#সমীরণ রায়#
_____________
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে ভারত ফিরিয়ে দেবে বলে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ এমনটাই জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, ভারত বলেছে, তারা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। তারা দেখুক, আমরাও অপেক্ষা করছি। তবে সর্বোচ্চ বিচারিক সাজা আদালত তাকে দিয়েছে। আমরা এর আগেও তার প্রত্যাবর্তন চেয়েছি কিন্তু ইতিবাচক সাড়া পাইনি। আমরা অপেক্ষা করছি ভারত কী করে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাকে দেশে ফেরানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো ভারতের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। যদিও এ ধরনের বিষয় দ্রুত সমাধান হয় না। ভারতের পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া আসে, তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত শুধু জানা গেছে, ভারত বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।
শুক্রবার বাংলাদেশের রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শুক্রবার খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না টেকনিক্যাল প্রবলেমের কারণে। তাকে নিয়ে যাওয়া বিমানটির ত্রুটির কারণে লন্ডন যেতে এক-আধদিন দেরি হতে পারে। তবে তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন বলে আমি জানতে পেরেছি।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারেক রহমান সাহেব কবে দেশে ফিরবেন- এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তার স্ত্রী (ডা. জুবাইদা রহমান) সম্ভবত ঢাকায় পৌঁছেছেন।
আরাকান আর্মির হাতে জেলেদের আটকের বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, আরাকান আর্মিরা কোনো রাষ্ট্রীয় পক্ষ নয়। তাই চাইলে তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব হয় না। তবে আমাদের স্বার্থ জড়িত থাকায় বিষয়টি দেখা হচ্ছে। সবকিছু প্রকাশ করা যায় না, তবে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে বা কম ঘটে- সেজন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, চীনের অর্থায়নে ঢাকায় এক হাজার শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণের কথা ছিল। সরকার সেটি নীলফামারীতে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিকল্পনা করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে রংপুর অঞ্চলের পাশাপাশি ভারত, ভুটানসহ অন্যান্য দেশের মানুষও এখান থেকে চিকিৎসা নিতে পারে। রংপুর অঞ্চলে কলকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য কম, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান। তাই কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ চলছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাই দেশের দায়িত্ব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে এমনভাবে দিয়ে যেতে, যাতে তারা এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই দেশকে কাঙ্ক্ষিত পথে এগিয়ে নিতে পারে। মানুষের অনেক প্রত্যাশা- আমরা যেন সব রিফর্ম শেষ করে যাই। কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসবেন, তারা যেন জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারেন। আমরা আশা করি তারা দেশে সর্বত্র সমতা ও সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করবেন।
সংস্কার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা সব ধরনের সংস্কার কার্যক্রম শেষ করতে পারবো না। তবে আমরা শুরু করে গেলাম, আশা করি, পরবর্তী সময়ে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

