলিশের কাছ অনুমতি নিতে হবে। প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ যখন মাধববাড়ি কাণ্ড নিয়ে প্রতি বছর কালো দিবস পালন করেন তখন কোথায় থাকেন বিভীষণ রূপী পুলিশ অফিসার দীপক দাস? তখন কেন প্রদ্যুৎকে বাধা দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখাতে পারেন না ? এই প্রশ্নের উত্তর কি দিতে পারবেন সামেলা থানার ওসি দীপক দাস?