
ডেস্ক রিপোর্টার, ৯সেপ্টেম্বর।।
রাজ্যের জনপ্রিয় নিউজ ওয়েব পোর্টাল “জনতার মশাল” র খবরের প্রভাবে অবশেষে টনক নড়লো রাজ্য পুলিশের। জনতার মশাল- র খবরের প্রভাবে খোয়াই জেলা পুলিশ মহিলা কনস্টেবল সুমিতা কৈরীকে তেলিয়ামুড়া থানা থেকে ক্লোজ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে খোয়াই জেলার এস পি অফিসে। ইতিমধ্যেই সুমিতা কৈরীর বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্টাল প্রসিডিং (ডিপি) করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে জেলা পুলিশ।

সুমিতা কৈরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি তেলিয়ামুড়া থানাতে বসেই তীর জুয়ার নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন। তেলিয়ামুড়া, খোয়াই সহ আশপাশ অঞ্চলে সুমিতার নেটওয়ার্কয়ে থাকা লোকজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তারাই মূলত পরিচালনা করে তীর খেলা। তবে সুমিতার তীর ব্যবসার মূল সার্ভার মেঘালয়ের শিলংয়ে। পুলিশ কনস্টেবল সুমিতা নিজেই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তীর খেলার প্রচার করতো। “তীর গুরু” নামে একটি পেজ রয়েছে। মূলত এই ফেসবুক পেজের মালিক সুমিতা। “তীর গুরু” নামে সুমিতার একটি ইউ-টিউব চ্যানেলও রয়েছে। কিভাবে তীর খেলতে হয়? কোন কোন নম্বরে বেশি টাকা লগ্নি করতে হয়? দিনের জুয়ার বাজারে কোন কোন নম্বর লাকি হবে, এই সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হয় ইউ টিউব চ্যানেলে। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে হাতিয়ার করে মহিলা পুলিশ কনস্টেবল থানাতে বসেই তীর জুয়ার ব্যবসা পরিচালনা করছেন নিয়মিত। ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেন নি তেলিয়মুড়া থানার ওসি এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিক প্রসূন কুমার ত্রিপুরা।

গত ২৫ আগস্ট রাজ্যের এক মাত্র সংবাদ মাধ্যম জনতার মশাল – র নিউজে সুমিতা রানী তীর ব্যবসার সমস্ত রহস্য ফাঁস করা হয়েছিল। খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে ছিল রাজ্য পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল খোয়াই জেলা পুলিশকে। জেলা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছিল তেলিয়ামুড়া মহকুমার এসডিপিও প্রসুন ত্রিপুরাকে। প্রসূন ত্রিপুরা প্রাথমিক তদন্ত করে সুমিতার তীর সাম্রাজ্য সংক্রান্ত প্রকাশিত খবরের সত্যতা খুঁজে পান। এরপর তিনি খোয়াই জেলা পুলিশকে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা করেন। এরপরেই খোয়াই জেলা পুলিশ নিজেদের মান-সম্মান বাঁচাতে কনস্টেবল সুমিতাকে ক্লোজ করে নিয়ে যায়। খবর, ইতিমধ্যে সুমিতা কৈরীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করার জন্য প্রস্তুতিও নাকি শুরু করেছে জেলা পুলিশ।

দেশের আইন ব্যবস্থা সবার জন্যই সমান।সাধারণ অপরাধী হোক, আর একজন পুলিশ কর্মী বা পুলিশ আধিকারিক হোক। অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী তার সাজা প্রাপ্য। কিন্তু তীর জুয়ায় জড়িত লেডি মাফিয়া তথা পুলিশ কনস্টেবল সুমিতা কৈরীর ক্ষেত্রে পুলিশের মনোভাব যথেষ্ট সন্দেহজনক। কেননা, পুলিশ তীর জুয়া সঙ্গে জড়িত লোকজনদের দেখতে পেলেই তাদের গ্রেফতার করে। এবং বাজেয়াপ্ত করে জুয়া খেলা সংক্রান্ত সরঞ্জাম।

কিন্তু সুমিতা কৈরীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো মামলা নেয় নি কেন? তাকে গ্রেফতার তো দূরস্ত। বরং সুমিতাকে সসম্মানে পেছনের দরজা দিয়ে বাঁচানোর রাস্তা দেখিয়ে দেন তেলিয়ামুড়ার এসডিপিও প্রসূন ত্রিপুরা সহ খোয়াই জেলা পুলিশ।

এই কারণেই অপরাধ করা সত্ত্বেও পুলিশ কর্মী সুমিতা কৈরীকে গোপনে ক্লোজ করে নিয়ে যায় জেলার এসপি অফিসে।

প্রশ্ন হচ্ছে, একই অপরাধ যদি কোন সাধারন জুয়াড়ি করে থাকতো, তাহলে নিশ্চিতভাবে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে পাঠিয়ে দিতো জেলে। কিন্তু এমনটা হয়নি লাস্যময়ী পুলিশ কনস্টেবল সুমিতা কৈরীর ক্ষেত্রে। ছি:ছি:।

খোয়াই জেলা পুলিশের এই কার্যকলাপে লজ্জায় মুখ ঢাকার জায়গাও পাচ্ছেন না রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন ও জেলার পুলিশ সুপার।

অর্থাৎ পরিষ্কার সাধারণ মানুষ সামান্য অপরাধ করলেই পুলিশ আইনের জুজু দেখিয়ে গ্রেফতার করে নেয়।আর পুলিশ কর্মীরা সাত খুন করলেও মাপ।কারণ তারা যে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের আলালের ঘরের দুলাল বা দুলালী।